Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিজেদের লুটপাটের জন্যই বাজেট তৈরি করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২২, ৮:৪৮ পিএম | আপডেট : ১০:১৩ পিএম, ৯ জুন, ২০২২
নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট বিএনপির কাছে কোন গুরুত্ব নেই বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা এর আগেও বাজেট নিয়ে কথা বলেছি, প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। এইবার কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই না। কারণ আমরা কোন বাজেটের প্রতিক্রিয়া দিবো না। এটা কার বাজেট? কারা এই বাজেট করছে? যারা আজকে বাজেট ঘোষণা করছে তারাতো জনগণের প্রতিনিধি নয়। বাজেট ঘোষণা করার কোন অধিকারতো তাদের নেই। সরকার বাজেট তৈরী করছেন নিজেদের লুটপাটের জন্য। ভবিষ্যতে কিভাবে আরো লুটপাট করতে তারা এই হিসাব করে। তাই এবারের বাজেট আমাদের কাছে কোন গুরুত্ব পায়নি।
 
 
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কাফরুল থানার ৪টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি সাবেক এমপি, বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা অসুস্থ এস এ খালেককে দেখতে তারা বাসায় যান।
 
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত খারাপ সময় অতিবাহিত করছি। এটা শুধু বিএনপির জন্য নয়, গোটা জাতির জন্য।এখন যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তারা দেশের মানুষের সকল অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা এই দেশটাকে একটা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।
 
তিনি বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো আমাদের এই দেশকে বাঁচাতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা কোন পরিবার, দল বা গোষ্ঠীর জন্য যুদ্ধ করিনি। আমরা এই দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি। আমাদের দুঃভাগ্য আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসেও আমাদের কোন স্বাধীনতা নেই। আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। পুলিশ আমাদের প্রোগ্রাম করতে দিতে চায় না। সরকারি গুন্ডারা, আওয়ামী লীগের গুন্ডারা আমাদের প্রোগ্রামে বাধা দেয়। এটাতো হওয়ার কথা না। তাদের যে অধিকার, আমাদেরওতো সেই অধিকার রয়েছে। এই দেশটাতো সকলের। আওয়ামী লীগ যতোদিন ক্ষমতায় থাকবে দেশ ততোদিন ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
 
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার উন্নয়ন উন্নয়ন বলে পাগল হয়ে যাচ্ছে। আরে উন্নয়নটা কোথায়? তারা অবকাঠামো বানাচ্ছে আর নিজের পকেট ভরছে। শতকরা ৪২ ভাগ লোক এখন দারিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে। একটা মানুষ আজকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পায় না। বেশি টাকা না থাকলে মানুষ হাসপাতালে যেতে পারে না। আর সরকারি হাসপাতালে গেলেতো কোন চিকিৎসাই পাওয়া যায় না। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়, কলেজ থেকে যারা বের হয় তারা বাইরে কোথাও জায়গা পায় না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সারাদেশে সম্মেলন করে প্রতিনিধি নির্বাচন করার লক্ষ্য একটাই, এদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা গণতান্ত্রিকভাবে সংগ্রাম করবো, লড়াই করবো। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আবার আমরা এই দেশটাকে স্বাধীন করবো। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবো, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবো। আপনাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, আজকে এই সংগ্রাম কোন ব্যক্তির জন্য নয়। এটা দেশকে রক্ষা করার জন্য। ১৯৭১ সালে আমরা যে সংগ্রাম করেছিলাম সেই একইভাবে এই দেশকে বাঁচানোর জন্য আমাদের আবার যুদ্ধ করতে হবে। এই যুদ্ধে আমাদের জয়লাভ করতে হবে।
 
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনে ছিলেন, আর বেগম খালেদা জিয়া ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই জন্যই এই আওয়ামী সরকার বিএনপিকে ভয় পায়। আমান বলেন, ভোট চোর, ভোট ডাকাত এই আওয়ামী অবৈধ নিশিরাতের সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবাই কে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে।
 
বিশেষ অতিথি বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এনে ছিলেন, আর বেগম খালেদা জিয়া ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই জন্যই এই আওয়ামী সরকার বিএনপিকে ভয় পায়। আমান বলেন, ভোট চোর, ভোট ডাকাত এই আওয়ামী অবৈধ নিশিরাতের সরকারকে বিদায় করে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সবাই কে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে।
 
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক বলেছেন, অনৈতিক অবৈধ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়। আগামীতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। নইলে এই আওয়ামী সরকার কে কঠিন মূল্য দিতে হবে। তীব্র গণ আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথে থেকেই এই গণ দাবী আদায় করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
 
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ১৪ আসনের গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী এস এ সিদ্দিক সাজু বলেছেন, এ সম্মেলনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে স্বচ্ছতা উপায়ে নেতা নির্বাচন করার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন বিএনপি। আওয়ামী সরকার এ নির্বাচন দেখে তাদের বোধদয় হবে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবার গণতন্ত্র চর্চায় তারা এগিয়ে আসবে। ইনশাআল্লাহ আগামীতে আমরা রাজপথে থেকে তীব্র গণআন্দোলনের মাধ্যমেই এই অবৈধ আওয়ামী সরকার কে বিদায় করে দেশে গণতন্ত্রের সরকার কায়েম করব।
 
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, আতিকুল ইসলাম মতিন, আতাউর রহমান (চেয়ারম্যান), মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আক্তার হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, গোলাম কিবরিয়া মাখন, আফাজ উদ্দিন, আলাউদ্দিন সরকার টিপু, হাজী ইউসুফ , হুমায়ুন কবির রওশন, এডভোকেট আফতাব উদ্দিন জসীম, এম এ রাজ্জাক, দেলোয়ার হোসেন দুলু , স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সাইদুল ইসলাম সাইদুল, রাজীব আহম্মেদ, দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ মৃধা, শাহ্আলী থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান দেওয়ান, কাফরুল থানা যুবদলের  সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান রাব্বী, ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সোহেল রহমান, দারুসসালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোঃ ইকবাল মাহমুদ রিপন, মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের  যুগ্ম আহ্বায়ক কে, এম, ইয়াহিয়া সামী, ১২ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র  যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ রুবেল,  দারুসসালাম থানা ছাত্রদলের   রুমন আহম্মেদ, মিরপুর থানা ছাত্রদলের মেহেদী,  সহ ওয়ার্ড থেকে আগত কাউন্সিলরবৃন্দ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ।
 
এস খালেকের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেয়ার সময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন- দলের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, নির্বাহী কমিটি সদস্য সাঈদ সোহরাব, চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমূখ।
 
সম্মেলনে ওয়ার্ড আহবায়ক কমিটির সদস্যগণ ব্যালটের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করেন।
 
উল্লেখ্য ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ৮টি সাংগঠনিক জোনের ২৬টি থানাধীন ৭১টি ওয়ার্ডের সম্মেলন গত ১লা জুন শুরু হয়ে আগামী ২৫শে জুন পর্যন্ত চলবে। ধারাবাহিক এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৯ই জুন কাফরুল থানার ৪, ১৪, ১৬, ৯৪ নং ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ