বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ভারতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার সহধর্মিণী হযরত আয়েশা (রা.)কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ওলামা-মাশায়েখ ও সর্বস্তরের তৌহদী জনতা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। আজ বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা ও ওলামা মাশায়েখের উপস্থিতিতে সোনাগাজী পৌর শহরের জিরো পয়েন্ট কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের নের্তৃত্ব দেন দারুল উলুম আল হোসাইনীয়া ওলামাবাজার মাদ্রাসার মোহতামীম ও শায়খুল হাদীস আল্লামা শাহ নুরুল ইসলাম আদীব সাহেব।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, ভারতের মাটিতে বারবার আমার মুসলিম ভাই ও মা-বোনদের রক্ত ঝরেছে। তখন কিন্তু আমরা কোনো প্রতিবাদ করি নাই। যখন কোটি কোটি মুসলিম জনতার হৃদয়ের স্পন্দন,মানবতার দূত,বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে কটুক্তিমূলক মন্তব্য করে আমাদের কলিজায় আঘাত করেছে। তখন আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনা। আমাদের হৃদয়ে আজ রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
আমরা বলতে চাই মোদি সরকারকে, অনতিবিলম্বে নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালকে ফাঁসির কাষ্টে ঝুঁলিয়ে হত্যা না করে তাহলে এই বাংলার তৌহিদী জনতা,সারা বিশ্বের মুসলিম তৌহিদী জনতা ভারত অভিমুখে লং মার্চের ব্যবস্থা করে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তাদের কলিজা চিনিয়ে আনবে।
বক্তারা বলেন,বিশ্বনবীর অপমানে সারা বিশ্বব্যাপী ভারতের বিরুদ্ধে যে নিন্দার ঝড় উঠেছে, কিন্তু আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে আজ পর্যন্ত ভারতের বিরুদ্ধে কোনো নিন্দা প্রস্তাব করা হয়নি। অবিলম্বে চলমান এই সংসদ অধিবেশনে যদি নিন্দা প্রস্তাব না করা হয় আমরা মনে করবো আমাদের দেশের সরকার প্রধান ভারতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তেমনি করে এখনো বিএনপির পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক ভাবে এর কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি,যদি বিএনপি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ না করে তাহলে আমরা বুঝবো তারাও ভারতের দালালী করছেন। এজন্য আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আগামীতে কোন সরকার গঠন করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন,বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ,আমাদের দেশে মুসলমান, হিন্দু বোদ্ধ,খ্রীস্টান আমরা ভাইভাই হিসেবে বসবাস করছি। কিন্তু আমরা শুনেছি ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের উপর নির্যাতন এবং নিপিড়ন চালানো হচ্ছে। তাদের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হচ্ছে,আগুন দিয়ে জালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা আজকের প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিতে চাই,মুসলমানদের উপর যদি নির্যাতন বন্ধ করা না হয় বাংলার ১৪ কোটি মুসলিম তৌহিদী জনতা হিন্দুস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত রয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে কয়েকটি প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে,মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার সহধর্মিণী হযরত আয়েশা (রা.)কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানকারী ভারতের বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালকে আইনের আওতায় এনে সর্বচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে, চলতি সংসদ অধিবেশনে এ ব্যাপারে নিন্দা প্রস্তাব করতে হবে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে উক্ত কটুক্তির বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনার জন্য দাবী জানানো হয়। সেই সাথে উক্ত দুই কুলাঙ্গারকে শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত ভারতের সাথে আমাদের দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করাসহ ভারতীয় সব পণ্য বয়কট করতে এবং বর্ডার ক্রস করে কোনো ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানানো হয়।
মাওলানা শিব্বির আহমেদ এর সভাপতিত্বে ও মুফতী নিজাম উদ্দিন এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মোজাম্মেল হক, মাওলানা আবু সাঈদ, প্রিন্সিপাল মাওলানা নূরুল করিম, হাফেজ মাওলানা নুরুল্লাহ নূরী, মাওলানা আহমাদুল হাসান মাসউদ, চরচান্দিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মিলন, মুফতী আহসান উল্যাহ, মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা হাফেজ সানা উল্যাহ, মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে শায়খুল হাদীস আল্লামা শাহ নুরুল ইসলাম আদীব সাহেব দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।