পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীতে বেসরকারি বিএম কন্টেইনার ডিপোর ভয়াবহ আগুন এখনো নেভানো যায়নি। গতকাল সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডিপোর অভ্যন্তরে ধিকিধিকি আগুন জ¦লছিল। সেখান থেকে রাসায়নিকভর্তি আরো চারটি কন্টেইনার শনাক্ত করেছেন সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা। আগুন নির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত টিমের সদস্যরা বলছেন, বিপদজনক দাহ্যপদার্থ (হ্যাজার্ডস) মজুদ, সংরক্ষণ ও হ্যান্ডলিংয়ে ডিপো কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও গাফিলতিতে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্মার্টগ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমানের মালিকানাধীন এ ডিপোতে পদে পদে চরম অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, খামখেয়ালিপনার প্রমাণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ডিপোতে রাসায়নিকের মজুদ গড়ে তোলা হলেও ছিল না কোন অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন। আর নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ঘটনার জন্য কারা দায়ী তার তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।
শনিবার রাতের ওই অগ্নিকাণ্ড থেকে ডিপোতে একের পর বিস্ফোরণে পুরো ডিপো যুদ্ধবিধস্ত এলাকার রূপ ধারণ করে। বিস্ফোরণ ও আগুনে অর্ধশত মানুষের জীবন গেছে। নিহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের নয়জন সদস্য রয়েছেন। আহত হয়েছেন চারশ’র বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে দুই শতাধিক এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অন্তত ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ২৪ একর আয়তনের ডিপোতে থাকা শত শত কোটি টাকার আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ১৩ শতাধিক কন্টেইনার পুড়ে গেছে। সেখানে থাকা পণ্যবাহী বিপুল সংখ্যক কার্ভাডভ্যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডিপোর আশপাশের প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকার বসতবাড়ি, দোকানপাটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ডিপোর অভ্যন্তর এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসস্তুপ।
গতকাল সকাল থেকে অগ্নি নির্বাপণ কাজে যোগ দেয় ঢাকা থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিম। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন নেভানো যায়নি। আগুনে ডিপোতে রাখা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডসহ বিভিন্ন দাহ্যবস্তু পুড়তে থাকায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাসায়নিক দ্রব্য পুড়ে যাওয়ায় এলাকার বাতাস, মাটি এবং পানি দূষিত হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গ্যাসের কারণে শ^াসকষ্টসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। রোববার থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ টিম পরিবেশ দূষণরোধে কাজ করে যাচ্ছে। শুরু থেকেই পানি সঙ্কটে পড়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এলাকার ছয়টি বড় বড় পুকুর, দীঘির পানি ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, কন্টেইনারভর্তি রাসায়নিক পদার্থ থাকায় আগুন নেভাতে সময় লাগছে।
এদিকে শেষ খবর পর্যন্ত কারো লাশ উদ্ধার হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৪৯ জনে স্থির রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তাদের ছবি হাতে নিয়ে স্বজনেরা হন্যে হয়ে ছুটছেন হাসপাতাল থেকে মর্গে। পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া লাশের পরিচয় শনাক্ত ও নিখোঁজদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বার্ন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান প্রফেসর ডা. সামন্ত লাল সেন চট্টগ্রাম এসেছেন। তিনি রোগীদের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থার খোঁজখবর নেন।
অবহেলা-অব্যবস্থাপনা-গাফিলতি
বিএম ডিপোতে অরক্ষিত অবস্থায় মজুদ ছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক ভর্তি কন্টেইনার। আলাদা এবং সুরক্ষিত কোন শেডে না রেখে এসব কেমিক্যাল রাখা হয় ডিপোর একেবারে প্রবেশ পথে। তাও একটির পর একটি কন্টেইনারে ভরে। আর এই কারণেই অগ্নিকাণ্ডের পর পর ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং তা থেকে ব্যাপক প্রাণহানী হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেখানে থাকা রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে আগুন ভয়ঙ্কর মাত্রা পায়। কেমিক্যালের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণেও বেশি সময় লাগছে। তারা বলছেন, ডিপো কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট তদারকি সংস্থাকে অন্ধকারে রেখেই সেখানে বিপুল দাহ্যপদার্থের মজুদ গড়ে তোলে। আর এ ক্ষেত্রে তারা বিপজ্জনক রাসায়নিক দ্রব্যের মজুদ এবং সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অমান্য করেছে। এ ধরনের পণ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বেসরকারি ডিপো হিসাবে কোন কমপ্লায়েন্সও ছিল না। শুধু তাই নয়, অগ্নিকাণ্ড শুরুর ৩৬ ঘণ্টা পরও তারা সেখানে বিপুল পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিকভর্তি কন্টেইনার থাকার তথ্য গোপন করে। গতকাল দুপুরে ডিপোতে দাহ্যপদার্থ ভর্তি আরো চারটি কন্টেইনার চিহ্নিত করে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল।
পুুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, শনিবার রাতে ডিপোতে আগুন লাগার খবরে সর্বপ্রথমে সেখানে ছুটে যান কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা। তারা সাধারণ আগুন ভেবেই পানি দিয়ে আগুন নেভাতে শুরু করেন। অথচ সেখানে রাসায়নিক তথা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডভর্তি কন্টেইনার থাকার কোন তথ্যই তাদের দেওয়া হয়নি। ফলে আগুন নেভাতে গিয়ে প্রথম বিস্ফোরণেই প্রাণ হারান ফায়ার সার্ভিসের নয় সদস্য। ভয়াবহ বিস্ফোরণে তারা রীতিমত উড়ে যান। আরো কয়েকজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। রাসায়নিক পদার্থ থাকার তথ্য তাৎক্ষণিক জানা গেলে এমন ভয়াবহ বিপর্যয় এড়ানো যেত বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ব্যাপক প্রাণহানী এবং ধ্বংসযজ্ঞের কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্টরা ঘুরে ফিরেই ডিপো কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকে দুষছেন। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডিপোতে রাসায়নিক মজুদ রাখার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোন ঘোষণা দেয়নি, এ জন্য তারা কোন অনুমোদনও নেয়নি। ডিপোর ফায়ার সনদও নেই বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন মালিকপক্ষ। স্মার্টগ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মেজর (অব.) শামসুল হায়দার চৌধুরী দাবি করেন, এ ঘটনা নাশকতা। তবে এর স্বপক্ষে কোন তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেননি তিনি।
বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের মালিকানাধীন আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্সের উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইডও রফতানির জন্য রাখা ছিল কন্টেইনারে। ওই রাসায়নিকই আগুনকে ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা। কিন্তু হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছাড়া আর কোনো রাসায়নিক সেখানে ছিল কি না এবং কী পরিমাণ রাসায়নিক সেখানে ছিল, সেসব তথ্য এখনও জানায়নি ডিপো কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড বিদেশে রফতানি হচ্ছে। রফতানি পণ্য হিসাবে এসব রাসায়নিক বেরসকারি ডিপোগুলোতে মজুদ ও সংরক্ষণ করা হয়। তবে এসব রাসায়নিক সংরক্ষণের কিছু নীতিমালা আছে। চট্টগ্রাম বন্দরেও এ ধরনের রাসায়নিকসহ নানা কেমিক্যাল সংরক্ষণ করা হয় নিয়ম নেমে আলাদা শেডে। বন্দরে পড়ে থাকা ৬০৯ ড্রাম হাইড্রোজেন পার অক্সাইড স্পট নিলামে বিক্রি করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এসব রাসায়নিক চার বছর ধরে সুরক্ষিত অবস্থায় ছিল সেখানে। কিন্তু বিএম ডিপোতে রাসায়নিক মজুদে কোন রকমের নিয়ম মানা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কন্টেইনার অন্যান্য পণ্যবাহী কন্টেইনার থেকে আলাদা রাখতে হয়। বিএম ডিপোতে এটা মেনে চললে ফায়ার সার্ভিস আগুনটাকে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে রাখতে পারত। সেটা ছড়িয়ে পড়ত না।
অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযানের পাশাপাশি রাসায়নিক দূষণ ঠেকাতে ডিপোতে কাজ করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ওই ডিপোতে রাসায়নিক দ্রব্যের চারটি কন্টেইনার শনাক্ত করেছে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল। সেনাবাহিনীর ১৮ ব্রিগেডের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম ডিপোতে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, চারটি রাসায়নিকের কন্টেইনার শনাক্ত করে সেগুলো আলাদা করে রাখা হয়েছে। এসব কন্টেইনারে কী ধরনের রাসায়নিক আছে, সে তথ্যও আমরা পাচ্ছি না।
২২ জনের লাশ হস্তান্তর
ডিপোতে বিস্ফোরণ ও আগুনে নিহতদের মধ্যে ২২ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলেন- হাবিবুর রহমান (২৩), রবিউল ইসলাম (১৯), মমিনুল হক (২৪), মহি উদ্দিন (২২), তোফায়েল ইসলাম (২২), আফজাল হোসেন, মো. সুমন (২৮), ইব্রাহিম হোসেন (২৭), ফারুক জমাদ্দার (৫০), মো. হারুন (৫৫), মো. নয়ন (২২), শাহাদাত হোসেন (২৯), শাহাদাত উল্লাহ মজুমদার, মো, রিদুয়ান (২৫), রানা মিয়া, তহিদুল হাসান, নাজিমউদ্দিন রুবেল, নিপন চাকমা, মিঠু দেওয়ান, আলাউদ্দিন (৩৫), শাকিল তরফদার ও মো. মনিরুজ্জামান (২২)। এছাড়া যাদের লাশ চেনা যাচ্ছে না তাদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটির ফরেনসিক বিভাগ নিহতদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে। পরিচয় শনাক্তের পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। যেসব স্বজন দুর্ঘটনায় নিখোঁজ আছে দাবি করছেন, তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নিখোঁজের বাবা-মা, ভাই-বোন, কিংবা সন্তানদের মধ্যে যেকোনও দুইজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
এখনো নিখোঁজ ৪ ফায়ার সার্ভিস কর্মী
বিএম ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মী। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে আটটি লাশের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন চারজন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- কুমিরা ফায়ার স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মো. রানা মিয়া। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ। আরেক ফায়ার ফাইটার আলাউদ্দিনের বাড়ি নোয়াখালী, আর সীতাকুণ্ড স্টেশনের ফায়ার ফাইটার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাড়ি ফেনী। নিহতদের মধ্যে মনিরুজ্জামান ছিলেন নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট। তার বাড়ি কুমিল্লায়। কুমিরা ফায়ার স্টেশনের লিডার নিহত মিঠু দেওয়ানের বাড়ি রাঙ্গামাটি। নিহতদের মধ্যে আরও আছেন রাঙ্গামাটির নিপন চাকমা ও শেরপুরের রমজানুল ইসলাম। নিহত মো. শাকিল তরফদারের বাড়ি ঠিকানা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিখোঁজদের মধ্যে কুমিরা ফায়ার স্টেশনের লিডার মো. ইমরান হোসেন মজুমদারের বাড়ি চাঁদপুর। ফায়ার ফাইটার শফিউল ইসলাম, তার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। নওগাঁর মো. রবিউল ইসলাম ও রংপুরের ফরিদুজ্জামানেরও কোনো সন্ধান এখনো মেলেনি। তারা দু’জনেই ফায়ার ফাইটার হিসেবে সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।
৬টি তদন্ত কমিটি মাঠে
সীতাকুন্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে মোট ছয়টি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ভয়াবহ এই ঘটনা তদন্তে ডিপো কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশন, জেলা প্রশাসন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন বেসরকারি এই কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ এই আগুন লাগার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। টার্মিনাল ম্যানেজার, ডেপুটি ডিরেক্টর ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনারকে নিয়ে গঠিত কমিটিতে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ঘটনা তদন্তে গঠন করেছে ৯ সদস্যের কমিটি। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে সদস্য সচিব করে গঠন করা এ কমিটিকে সময় দেয়া হয়েছে ৫ কার্যদিবস।
এই তদন্ত কমিটির বাকি সাত সদস্য হলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন খান, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার আবু নুর রাশেদ আহমেদ, পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার পরিচালক মুফিদুল আলম, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের মেজর আবু হেনা মো. কাউসার জাহান, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম ও চট্টগ্রামের বিস্ফোরক পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে আহ্বায়ক করে গঠন করা কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে ৭ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের পক্ষ থেকে এ ঘটনা তদন্ত করতে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের কমিটি। এর প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার শফিউদ্দিন। বাকি সদস্যরা হলেন- যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান ও সালাহউদ্দিন রিজভী এবং সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা ও রাজস্ব কর্মকর্তা বিকাশ দাশ। প্রতিবেদন জমা দিতে ৭ কার্যদিবস সময় পাচ্ছে এই কমিটিও। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে এ ঘটনা তদন্তে গঠন করা কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম। কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আনিছুর রহমান। মোট ৭ সদস্যের এ কমিটিকে ৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে প্রতিবেদন জমা দিতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।