Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগে ফল মেলার ক্রেতা-বিক্রেতারা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২২, ৪:০৩ পিএম

আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ বসেছে নানা জাতের ফলের পসরা সাজিয়েছে রাজধানীর খামারবাড়িতে চলমান জাতীয় ফল মেলায়। তবে সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি বিক্রির আকাঙ্ক্ষা থাকলেও তাতে বাগড়া বসিয়েছে বৃষ্টি কারণে স্টলের ভেতরে আসা পানি।

শুক্রবার (১৭ জুন) বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটের কেআইবি চত্বরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে ভাসছে ফল মেলা। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ব্যস্ত পানি সড়াতে। তাদের কেউ বলতিতে পানি ভরে দিচ্ছেন, আবার কেউ পাত্র ভর্তি পানি নিয়ে বাইরে ফেলে দিয়ে আসছেন। ক্রেতারাও কোনরকম প্যান্ট উঁচিয়ে এক স্টল থেকে অন্য স্টলে যাচ্ছেন। আর অসহায় দৃষ্টিতে ক্রেতা আসার আশায় গেটের দিকে তাকিয়ে আছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, সকাল থেকেই বৃষ্টির কারণে ক্রেতারা কম আসছেন। বিক্রিও তুলনামূলক অনেক কম। বৃষ্টির পানি স্টলের ভিতরেও ঢুকে যাচ্ছে, পানি নিষ্কাশনেও নেই কর্তৃপক্ষের তেমন তোড়জোড়।

মেলায় আমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন আব্দুল করিম নামের এক বিক্রেতা। পানিতে দুর্ভোগে ক্ষোভ জানিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, বৃষ্টির পানি স্টলে ঢুকে গেছে। কী করব, বৃষ্টিতেই দাঁড়িয়ে আছি। উপর থেকে তো পানি আসে না, পানি সাইড দিয়ে ঢুকে। পানির কারণে স্টলে ক্রেতারাও আসে না, আমাদেরকেও পানিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে আব্দুল করিম বলেন, বৃষ্টির কারণে তো মেলায় লোকজনই আসতে পারছে না। আমাদের বিক্রির অবস্থা খারাপ। সকাল থেকেই কিছু লোকজন আসলেও কেউই ফল কিনছে না। আশা করছি বিকেলের দিকে বৃষ্টি না থাকলে মেলায় লোকজন বাড়তে পারে। আরেক আম বিক্রেতা শরীফ উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির কারণে ব্যবসা খুবই খারাপ। মেলায় মানুষজন কম আসায় বেচা-বিক্রিও অনেক কম। স্টলের সামনে পানি থাকায় ক্রেতারাও দোকানের দিকে আসেন না।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ছোট্ট শিশু সন্তানকে নিয়ে ফল মেলায় এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী জাকারিয়া ইসলাম। তিনি বলেন, সপ্তাহে একটা দিনই আমাদের ছুটির দিন। সকাল থেকেই ভাবছিলাম বাচ্চাকে নিয়ে ফল মেলায় আসব। কিন্তু বাসা থেকে বের হওয়ার পরই নামল বৃষ্টি। তবুও মেলায় আসলাম। কিন্তু ভিতরের পরিবেশ একদম ভাল না। মেলার ভেতরের অংশে পানি জমে গেছে, যে কারণে দর্শনার্থীও কম। তিনি আরও বলেন, বিকেলের দিকে যদি বৃষ্টি না হয়, আশা করি মেলায় দর্শনার্থী আরও বাড়বে। ভেতরের পরিবেশটা যদি দ্রুত ঠিকঠাক করে দেওয়া হয়, তাহলে দুর্ভোগ অনেকটাই কমে যাবে।

মেলায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন রাজধানীর একটি স্কুলের শিক্ষক মারুফ ইসলাম। অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছুটির দিন হওয়ায় আমি আমার শিক্ষার্থীদের নিয়ে মেলায় এসেছি। বৃষ্টির দিন হলেও মেলায় এসে আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে। পরিবেশটা অত্যন্ত সুন্দর, বৃষ্টির কারণে তেমন গরমও নেই, আবার শীতও নেই। এই সময়টাতে অন্যরা যদি ঘুরতে আসতে চায়, তাহলে আসতে পারে। আশা করি খুব ভালো লাগবে। ভেতরে বৃষ্টির পানি প্রসঙ্গে মারুফ ইসলাম বলেন, ভেতরে পানি থাকলেও আমার কাছে খারাপ লাগছে না। বৃষ্টি নিয়ে আর কিছু করার নেই, এটা একটা পরিস্থিতি। বৃষ্টি হতেই পারে, আমাদেরকে মানিয়ে নিতে হবে। এটাকে তো আমরা চাইলেই এভয়েড করতে পারব না। আমরা বৃষ্টিকে পরিবেশের একটি অংশ হিসেবেই নিতে পারি।

বৃষ্টির পানি মেলার ভেতরের অংশের ঢুকায় সকাল থেকেই পানি নিষ্কাশনের ব্যস্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। অনেকটা বিরক্তি নিয়েই তাদের একজন বলেন, সকাল থেকেই পানি পরিষ্কারে আমরা ব্যস্ত। এইদিকে পানি পরিষ্কার করি ওইদিকে পানি ঢুকে, আবার গিয়ে ওইদিকে পরিষ্কার করি, তখন এইদিক দিয়ে পানি ঢুকে। তিনি বলেন, বৃষ্টি তো স্বাভাবিক ব্যাপার আসতেই পারে। কিন্তু সমস্যা হলো এই মাঠ থেকে পানি বের হওয়ার মত কোনো ড্রেন নেই। চারপাশে দেওয়াল হাওয়ায় পানি কোন দিকে যেতে না পেরে মেলার ভেতরের অংশে ঢুকছে। তবে, এ বিষয়ে চেষ্টা করেও মেলা কর্তৃপক্ষের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়, চলবে আগামী ১৮ জুন পর্যন্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ