Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে দাফন সম্পন্ন্ হলো টিলাধসে নিহত ৪ জনের, জেলা প্রশাসনের সহায়তা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২২, ৭:৩০ পিএম

জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সাতজনি গ্রামে টিলা ধসে মাটিচাপায় নিহত ৪ জনের। আজ সোমবার (৬ জুন) বিকাল ৩টায় চিকনাগুল শাহী ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জানাযার নামাজ। টিলা ধসের ঘটনায় মাওলানা রফিক আহমদের ইমামতিতে নামাজে জানাজা শেষে নিহতদের লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। এসময় অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠে উপস্থিত মানুষের চোখ। জানাজায় অংশ নেন হরিপুর মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল কাদির, মাওলানা হিলাল আহমদ, উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, জেলা পরিষদের সদস্য সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহিবুল হক মুহিব, চিকনাগুল ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রফিক আহমদ সহ চিকনাগুল-হরিপুর ইউপির বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মুসল্লিরা। এর আগে আজ ভোরে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় পাহাড় ধসে মাটিচাপায় একই পরিবারের নিহত হন চারজন। এর মধ্যে রয়েছে এক শিশুও। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। ভোর ৫টার দিকে উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পূর্ব সাতজনি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- পূর্ব সাতজনি গ্রামের আব্দুল করিমের পূত্র জুবায়ের আহমদ (৩৫), তার স্ত্রী মোছা. সুমি বেগম (২৬), জুবায়ের আহমদের পূত্র সাফি আহমদ (৫) এবং জুবায়ের আহমদের ভাই মাওলানা রফিক আহমদের স্ত্রী মোছা. শামীমআরা বেগম (৪৮)। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, সাতজনি গ্রামে পাহাড় কেটে অনেকেই নির্মাণ করেছেন বসতঘর। এর মধ্যে ওই পরিবারও পাহাড় কেটে পাদদেশে বাড়ি তৈরি করে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের কারণে নরম হয়ে পড়ে পাহাড়ের মাটি। রোববার রাতের টানা বৃষ্টিতে ভোর ৫টার দিকে পূর্ব সাতজনি গ্রামের জুবের আহমদের টিনের তৈরি ঘরের উপর পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ে। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায়ই মাটিচাপা পড়ে একই পরিবারের নিহত হন ওই চারজন। এ ঘটনায় আহত হন ৮ জন। তারা হলেন- আব্দুল করিম (৮০), খয়রুন নেছা (৭৫), মাওলানা রফিক আহমদ (৬০), ফাইজা বেগম (২০), রাফিউল ইসলাম (১০), লুৎফা বেগম (২০), মেহেরুন নেছা (৪০) ও হাম্মাদ (৩)।

আহতদের পরে ভর্তি করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া দেওয়া হয় এবং গ্রামের বাসিন্দারা দ্রুত ছুটে এসে হতাহতদের উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অপরদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে সিলেট ফায়ার সার্ভিস উপ পরিচালক মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে জালালাবাদ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সদস্য ও জৈন্তাপুর থানা পুলিশের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধারে শরিক হয়। পরে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। সিলেট ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম দস্তগির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ৫ জনকে আহত অবস্থায় এবং ৪ জনকে উদ্ধার করা হয় মৃত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই বিকাল ৩টার দিকে স্থানীয় চিকনাগুল শাহী ঈদগাহ ময়দানে জানাযার নামাজ শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে নিহতদের লাশ। এদিকে, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান। এসময় হতাহতদের দাফন ও চিকিৎসার জন্য মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ