বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সম্পূর্ণ অনুমান ও ধারণাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষার জালে লুকোনো ধোঁকাবাজি বললেও ভুল হবে না। আল্লাহর সুবিশাল সৃষ্টিতে তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ ও পরিচয় না খুঁজে মনগড়া নানা বাকচাতুরি চলছে। ওরা একটা বোম বার্স্ট করবে, পারলে ভুল প্রমাণিত করুন। আপনি আমি পারব না, কারণ, আমাদের কাছে এসব মেশিন ও প্রযুক্তি নেই। কিন্তু বলে রাখি, যন্ত্রপাতি নেই ঠিক, কিন্তু কুরআন হাদিস আছে। অতএব, যা ইচ্ছা বলে দেবে তাই মেনে নিতে পারি না।
আল্লহ তাআলা বলেন : বিশাল নক্ষত্রে ভরা আকাশের শপথ। শপথ সেই প্রতিশ্রুতি দেয়া দিনের। শপথ সাক্ষীর এবং যা সাক্ষ্য নেয়া হচ্ছে। (আল বুরুজ : ১-৩)। তিনি আরো বলেন, আমি আকাশে নক্ষত্র বীথি বসিয়েছি, সবার দেখার জন্য আকর্ষণীয় করেছি। (সূরা আল হিজর : ১৬)। পবিত্র কোরআনে আরো বলা হয়েছে, সুউচ্চ মর্যাদাবান তিনি, যিনি আকাশে নক্ষত্রবীথি দিয়েছেন, দিয়েছেন একটি জ্বলন্ত সূর্য এবং উজ্জ্বল চাঁদ। (সূরা ফুরকান : ৬১)।
মহাকাশে বিশাল সব সৃষ্টি তিনি তৈরি করে রেখেছেন, যাদের বিশালত্ব আমাদের কল্পনার সীমার বাইরে। আল্লাহ তাআলা বলেন : যিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আসমান। রহমানের সৃষ্টিতে আপনি কোন খুঁত দেখতে পাবেন না; আপনি আবার তাকিয়ে দেখুন, কোনো ত্রুটি দেখতে পান কি! তারপর আপনি দ্বিতীয়বার (আসমানের) দৃষ্টি ফেরান, সে দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে আপনার দিকে ফিরে আসবে। (সূরা মূলক : ৩-৪)।
পক্ষান্তরে, আসলে ওদের বিভিন্ন তথ্য প্রদান ওই রকম যেমন ধরুন, একজনকে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑ বলুন তো দেখি, ঢাকায় কতটি কাক আছে? তদুত্তরে, সে বললÑ ৭০ হাজার। পাল্টা প্রশ্ন করা হলোÑ যদি কম-বেশি হয়? তদুত্তরে সে বললÑ কম হলে বুঝবেন, কিছু অন্য এলাকায় বেড়াতে গিয়েছে, আর বেশি হলে বুঝবেন, কিছু অন্য এলাকা হতে বেড়াতে এসেছে। তদ্রƒপ, নিচের তথ্যগুলো এমনি!
সম্প্রতি মিডিয়ায় একই এলাকার দু’টি ছবি পাশাপাশি দেয়া হয়েছে। প্রথমটি হাবল টেলিস্কোপ (ভূমি থেকে ৩৪০ মাইল উপরে) এবং পরে সদ্য প্রকাশিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (প্রায় দশ লাখ মাইল উপরে) থেকে তোলা ছবি। অনেক অনেক দূরে গহীন অন্ধকারে স্থাপন করা হয়েছে ওয়েব স্পেস। এটা হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে অনেক শক্তিশালী করে বানানো হয়েছে। দুই ছবির পার্থক্য থেকেই তা স্পষ্ট।
পরে গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তা ৬৪০ কোটি বছর আগের। অর্থাৎ এই এলাকা পৃথিবী থেকে ৬৪০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। প্রতি সেকেন্ডে আলোর গতি মানে ৩ লাখ কিলোমিটার বেগে গেলে মাত্র ৬৪০ কোটি বছর লাগবে। সহজে বলতে গেলে ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে ১২.৫ ঘণ্টা ধরে তোলা যে ছবিটা আমরা পেয়েছি, তা ৬৪০ কোটি বছর আগের বাসি দৃশ্য।
কিন্তু আমরা আজকের টাটকা দৃশ্য চাই। তাহলে আপনাকে মাত্র ৬৪০ কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে। আর এর মধ্যেই যদি ওই এলাকার সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়, তবে ৬৪০ কোটি বছর পর দেখবেন সব অন্ধকার। তদুপরি, এই ৬৪০ কোটি কোনো সুনির্দিষ্ট ও সুনিশ্চিত প্রমাণিত নয়, এটা তারাও বলে।
ওদের এসবের পেছনে মূল কারণ হলো, কুরআন এর তথ্যকে ভুল প্রমাণিত করে দেয়া। মূলত এগুলো হলো বিজ্ঞানে যারা অজ্ঞান, তাদের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বের হওয়া যুক্তি, তর্ক। আবার, বিজ্ঞানী মহলে যারা স্রষ্টা বিদ্বেষী রয়েছেন, তাদের বক্তব্যগুলোও একই রকমের অবাস্তব, বৈজ্ঞানিক পরিভাষার জালে লুকোনো ধোঁকাবাজি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।