Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাজেট গণমুখী : আ.লীগ বাস্তবায়ন অযোগ্য : বিএনপি

চট্টগ্রামে বাজেট প্রতিক্রিয়া ব্যবসাবান্ধব বলছে চিটাগাং চেম্বার দুর্নীতি কমলে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব মনে করে মেট্রোপলিটন চেম্বার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঘোষিত বাজেট বাস্তবমুখী এবং করোনা মহামারীর অমানিশা থেকে উন্নয়নের ধারায় প্রত্যাবর্তনের প্রত্যয় বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। অন্যদিকে বিএনপির নেতারা বলেছেন, বাজেট নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও এটি বাস্তবায়ন অযোগ্য। চিটাগাং চেম্বারের মতে বাজেট সময়োপযোগী এবং ব্যবসা-বিনিয়োগবান্ধব। অন্যদিকে মেট্রোপলিটন চেম্বার মনে করে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা গেলে বাজেটে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ঘোষিত বাজেট নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সরকারি দল আওয়ামী লীগ, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ও ব্যবসায়ী নেতারা।
বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে গতকাল নগরীতে মিছিল করে মহানগর আওয়ামী লীগ। এ সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দেশের ইতিহাসে এই বাজেটটি সবচেয়ে বড় আকারের। এই বাজেটে কোভিড-১৯ অমানিশা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তনের প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে। সর্বোপরি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারা পৃথিবীতে যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাভাবের কারণে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে জাতীয় উৎপাদনকে প্রাধান্য দিয়ে যে বাজেটটি ঘোষিত হয়েছে তা বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাস্তবমুখী। এ সময় সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, আবদুচ ছালাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মহানগর বিএনপি : চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, এ বাজেট মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতির বাজেট। বাজেট পেশকালে অর্থমন্ত্রী তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন। কিন্তু এ বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। মূল্যস্ফীতি কেবলই বাড়ছে। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান নেই। তার উপর অতিরিক্ত কর, ট্যাক্স, ভ্যাট আদায়ের যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা মরার উপর খাড়ার ঘা। তিনি গতকাল নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাজেটে দেশ থেকে পাচার করা অর্থ বৈধ করার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা অনৈতিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৩ বছর লুটপাটের অর্থনীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। মেগা প্রকল্পের নামে এখনো দুর্নীতি চলছে। অব্যাহত লুটপাট ও দুর্নীতির করালগ্রাসে এ বাজেট মুখ থুবড়ে পড়বে। বাজেট বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ঋণ আরও বাড়বে। আর তাতে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ধস নেমে আসবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সমাবেশে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, এ এম নাজিম উদ্দিন, আবু সুফিয়ান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
চিটাগাং চেম্বার : চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, বাজেটে কর্পোরেট করহার হ্রাস করায় বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং রফতানি বহুমূখীকরণ সম্প্রসারিত হবে। তবে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়-সীমাও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি এ বাজেট করোনা মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়া হবে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ ৭৩ হাজার একশত ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে যা সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ঘাটতি মোকাবেলায় ক্রমবর্ধমান ঋণের ক্ষেত্রে সরকারের সচেতন হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। ম্যানুফ্যাকচারারদের নিকট কাঁচামাল সরবরাহে উৎসে কর সাত শতাংশ থেকে কমিয়ে চার শতাংশ করা হয়েছে যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। উৎসে ভ্যাট কর্তনের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী কর্তৃক হ্রাস সংক্রান্ত সমন্বয় গ্রহণের সময়সীমা ২ কর মেয়াদ হতে বৃদ্ধি করে ৪ কর মেয়াদ করা হয়েছে যা ভ্যাটের ক্ষেত্রে ইতিবাচক। এই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হলে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন এবং অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
মেট্টোপলিটন চেম্বার : সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা গেলে বাজেটের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব বলে মনে করেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, কোভিড মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্ব অর্থনীতির অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেও মূল্যস্ফীতির মতো চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট সুচিন্তিত, জনকল্যাণমুখি ও সাহসী। তিনি বলেন, আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে ঘোষিত বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব। রাজস্ব আহরণের টার্গেট বেশি হলেও দুনীতি দমন করা হলে তা আদায় কঠিন হবে না। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা ও অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব আরোপ সময়োপযোগী বলে মনে করি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ