Inqilab Logo

সোমবার, ১০ জুন ২০২৪, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করছে -অ্যামনেস্টি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমষ্টিগতভাবে শাস্তি দিচ্ছে।
এ থেকে বাঁচতে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের পুশব্যাক করছে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ দুই দেশের আচরণকেই ‘নিষ্ঠুর’ আখ্যা দিয়ে অ্যামনেস্টি বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক চম্পা প্যাটেল বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আসা মানুষেরা, যারা নাফ নদীতে বা ভূমিতে আত্মগোপন করে আছে, তারা খাবার, পানি ও জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাথে কথা বলে অ্যামনেস্টি জানতে পেরেছে, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গা পুরুষদের হত্যা করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট চালাচ্ছে।
সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, এরই মধ্যে অন্তত দুই হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে আশপাশের গ্রামে, শরণার্থী শিবির ও বস্তিতে আশ্রয় নিয়েছে। যে কারণে তাদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মিজ প্যাটেল।
এদিকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধণ অভিযান চালাচ্ছে।
গত ৯ই অক্টোবর ৯জন সীমান্তরক্ষীর হত্যার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমান অধ্যুষিত মংডুতে অভিযান শুরু করে।
মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার
বিবিসি আরো জানায়, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া মিয়ানমার সরকারের বোধোদয় হবে না বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
গত বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার প্রবাহ টিভির সাথে এক সাক্ষাৎকারে মি. ইমামকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, রোহিঙ্গাদের নিয়ে বর্তমান সঙ্কটের সমাধান কিভাবে হতে পারে?
জবাবে তিনি মিয়ানমারের ওপর  সেংশন বা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলেন। এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, অতীতে অনেক দেশেই এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মি. ইমাম বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র নিয়ে জাতিসংঘ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। সিরিয়া, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখন মিয়ানমারের ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়, তাহলে সম্ভবত তাদের বোধোদয় হবে, নইলে হবে না।’
ওদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়Ñ বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে মি. আলী মিয়ানমারে নতুন সরকার আসার পর বাংলাদেশের সহযোগিতার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি আশা করেছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া তাদের নাগরিকরা ফেরত যেতে পারবে।
সঙ্কট মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব উপায়ে মিয়ানমারকে সহায়তার কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
এর আগে দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, মানবিক কারণেই কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, সব লোকজন আটকানো বেশ কঠিন। আর কারো কারো মানবিক পরিস্থিতি এতো খারাপ যে, তাদের ঢুকতে না দিয়ে পারা যায় না।
তিনি এ কথাও জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশে যারা অনুপ্রবেশ করছে, তাদের খাবার-ঔষধসহ প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ