গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের এমআরআই ও সিটি স্ক্যান মেশিনটি দুই বছর থেকে বিকল থাকায় রোগীরা বিপাকে পড়েছেন। এখান থেকে রোগীরা সাশ্রয়ী মূল্যে পরীক্ষা করার সুযোগ পেত। মেশিন দুইটি বিকল থাকায় বর্তমানে গরীব রোগীরা বাইরে চড়ামূল্যে পরীক্ষা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। অপরদিকে কোবাল্ট-৬০ মেশিনটি বেশিরভাগ সময় বিকল থাকে। ফলে থেরাপি দিতে গিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আগত ক্যান্সার রোগীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, জনবল সংকট ও কর্তব্যরত ডাক্তারদের অবহেলার কারণে মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত থাকলেও চিকিৎসা সেবার দিকে সুনজর নেই।
তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরআই মেশিনটি স্থাপন করা হয়। আর সিটি স্ক্যানটি স্থাপন করা হয় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে। দুই বছরের বেশির সময় ধরে অচল রয়েছে এ দু’টি মূল্যবান মেশিন। সরকারি এ হাসপাতালটিতে এমআরআই সিটি স্ক্যান মেশিনে রোগীরা কম খরচে পরীক্ষা করতে পারতো। কিন্তু এখন বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। এতে করে দরিদ্র রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালে এমআরআই করতে খরচ পড়ে তিন হাজার টাকা। বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকে এ খরচ ৬ হাজার টাকার বেশি। অন্যদিকে সিটি স্ক্যান করতে চমেক হাসপাতালে খরচ পড়তো ২ হাজার টাকা। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে এ খরচ পড়ে সাড়ে ৩ হাজার টাকারও বেশি।
গুরুত্বপূর্ণ এ দু’টি মেশিন নষ্ট থাকার ফলে বিপুল সংখ্যক রোগী প্রতিদিন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চলে যাচ্ছে। রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসকদের সাথে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে যোগাযোগ থাকায় মেশিন দুটি বিকল করে রাখা হয়েছে। কবে নাগাদ এ দুইটি মেশিন সচল করা হবে এ ব্যাপারে কেউ স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেনি।
হাসপাতালে চিকিৎসক পর্যাপ্ত থাকলেও যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছে না রোগীরা। বেশিরভাগ সময় চিকিৎসকেরা হাসপাতালে থাকেন না। ডিউটির সময়ও অনেক চিকিৎসককে নানা অজুহাতে হাসপাতালের বাইরে যেতে দেখা যায়।
চমেক সূত্র জানায়, হাসপাতালে ১৩শ’ ১৩ বেড থাকলেও মাত্র ৫শ’ বেডের বিপরীতে জনবল রয়েছে ৭৫ শতাংশ। চমেক হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার। রোগীর ভারে হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে বেসামাল অবস্থা। সিট সংকুলান না হওয়ায় ফ্লোরে এমনকি বারান্দাতেও রোগীদের রাখা হচ্ছে।
পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে অবৈতনিক লোক দিয়ে হাসপাতালের দৈনন্দিন কাজ চালানো হচ্ছে। এর সুযোগে অবৈতনিক লোকেরা রোগীর আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সাথে বাক-বিতÐা ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
হাসপাতালে পানির সংকটও তীব্র। ওয়াসা থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। বিগত সময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বসানো তিনটি ডিপ টিউবওয়েলের পানি দিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে। চট্টগ্রাম ছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও প্রতিদিন অসংখ্য রোগীর ভিড় জমে। সেখানেও প্রকৃত চিকিৎসা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রোগীদের। সামর্থ্যবানরা বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসা নিলেও দরিদ্র রোগীদের একমাত্র ভরসা এ হাসপাতাল। ভুক্তভোগীরা জানান, কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি এবং ডাক্তারদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে বৃহত্তর চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠীর একমাত্র চিকিৎসার ভরসাস্থল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।