Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সৌরজগতের ছবি ও কোরআনের ভাষ্য-১

মুফতী মাসুম বিল্লাহ | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

সম্পূর্ণ অনুমান ও ধারণাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষার জালে লুকোনো ধোঁকাবাজি বললেও ভুল হবে না। আল্লাহর সুবিশাল সৃষ্টিতে তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ ও পরিচয় না খুঁজে মনগড়া নানা বাকচাতুরি চলছে। ওরা একটা বোম বার্স্ট করবে, পারলে ভুল প্রমাণিত করুন। আপনি আমি পারব না, কারণ, আমাদের কাছে এসব মেশিন ও প্রযুক্তি নেই। কিন্তু বলে রাখি, যন্ত্রপাতি নেই ঠিক, কিন্তু কুরআন হাদিস আছে। অতএব, যা ইচ্ছা বলে দেবে তাই মেনে নিতে পারি না।

আল্লহ তাআলা বলেন : বিশাল নক্ষত্রে ভরা আকাশের শপথ। শপথ সেই প্রতিশ্রুতি দেয়া দিনের। শপথ সাক্ষীর এবং যা সাক্ষ্য নেয়া হচ্ছে। (আল বুরুজ : ১-৩)। তিনি আরো বলেন, আমি আকাশে নক্ষত্র বীথি বসিয়েছি, সবার দেখার জন্য আকর্ষণীয় করেছি। (সূরা আল হিজর : ১৬)। পবিত্র কোরআনে আরো বলা হয়েছে, সুউচ্চ মর্যাদাবান তিনি, যিনি আকাশে নক্ষত্রবীথি দিয়েছেন, দিয়েছেন একটি জ্বলন্ত সূর্য এবং উজ্জ্বল চাঁদ। (সূরা ফুরকান : ৬১)।
মহাকাশে বিশাল সব সৃষ্টি তিনি তৈরি করে রেখেছেন, যাদের বিশালত্ব আমাদের কল্পনার সীমার বাইরে। আল্লাহ তাআলা বলেন : যিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আসমান। রহমানের সৃষ্টিতে আপনি কোন খুঁত দেখতে পাবেন না; আপনি আবার তাকিয়ে দেখুন, কোনো ত্রুটি দেখতে পান কি! তারপর আপনি দ্বিতীয়বার (আসমানের) দৃষ্টি ফেরান, সে দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে আপনার দিকে ফিরে আসবে। (সূরা মূলক : ৩-৪)।

পক্ষান্তরে, আসলে ওদের বিভিন্ন তথ্য প্রদান ওই রকম যেমন ধরুন, একজনকে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑ বলুন তো দেখি, ঢাকায় কতটি কাক আছে? তদুত্তরে, সে বললÑ ৭০ হাজার। পাল্টা প্রশ্ন করা হলোÑ যদি কম-বেশি হয়? তদুত্তরে সে বললÑ কম হলে বুঝবেন, কিছু অন্য এলাকায় বেড়াতে গিয়েছে, আর বেশি হলে বুঝবেন, কিছু অন্য এলাকা হতে বেড়াতে এসেছে। তদ্রƒপ, নিচের তথ্যগুলো এমনি!

সম্প্রতি মিডিয়ায় একই এলাকার দু’টি ছবি পাশাপাশি দেয়া হয়েছে। প্রথমটি হাবল টেলিস্কোপ (ভূমি থেকে ৩৪০ মাইল উপরে) এবং পরে সদ্য প্রকাশিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (প্রায় দশ লাখ মাইল উপরে) থেকে তোলা ছবি। অনেক অনেক দূরে গহীন অন্ধকারে স্থাপন করা হয়েছে ওয়েব স্পেস। এটা হাবল টেলিস্কোপের চেয়ে অনেক শক্তিশালী করে বানানো হয়েছে। দুই ছবির পার্থক্য থেকেই তা স্পষ্ট।

পরে গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের যে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তা ৬৪০ কোটি বছর আগের। অর্থাৎ এই এলাকা পৃথিবী থেকে ৬৪০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। প্রতি সেকেন্ডে আলোর গতি মানে ৩ লাখ কিলোমিটার বেগে গেলে মাত্র ৬৪০ কোটি বছর লাগবে। সহজে বলতে গেলে ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে ১২.৫ ঘণ্টা ধরে তোলা যে ছবিটা আমরা পেয়েছি, তা ৬৪০ কোটি বছর আগের বাসি দৃশ্য।

কিন্তু আমরা আজকের টাটকা দৃশ্য চাই। তাহলে আপনাকে মাত্র ৬৪০ কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে। আর এর মধ্যেই যদি ওই এলাকার সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়, তবে ৬৪০ কোটি বছর পর দেখবেন সব অন্ধকার। তদুপরি, এই ৬৪০ কোটি কোনো সুনির্দিষ্ট ও সুনিশ্চিত প্রমাণিত নয়, এটা তারাও বলে।

ওদের এসবের পেছনে মূল কারণ হলো, কুরআন এর তথ্যকে ভুল প্রমাণিত করে দেয়া। মূলত এগুলো হলো বিজ্ঞানে যারা অজ্ঞান, তাদের উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বের হওয়া যুক্তি, তর্ক। আবার, বিজ্ঞানী মহলে যারা স্রষ্টা বিদ্বেষী রয়েছেন, তাদের বক্তব্যগুলোও একই রকমের অবাস্তব, বৈজ্ঞানিক পরিভাষার জালে লুকোনো ধোঁকাবাজি।



 

Show all comments
  • Ariyan Hasib ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪১ এএম says : 0
    সবচেয়ে বড় কথা হলো বিজ্ঞান স্হির নয়, বিজ্ঞান দিন দিন নতুন নতুন তথ্য দিবে, সময়ের সাথে সাথে একেক কথা বলবে। বিজ্ঞানের কথার উপর ১০০% বিশ্বাস ধারণ করার যুক্তি নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Harunur Rashid ১৭ জুলাই, ২০২২, ৯:৪৮ এএম says : 0
    Author believe Scientist trying to discredit the Holy Quran, actually it is reenforcing the Holy Quran truth. Holy Quran was reveal some 1400 years ago when there were no advance telescope and other scientific instrument to know lots of the thing are in the sura Mulk and others suras Allah SWT stated how is lower haven he decorated.
    Total Reply(0) Reply
  • N Islam ১৭ জুলাই, ২০২২, ২:৪৩ পিএম says : 0
    জনাব মুফতি মাসুম বিল্লাহ্, আরবী এমন একটি ভাষা, যাতে একই শব্দের নানা অর্থ হয় । সুতরাং অভিজ্ঞতার সাথে সাথে কুরআনের বিজ্ঞান বিষয়ক তথ্যগুলো নূতনভাবে বিশ্লেষণ করে হালনাগাদ করতে হবে, যেটি এখন পর্যন্ত হয়ে এসেছে এবং এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া । কুরআন কখনোই বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক নয় । এটি এখনও খুবই প্রাথমিক স্তরের একটি গবেষণা । আর বিজ্ঞানের গবেষণাকে সবসময়ই উৎসাহিত করা উচিৎ । বৈজ্ঞানিক গবেষণার দ্বারা মানুষের অভিজ্ঞতা যত বাড়বে, কুরআনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলো বুঝতে আমাদের তত সুবিধা হবে । একটা ঘটনা বলি । আজ থেকে প্রায় ৩৭/৩৮ বছর আগে এক গ্রামের মসজিদে জুম্মার নামাজে খুতবার আগে ইমাম সাহেব বয়ান করছিলেন, যিনি মাদ্রাসা থেকে পাশ করা ইমাম ছিলেন । সেই সময় খুব কম গ্রামের মসজিদেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রাপ্ত ইমাম ছিলেন, হাফিজতো ছিলেননা বললেই চলে । তিনি বলছিলেন, "সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে, কুরআন শরীফে স্পষ্ট বলা আছে ।" অথচ আজকের দিনে এমন একটি তাফসীর/তর্জমা গ্রন্থ পাবেননা, যেটা তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করবে । আমি বিশ্বাস করি, তিনি মিথ্যা কথা বলেননি, মূলতঃ তিনি কুরআনের বক্তব্য সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেননি । সেইজন্যই আলিম সাহেবদের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, না বুঝেই কুরআনকে বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে দাঁড় করাবেননা । অনেক আলিম-উলামা আছেন, যাঁরা বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলো ভালোই বোঝেন, তাঁদের সাহায্য নিন, সমাজে ভুল তথ্য ছড়িয়ে কুরআনকে ছোট করবেননা ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ali Azgor ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৩ এএম says : 0
    আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এই মহা বিশ্বের সৃষ্টির শুরুতে যে তারকা গুলো সৃষ্টি করেছেন তার আলো এখনও পৃথিবীতে পৌঁছানি । আর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সব তারকা গুলো সৃষ্টি করেছেন প্রথম আসমানের নিচে এর উপরে আরও 7 আসমান তার উপরে আরশে আজীম । আল্লাহু আকবার
    Total Reply(0) Reply
  • Md Monir Hosen Polok ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৩ এএম says : 0
    জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ আসলেই আমাদেরকে অনেক নতুন কিছু দেখাতে চলেছে। আশা করি ভবিষ্যতেও আরো নতুন কিছু দেখাতে সক্ষম হবে। যা আমাদের এখনো অজানা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mojahar Hossain ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৪ এএম says : 0
    পবিত্র কুরআন ও হাদিসে যা আছে তাই হবে,মরার পর বাস্তবতা দেখতে পাবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Faruk Mia ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৫ এএম says : 0
    আমি ওদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী বিশ্বজগতে ব্যক্ত করব এবং ওদের নিজেদের মধ্যেও; ফলে ওদের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, এ (কুরআন) সত্য।এ কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার প্রতিপালক সর্ববিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী? সূরা হা-মীম সেজদাহ-৫৩
    Total Reply(0) Reply
  • MD Selim Al-Deen ১৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৬ এএম says : 0
    সমস্ত প্রশংসা তো তার জন্যই যিনি এসব সৃষ্টি করেছেন আর আমরা তার সৃষ্টি দেখে আশ্চর্য হচ্ছি,,,,, আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ,,,,, এত সুন্দর মহাবিশ্বের এত সব সৃষ্টির মধ্যে মানুষ কেই সেরা বানাইছে আল্লাহ,,,, তারপরেও আমরা তার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করছি না,,,, আফসোস,,, সুবহানাল্লি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম
    Total Reply(0) Reply
  • Abdussalam ১৭ জুলাই, ২০২২, ১১:৪৮ এএম says : 0
    মাশাআল্লাহ প্রিয় উস্তাদের লেখা মিডিয়াতে দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ।
    Total Reply(0) Reply
  • MIZAN VLOGGER ১৭ জুলাই, ২০২২, ১২:৪১ পিএম says : 0
    জাযাকাল্লাহু খয়রন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন