Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার আর নেই

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

বাংলা সিনেমার জলসাঘরে নিভলো অভিজাত ঝাড়বাতিটি। মেধাদীপ্ত যে-আলোয় কয়েক দশক বাংলাভাষায় নির্মিত সিনেমা খুঁজে পেয়েছে নিজস্ব চলার পথ, প্রয়াত হলেন সেই অগ্রপথিক। চলে গেলেন ভারতের কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার। গতকাল সোমবার সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর, কিডনি এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তরুণ মজুমদার। গত ১৪ জুন ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ১৯৬২ সালে ‘কাচের স্বর্গ’ সিনেমার জন্য প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান তরুণ মজুমদার। ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী পেয়েছেন ১৯৯০ সালে। সিনেমা সম্মেলক শিল্প বা কমপোজিট আর্ট। সহজ নয় সেই শিল্পের অভীষ্ট বিন্দু স্পর্শ করা। এই বাংলা সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটকের মতো বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালককে পেয়েছে, যাঁরা নির্মাণ করেছেন বাংলা সিনেমা তথা বিশ্ব সিনেমার নতুন ভাষ্য। সেই পরিমণ্ডলেই তরুণ মজুমদার তৈরি করেছিলেন আবহমান অথচ বাঙালির একান্ত আপন এক সিনেমা-ভাষা। গল্পের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করেছিলেন নিজের কল্পনায় আর অসামান্য সিনেমা নির্মাণের কৌশলে। অথচ সাহিত্যবোধ থেকে বিচ্য্যুত হননি। তরুণ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘গণদেবতা’, ‘কাচের স্বর্গ’, ‘যদি জানতেম’, ‘পলাতক’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘শহর থেকে দূরে’, ‘মেঘমুক্তি’, ‘খেলার পুতুল’, ‘অমর গীতি’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘পথভোলা’, ‘আগমন’, ‘আলোর পিপাসা’, ‘একটুকু বাসা’, ‘বালিকা বধূ’, ‘নিমন্ত্রণ’, ‘কুহেলি’, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ঠগিনি’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘পরশমণি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘সজনি গো সজনি’, ‘কথাছিল’, ‘আলো’, ‘ভালোবাসার অনেক নাম’, ‘চাঁদের বাড়ি’, ‘ভালোবাসার বাড়ি’ ইত্যাদি। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, মহুয়া রায়চৌধুরী, দেবশ্রী রায়ের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রী বাংলা ছবির জগতে পা রেখেছেন তাঁর হাত ধরেই। প্রচারবিমুখ স্বল্পভাষী মানুষটি তাঁদের সঙ্গে নিয়েই বাঙালির জন্য নির্মাণ করেছেন এক-একটি অভিজ্ঞান অঙ্গুরীয়। আজ এই ঘোরতর প্রযুক্তির যুগে, আজ এই তথ্যের বিস্ফোরণের সময়ে বসে সেই অঙ্গুরীয়র দিকে চোখ পড়লে যেন আমরা উপলব্ধি করতে পারি আমাদের স্মৃতি, সত্তা এবং ভবিষ্যৎকেও। অবিস্মরণীয় কিছু গান-ও তো তিনি উপহার দিয়েছেন তাঁর ছবিতে। বাংলার নিজস্ব সুরের হয়েছে প্রাণপ্রতিষ্ঠা, আধুনিক শিল্পের মধ্যে কীর্তনের আঙ্গিক বা লোকায়ত সুরের চল, যে কী অসামান্য প্রয়োগে ভাস্বর হয়ে উঠতে পারে, তরুণ মজুমদারের সিনেমাগুলো যেন তার-ই বাস্তবিক উদাহরণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার আর নেই
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ