Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলেপ্পোয় দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সিরিয়ায় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোয় অবরুদ্ধ বেসামরিকদের কাছে ১০ দিনের কম সময়ের খাবার মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ১০ দিনের কম সময়ের মধ্যে যদি আলেপ্পোতে ত্রাণ সামগ্রী না পৌঁছায় তবে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে অসংখ্য লোক মারা যাবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিরীয় বিদ্রোহীরা অবরুদ্ধ পূর্ব আলেপ্পোয় ত্রাণ ও মেডিকেল সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জাতিসংঘের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। তবে জাতিসংঘ রুশ ও সিরীয় কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে। সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স, যারা হোয়াইট হেলমেটস নামেও পরিচিত, শুধুমাত্র বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলেই সেবা প্রদান করে থাকে। এই মানবাধিকার সংস্থাটি ইতোমধ্যে হাজার হাজার বেসামরিক লোককে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত ভবনগুলো থেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেছে। সংস্থাটির প্রধান রায়েদ আল-সালেহ বলেন, আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না বর্তমান পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ডাক্তার ও উদ্ধারকর্মীরা হাতের কাছে যা পাচ্ছে, তা দিয়েই যেভাবে পারছে হতাহতদের সাহায্য করছে। প্রসঙ্গত, সালেহ এই বছর রাইট লাইভলিহুড পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, যা নোবেল পুরস্কারে বিকল্প হিসেবে পরিচিত। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব আলেপ্পো, যেখানে প্রায় দুই লাখ ৭৫ হাজার বেসামরিক অবরুদ্ধ হয়ে আছে, এখানে সর্বশেষ গত ১৩ নভেম্বর জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এই অঞ্চলে তীব্র শীত বিরাজ করছে। সালেহ জানান, চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের এতই সংকট যে, ডাক্তারদের কাকে রেখে কাকে চিকিৎসা দেয়া হবে সেই সিদ্ধান্তও নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি বলেন, তারা সবাইকে গ্রহণ করতে পারছে না। কারণ, এখানে প্রয়োজনীয় উপকরণের পাশাপাশি যথেষ্ট ডাক্তারও নেই। গত দুই মাসে সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্সের ৫০ শতাংশ উপকরণ নষ্ট হয়েছে জানিয়ে সালেহ বলেন, আমাদের কেন্দ্রগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসার যত যন্ত্রপাতি ছিল, তা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। এমনকি আমাদের সব গ্যাস মাস্কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। আমাদের আশঙ্কা অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য বাহন চালনার জন্য প্রয়োজনীয় ডিজেলের মজুদও আগামী ১০ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, কয়েকদিনের বিরতি শেষে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো দখলে গত ১০ দিন ধরে নতুন করে তীব্র ও ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক হামলা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার শাখার সিরীয়বিষয়ক উপদেষ্টা জান এগেল্যান্ড জানান, আলেপ্পোর বিদ্রোহীরা ইতোমধ্যে অবরুদ্ধ অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার তাদের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, তাদের কাছে জাতিসংঘের ত্রাণ প্রস্তাবের ব্যাপারে বিদ্রোহীদের লিখিত সম্মতি রয়েছে। এমনকি রুশ কর্তৃপক্ষের মৌখিক সম্মতিও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি। এগেল্যান্ড বলেন, আমাদের কাছে পূর্ব সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর লিখিত সম্মতি রয়েছে। এখন রুশ ও সিরীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও সম্পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী আমরা। উল্লেখ্য, নতুন এই প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী দেয়ার পাশাপাশি অন্তত আহত ২০০ বেসামরিককে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। আল-জাজিরা, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ