বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। আর এর মধ্যেই একটু বৃষ্টিতে পুরো নগরী তলিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘসময় ধরে প্রকল্পগুলো চলমান থাকলেও কাজের অগ্রগতি তেমন না থাকায় নগরবাসীর ভোগান্তি ক্রমাগত বাড়ছে। অপরদিকে একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এই দুর্ভোগের জন্য নগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবা সংস্থাগুলো বিশেষ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড একে অপরের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পে ধীরগতি ও নানা অসঙ্গতির কারণে নগরবাসীকে বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে দাবি করেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগরীর নেতারা। রবিবার ( ১৯ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ এ দাবি করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, মেগা প্রকল্পের আওতায় খালে দেওয়া বাঁধ অপসারণ না করা এবং বিভিন্ন নালা-নর্দমা ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি থাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে পুরো নগরী তলিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ ও বিপুল পরিমাণ বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে না। এ অবস্থায় জলাবদ্ধতা নিরসনে জনগণের নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বে সুষ্ঠু সমন্বয় নিশ্চিত, কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে নাগরিক পরিবীক্ষণ ও দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ করে প্রকল্পের সুফল নগরবাসী যেন পান সে বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটি।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য খালগুলোতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এই বাঁধ সরানো হয়নি। জোয়ারের পানি প্রবেশরোধে রেগুলেটর বসানোর কথা ছিল। কিন্তু এখনও তা হয়নি। এছাড়া নালা-নর্দমা আবর্জনামুক্ত না হওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব কারণেই চট্টগ্রামে অল্প বৃষ্টিতেই পুরো নগরী পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। সিটি করপোরেশনকে নগরবাসীর নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরো দায়ভার নিতে হবে। আর কোনো কর্তৃপক্ষ জবাবদিহিতার আওতায় আসতে না চাইলে নগরবাসীর কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।
তারা আরও বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের আওতায় বেশ কয়েকটি খাল ও ড্রেনে বাঁধ নির্মাণের কারণে পানি নামতে না পারার অভিযোগ সিটি করপোরেশন করে আসছিল। বিষয়গুলো আমলে নিয়ে কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক ছিল। এ খাতে বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রতিনিধিদের মতামতগুলো বারবার উপেক্ষা করার কারণে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো জনগণের জন্য আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপে পরিণত হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতারা বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নিচু এলাকায় বসবাসরত এবং অফিসগামী লোকজনকে বারবার চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, অফিস-আদালত, কলকারখানায় সবাইকে বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৃষ্টি হলেই পাহাড় ধস হয়, আর প্রাণহানি লেগেই আছে। পাহাড় ধসরোধে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদসহ নানা সুপারিশ আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। প্রাণহানি হলেই প্রশাসনের টনক নড়ে এবং যারা বসতি স্থাপনের হোতা তারাই আবার সেখানে উচ্ছেদ অভিযানে সরব হন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।