কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য ভারতকে জবাবদিহির জন্য ইউরোপীয় এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ১৫ জুলাই বার্ষিক ভারত-ইইউ মানবাধিকার সংলাপের সময় ব্যাপক এবং গুরুতর প্রেস স্বাধীনতা লঙ্ঘনের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করার দাবি তুলেন তারা।–টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য ওয়ার

সিপিজে-এর ইইউ প্রতিনিধি টম গিবসন বলেছেন, সংলাপটি হিন্দু দক্ষিণপন্থী বিজেপির নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারের সাথে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সুযোগ হওয়া উচিত। তিনি যোগ করেছেন, যেহেতু ভারত তার সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অস্বাভাবিক রেকর্ডের উপর আলোকপাত করতে চায়, ইইউকে অবশ্যই সাংবাদিক এবং মিডিয়া সংস্থাগুলির উপর কঠোর দমন-পীড়নের নিন্দা করতে হবে এবং নির্বিচারে আটক সাংবাদিকদের মুক্তিসহ স্পষ্ট, যাচাইযোগ্য দাবি করতে হবে।

ইইউকে প্রশ্ন করা উচিত, ভারত এবং ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের সমালোচনাকারী সাংবাদিকরা হয়রানি, আটক, অপহরণ বা এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি ছাড়া রিপোর্ট করতে না পারলে এটি কী ধরনের সম্পর্ক তৈরি করছে? গিবসন ভারত কতৃক নিম্নলিখিত প্রেস স্বাধীনতা লঙ্ঘন এবং সিপিজে দ্বারা নথিভুক্ত সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইইউকে আহ্বান জানিয়েছেন। জানান, কাশ্মীরি সাংবাদিক আসিফ সুলতান, ফাহাদ শাহকে আটক রাখার জন্য জম্মু ও কাশ্মীর জননিরাপত্তা আইন, একটি প্রতিরোধমূলক আটক আইনের অপব্যবহার করছে কতৃপক্ষ। এবং সাংবাদিক সাজাদগুল পৃথক মামলায় আদালত থেকে জামিন মঞ্জুর করার পরও কারাগারে রয়েছেন।

সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে গৌতম নাভলাখা, আনন্দ তেলতুম্বদে, সিদ্দিক কাপ্পান এবং মনন দারকে আটকে রাখা হয়েছে। নভলাখা এবং তেলতুম্বেকে ‘অন্ডা’ (‘ডিম’) কোষে আটক করা হয়েছে, নির্জন কারাবাসের মতো। ২০২২ সালের জুনে, দিল্লি পুলিশ স্পষ্টভাষী মুসলিম সাংবাদিক মুহম্মদ জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করে, যিনি নিজে একজন বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে একজন উকিল।

১২ জুলাই, ২০২২-এ, উত্তর প্রদেশ পুলিশ রাজ্যে জুবায়েরের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত ছয়টি মামলা তদন্ত করার জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করে। সাম্প্রদায়িক বৈষম্য এবং সহিংসতার বিষয়ে রিপোর্ট করার সময় মুসলিম সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাংবাদিকদের বিশেষ ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। সিপিজে গবেষণা অনুসারে, কুখ্যাত বুল্লি বাই অ্যাপে কমপক্ষে ২০ জন মহিলা মুসলিম সাংবাদিককে "বিক্রয়ের জন্য" তালিকাভুক্ত করা হয়।

সিপিজে-এর ২০২১ সালের বার্ষিক কারাগার আদমশুমারিতে দেখা গেছে যে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারত এবং ভারত কতৃক অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে সাত সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে, যা ১৯৯২ সাল থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক সাংবাদিক আটকের জন্য দেশটি রেকর্ড করেছে। বলা হয়, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘ ভারতের আসল চেহারা উন্মোচিত করেছে।