Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিন টিপিপি বাতিলসহ ছয়টি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে নিজের প্রথম দিনে টিপিপি বাতিলসহ অন্তত আরো ছয়টি নির্বাহী সিদ্ধান্ত দেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে তার প্রথম অফিস করার কথা রয়েছে। দায়িত্ব নিয়ে প্রথমেই তিনি কী করবেন এ প্রসঙ্গে গত সোমবার এক ভিডিও বার্তায় তার রূপরেখা তুলে ধরেছেন এ ধনকুবের রাজনীতিক ট্রাম্প। ওই ভিডিওতেই তিনি টিপিপি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম।
হোয়াইট হাউসে অভিষিক্ত হওয়ার দিন ট্রাম্প যে কাজগুলো প্রথম করতে চান সেগুলো হচ্ছেÑ টিপিপি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয়ার নোটিস। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যানার্জি প্রডাকশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল। ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ বা প্রবিধান সরিয়ে নেয়া। সাইবার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ। ভিসার অপব্যবহার তদন্ত করা যা মার্কিন কর্মীদের জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।  সরকার থেকে বেরিয়ে লবিস্ট হওয়ার ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশ ২০১৫ সালে টিপিপি সই করতে সম্মত হয়। ২০১৬ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি এসব দেশ এই বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। বিশ্বের শতকরা ৪০ ভাগ অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে এই ১২টি দেশ। এ চুক্তিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনা শুল্ক সুবিধার কথা রয়েছে। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ব্রুনাই দারুস সালাম, কানাডা, চিলি, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানোর লক্ষ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে এর বিরোধিতাকারীরা বলছেন, এ সংক্রান্ত আলোচনা গোপনে হয়েছে এবং এটি কেবল বড় কর্পোরেশনগুলোর স্বার্থরক্ষা করবে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় ট্রাম্প এ চুক্তির ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন। পেরুর রাজধানী লিমায় গত রোববার এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনে ট্রাম্পের বিরোধিতা সত্ত্বেও এ বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সদস্য দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। তবে গত সোমবার জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে গেলে এই বাণিজ্য চুক্তি অর্থহীন হয়ে পড়বে। এ মুহূর্তে নতুন সরকার গঠন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মনোযোগী হবেন তিনি।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, টিপিপি ছেড়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভুল সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি সামনে না এগিয়ে নিয়ে যাওয়া পুরো অঞ্চলে আমাদের অবস্থানকে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতি গঠনে আমাদের মূল্যবোধ ও স্বার্থের যে প্রতিফলন ঘটার কথা তাকে দুর্বল করবে। প্রসঙ্গত, টিপিপি চুক্তির আওতায় সদস্য দেশগুলোর সরকার দেশীয় প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করতে পারবে না। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন এই জোটের ১২টি দেশ এর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাজারব্যবস্থা চালু করবে। পেরুর লিমায় দুদিনের সম্মেলন শেষে জোটের নেতারা মুক্ত বাণিজ্যের ওপর জোর দেন। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, আমাদের বাজার উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে এবং সবধরনের সুরক্ষাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা পুনরায় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর (অ্যাপেক) নেতারা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় সত্ত্বেও তারা নিজেদের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য অব্যাহত রাখবেন। সম্মেলনের শেষদিনে তারা এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি বিজয়ী হলে মার্কিনিদের চাকরির বাজারকে সুরক্ষা দেবেন এবং ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতা চুক্তি বাতিল করবেন। উল্লেখ্য, টিপিপি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন ওবামা। কিন্তু মেয়াদের শেষ প্রান্তে আসায় এর অনুমোদন দেয়া আটকে দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। কংগ্রেসের দাবি, এর সংশোধন প্রয়োজন এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই কাজ করবে। সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ