Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মুসলিম অভিবাসীদের নথিভুক্তির ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য জাতীয় নিবন্ধীকরণ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করার প্রস্তাব করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ক্রিস কোবাক। প্রসঙ্গত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রণীত বিদেশিদের আগমন ও বহির্গমন পদ্ধতিকেই কার্যত পুনঃপ্রবর্তন করতে চান। তার প্রস্তাবিত এই কর্মসূচিটি প্রথম চালু করা হয়েছিল বিশ্ব বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলার পর ২০০২ সালে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে মার্কিন সরকার সে দেশের নাগরিক নন এমন নির্দিষ্ট সংখ্যক চিহ্নিত বিদেশিদের টার্গেট করে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এই ব্যবস্থার আওতায় ২৫টি নির্দিষ্ট দেশের ১৬ বছর বয়সী অথবা তার চেয়ে বেশি বয়সী লোকদের আঙুলের ছাপ, ছবি এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণসহ স্থানীয় অভিবাসন দফতরে নাম নথিভুক্ত করা হয়। বিশেষ করে তখন যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে বসবাসকারী মুসলিম কিংবা আরব দেশগুলোর নাগরিক অথবা দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের নাগরিক, যারা পড়াশুনা, চাকরি অথবা পর্যটক হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন তারা এই কর্মসূচির আওতায় পড়বেন। কিন্তু এই বাধ্যবাধকতা মানতে যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাদেরকে হয় গ্রেফতার নতুবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার অথবা ফৌজদারি অপরাধে শাস্তির আওতায় নেয়া হয়।
এক তথ্যে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন-নীতি অনুযায়ী, মাত্র ৩ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করতে পারবেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ দেশটিতে থাকা এক কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে অপরাধের অভিযোগ আছে ৮ লাখ ২০ হাজারের বিরুদ্ধে। আর এই ৮ লাখের মধ্যে গুরুতর অভিযুক্ত আছে প্রায় ৩ লাখ। ভোটের আগে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। আর ভোটের পর তিনি জানান, গুরুতর অপরাধে জড়িত এমন ২০ থেকে ৩০ লাখ অভিবাসীকে বিতাড়িত করা হবে।
তার এ ঘোষণার পর রিপাবলিকান নেতা ও প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পল রায়ান জানান, লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে গণহারে নির্বাসনে পাঠানো ট্রাম্পের অগ্রাধিকার হতে পারে না। তিনি বলেন, এটা আমাদের ফোকাস নয়। অভিবাসন ইস্যুর চেয়ে বরং সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে হবে। আমরা বলপূর্বক লোকজনকে নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা করছি না। ট্রাম্পও এমন কোনো পরিকল্পনা করছেন না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রিমিনাল রেকর্ডধারী ৩০ লাখ অভিবাসী খুঁজে পাওয়াই সম্ভব নয়। এর পরও ট্রাম্প যদি পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া বলবৎ করে ৩০ লাখ অভিবাসীকে দেশ ছাড়া করতে চান তাহলে অপরাধীর পাশাপাশি নিরীহ অভিবাসীদেরও তাড়াতে হবে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, অস্থায়ী ভিসাধারী কিংবা গ্রিনকার্ডধারীরাও ট্রাম্পের অভিবাসননীতির বলি হতে পারে। মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অভিবাসনবিষয়ক গবেষক গ্রেস মেং। তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, আমাদের মনে রাখা দরকার, ওবামা সক্রিয়ভাবে বিপুলসংখ্যক অভিবাসী তাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এমনকি তিনি দুই মেয়াদে ২৫ লাখ অভিবাসীকে তাড়াতে সমর্থ হয়েছেন। সিএনএন, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ