নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই করতে চায় টাইগাররা। আজ রাতে সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের একমাত্র বেসরকারি ক্রীড়া চ্যানেল টি স্পোর্টস।
ম্যাচের আগের দিন সাকিব বলেন,‘ যদি সবশেষ তিন টেস্ট দেখেন, এই কথা আপনি বলতেই পারেন। এর আগের দুই টেস্ট দেখলে বলবেন স্পিন। আসলে কঠিন কন্ডিশনে আমরা কখনও সেভাবে টিকে থাকতে পারিনি। এটা আমাদের জন্য আরেকটা সুযোগ, চ্যালেঞ্জও যে, কীভাবে আমরা এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারি।”
প্রাথমিক দেখায় সাকিবের মনে হয়েছে, রান আছে সেন্ট লুসিয়ার এই উইকেটে। তবে রান করার আগে পেস ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে বলে সতীর্থদের সতর্ক করে দিলেন তিনি। “আমার মনে হয়, প্রথম দিন থেকেই অ্যান্টিগার চেয়ে অনেক ভালো উইকেট হবে ব্যাটিংয়ের জন্য। পেস ও বাউন্স একটু থাকবে হয়তো। তবে তেমন একটা সাইডওয়েজ মুভমেন্ট থাকবে বলে আমার মনে হয় না।”
সিরিজের প্রথম টেস্টে সফরকারী বাংলাদেশ ৭ উইকেটে পরাজিত হয়েছে। ওই ম্যাচেও চরমভাবে ব্যর্থ ছিল টাইগার দলের টপ অর্ডার। এই ব্যর্থতার কারণে মাত্র ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের প্রথম ইনিংস। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তৃতীয় বারের মতো নেতৃত্ব শুরু করা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেন, ওই পরাজয়ের মুল কারণ ছিল টপ অর্ডারের ব্যাটিং বিপর্যয়। মাত্র ৪৫ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারায় টাইগাররা।
টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতা বাংলাদেশ দলের জন্য এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজেদের ত্রুটিগুলো দূর করার কোন উপায়ই যেন খুঁজে পাচ্ছেনা তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ৫টি টেস্টে নিয়মিত ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ। সেটি হয় প্রথম ইনিংসে, না হয় দ্বিতীয় ইনিংসে। ফলে পরাজয়ের লজ্জা মাথা পেতে নিতে হয়েছে দলটিকে।
দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের দুই দফা ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটেছে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে। প্রথম টেস্টে ৫৩ ও দ্বিতীয় টেস্টে ৮০ রানে গুটিয়ে যায় টাইগার ইনিংস। নিজেদের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে টপ অর্ডারের ভালো ব্যাটিং চাপে ফেলে দিয়েছিল সফরকারীদের। শেষ পর্যন্ত ড্র হয় ম্যাচটি। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসেই টপ অর্ডারের ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে। ২৪ রানেই হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েও প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে টপ অর্ডার ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। যার ফলে আরো একটি পরাজয় মাথা পেতে নিতে হয় সফরকারী টাইগারদের। বারবার এমন ব্যর্থতায় বাংলাদেশ এখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এ ম্যাচেও হারলেও বাংলাদেশ যে শুধু আরো একবার পরাজয়ের লজ্জায় পড়বে শুধু তাই নয়, টেস্ট ক্রিকেটে শততম পরাজয়ের স্বাদও পেতে হবে তাদেরকে।
এ পর্যন্ত ১৩৩ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তন্মধ্যে জয় মাত্র ১৬টি। পরাজিত হয়েছে ৯৯টি ম্যাচে। বাকী ১৮টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু সেন্ট লুসিয়া এমন একটি স্থান, যেখানে প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছিল টাইগাররা। যদিও শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছিল ম্যাচটি।
২০০৪ সালের স্মরণীয় ওই ম্যাচে বাংলাদেশ দলের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন, খালেদ মাসুদ পাইলট ও মোহাম্মদ রফিক। ম্যাচটিতে জয়ের দ্বারপ্রান্তেই নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত ড্রয়ের মাধ্যমে হাফ ছেড়ে বাঁচে স্বাগতিক ক্যারিবীয়রা। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলাদেশ কি সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে? এই প্রশ্নটিই অনুরাগীদের এই ম্যাচের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে।
প্রথম টেস্টে টপ অর্ডারের বিপর্যয়ের মাশূল দেয়ার পরও সেখানে কিছু ইতিবাচক দিক ছিল। বিশেষ করে পেসারদের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। টপ অর্ডারে এক অথবা দুইজন ব্যাটার দাঁড়িয়ে যেতে পারলে ম্যাচটি হয়তোবা জিততেও পারতো বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তন্মধ্যে জয় পেয়েছে মাত্র ৪টিতে। হেরেছে ১৩টি ম্যাচে। বাকী দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
এরই মধ্যে অবশ্য দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডের জন্য ব্যাটার এনামুল হক বিজয় ও পেসার শরিফুল ইসলামকে ডেকে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যানেজমেন্ট ইচ্ছে করলে সিরিজের দ্বিতীয় ও গুরুত্বপুর্ণ ফাইনাল ম্যাচে পরিবর্তন এনে একাদশ সাজাতে পারবে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, তাইজুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজা, মুস্তাফিজুর রহমান, এনামুল হক বিজয় ও নুরুল হাসান সোহান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), জারমেইন ব্ল্যাকউড, এনক্রুমাহ বোনার, জন ক্যাম্পবেল, জশুয়া ডি সিলভা, আলজারি জোসেফ, কাইল মায়ার্স, গুডাকেশ মোটি, অ্যান্ডারসন ফিলিপ, রেমন রেইফার, জেইডেন সিলেস ও ডেভন থমাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।