নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ভারতের সবশেষ ম্যাচেও তিনি দলকে দেন নেতৃত্ব। ব্যাট হাতে সামনে থেকে দেখান পথ। হুট করেই সাফল্যে ঠাসা ২৩ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলেন মিতালি রাজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব সংস্করণকে বিদায় বলে দিলেন কিংবদন্তি এই ব্যাটার। গতকাল টুইট করে এই সিদ্ধান্ত জানান ৩৯ বছর বয়সী মিতালি। তার মতে, সরে দাঁড়ানোর এখনই সঠিক সময়, ‘আমার মনে হয়, এখনই ক্যারিয়ারের ইতি টানার উপযুক্ত সময়। কারণ দলটি দারুণ প্রতিভাবান কিছু তরুণ ক্রিকেটারের হাতে রয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’
গত মার্চে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ম্যাচটি হয়ে রইল ভারতের জার্সিতে মিতালির শেষ। ওই ম্যাচে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। প্রাথমিক পর্বে ম্যাচটি ৩ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় তার দল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি মিতালি। তবে খেলাটির সঙ্গে থাকার ইঙ্গিত মিলল তার কথায়, ‘মাঠে পা রাখার প্রতিটা ক্ষণে ভারতকে জেতানোর জন্য নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার অভিপ্রায় ছিল আমার। দলটির প্রতিনিধিত্ব করার যে সুযোগ আমাকে দেওয়া হয়েছে, তা আমি সবসময় মনে লালন করব। এত বছর ধরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের। মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে এটা অবশ্যই আমাকে সাহায্য করেছে এবং ভারতের নারী ক্রিকেটকেও একটি রূপ নিতে সহায়তা করেছে। এই পথচলা হয়তো শেষ, তবে আরেকটি ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমি যে খেলাটিকে ভালোবাসি এবং ভারত ও পুরো বিশ্বে নারী ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় অবদান রাখতে খেলাটির সঙ্গে জড়িত থাকতে চাই।’
মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান মিতালির। ভারতের হয়ে ১২ টেস্ট, ২৩২ ওয়ানডে ও ৮৯ টি-টোয়েন্টি খেলা এই ব্যাটার তিন সংস্করণ মিলিয়ে করেছেন ১০ হাজার ৮৬৮। ২০১৬ সালে অবসরে যাওয়া ইংল্যান্ডের শার্লট এডওয়ার্ডসের রান ১০ হাজার ২৭৩। মেয়েদের ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৯ হাজার রান নেই আর কারও।
১৯৯৯ সালের জুনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন মিতালি। অভিষেক ম্যাচেই ১১৪ রানের দারুণ এক অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন তিনি। সঙ্গে নাম লেখান রেকর্ডের পাতায়। সেই সময় মেয়েদের সব সংস্করণ মিলিয়ে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন মিতালি। ১৬ বছর ২০৫ দিনে খেলা তার ইনিংসটি ওয়ানডেতে এখনও সবচেয়ে কম বয়সে শতকের রেকর্ড।
এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। এগিয়ে গেছেন শুধু সামনের দিকে। ওয়ানডেতে মিতালির ৭ হাজার ৮০৫ রানের ধারেকাছেও নেই কেউ। এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ৭১ ফিফটি ও টানা ৭ ইনিংসে পঞ্চাশের রেকর্ডও তার। কমপক্ষে ৪ হাজার ওয়ানডে রান আছে এমন ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০.৬৮ গড় মিতালির।
ওয়ানডেতে সফলতম অধিনায়ক মিতালি। সবচেয়ে বেশি ১৫৫ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং সর্বোচ্চ ৮৯ জয়ের কীর্তি তার। অধিনায়ক হিসেবে এই সংস্করণে ৫ সেঞ্চুরি ও রেকর্ড ৪৭ ফিফটিতে সবচেয়ে বেশি ৫ হাজার ৩১৯ রানও মিতালির। মিতালির নেতৃত্বে দুইবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল ভারত, ২০০৫ ও ২০১৭ সালে। পুরুষ ও নারী ক্রিকেট মিলিয়ে দুইটি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম অধিনায়ক তিনি। যদিও একবারও শিরোপা ঘরে তুলতে পারেনি তার দলটি।
২০০২ সালে টেস্ট অভিষেক হয় মিতালির। সাদা পোশাকের সংস্করণে এক সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে রান করেন তিনি ৬৯৯। এর চার বছর পর দেশের হয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে খেলতে নামেন এই ক্রিকেটার। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার রান ১৭ ফিফটিতে ২ হাজার ৩৬৪।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।