Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সউদীকে টপকে রাশিয়া এখন চীনের বাজারে এক নম্বর তেল বিক্রেতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২২, ৮:১২ পিএম

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া তাদের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছে। আর ছাড় দেয়া মূল্যের সেই তেলের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। পশ্চিমা দেশগুলো যখন রুশ জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে তখন দুই হাতে রুশ তেল কিনছে চীন।

রাশিয়া থেকে চীনের জ্বালানি তেল আমদানি গত এক বছরে ৫৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। গত মাসে, অর্থাৎ মে মাসে, রেকর্ড আমদানির পর সউদী আরবকে টপকে রাশিয়া এখন চীনের বাজারে এক নম্বর তেল রপ্তানিকারক দেশ। কোভিডের কারণে চীনে জ্বালানির চাহিদা কমলেও রুশ তেলের আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে চীন এবং রাশিয়া ঘোষণা করে যে তাদের বন্ধুত্বের ‘কোনো সীমা’ নেই।

তারপর চীনের রাষ্ট্রীয় তেল রিফাইনারি সিনোপেক এবং আরেক সরকার নিয়ন্ত্রিত জায়ান্ট জেনহুয়া ওয়েল রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি বাড়িয়ে দেয়। ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপে তেলের বাজার সঙ্কুচিত হওয়ার পর রাশিয়া তাদের তেলের দাম কমিয়ে দেয়ায় চীন সেই সুযোগ দুই হাতে লুফে নিয়েছে। চীন গত মাসে ইস্ট সাইবেরিয়া প্যাসিফিক ওশান পাইপলাইন এবং সমুদ্র পথে রাশিয়া থেকে প্রায় ৯০ লাখ টন রুশ অপরিশোধিত তেল কিনেছে বলে চীনের শুল্ক কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান বলছে। ঐ একই মাসে সউদী আরব থেকে চীনের তেল আমদানির পরিমাণ ছিল ৭৮ লাখ টনের কিছু বেশি।

সউদী আরব বহুদিন ধরেই চীনের জ্বালানি তেলের বাজারের এক নম্বর বিক্রেতা, কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের পর সেই জায়গা দখল করছে রাশিয়া। মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন জানায়, তারা রুশ তেল আমদানি নিষিদ্ধ করবে। পাশাপাশি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে এবং বিকল্প সূত্র খুঁজছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, ‘রুশ অর্থনীতির প্রধান ধমনী’ টার্গেট করতে এসব পরিকল্পনা করা হয়েছে।

যদিও জ্বালানি রপ্তানি রুশ অর্থনীতির প্রধান স্তম্ভ, কিন্তু রুশ জ্বালানি আমদানির ওপর বিধিনিষেধের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ইউরোপের সাধারণ মানুষের ওপর। গত সপ্তাহে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিচার্স অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের এক রিপোর্টে বলা হয়, রপ্তানির বাজার পড়ে গেলেও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম ১০০ দিনে তেল ও গ্যাস রপ্তানি করে প্রায় ১০০০০ (দশ হাজার) কোটি ডলার আয় করেছে। এই রপ্তানির ৬১ শতাংশই গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধের পর সামগ্রিকভাবে জ্বালানি রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় কমছে। মার্চে যেখানে তেল-গ্যাস বিক্রি করে রাশিয়া প্রতিদিন ১০০ কোটি ডলার আয় করছিল তা এখন কমে গেছে। কিন্তু যুদ্ধের প্রথম ১০০ দিনে রাশিয়া প্রতিদিন যুদ্ধের পেছনে যে ব্যয় করছে (৮৭ কোটি ডলার ৬০ লাখ ডলার), তেল-গ্যাস বিক্রি থেকে তাদের আয় হয়েছে বেশি।

শুধু রাশিয়া নয়, অন্য যে দেশের ওপর মার্কিন এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেই ইরানের কাছ থেকেও প্রচুর পরিমাণে তেল কিনছে চীন। সোমবার পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীন গত মাসে ইরান থেকে ২৬০০০০ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। ডিসেম্বর মাস থেকে এটি ছিল চীনে ইরানি তেলের তৃতীয় চালান। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ