গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
যানজটের কারণে সমস্যার মুখোমুখি হয়নি এমন মানুষ ঢাকা শহরে খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। যানজটে আটকা পড়ে প্রতিদিন নষ্ট হয় মূল্যবান কর্মঘন্টা, বৃদ্ধি পায় দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। দিন দিন শহরে যানজট পরিস্থিতির অবনতি হয়ে চলেছে। বিআরটিএ-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২২ এর মে মাস পর্যন্ত ব্যাক্তিগত নিবন্ধিত হয়েছে ৩১,৩০৮টি এর বিপরীতে বাস মাত্র ৩,৮০৫টি। অপরিকল্পিতভাবে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি ও যত্রতত্র পার্কিং করে রাখায় যানজটের ভয়াবহতা আরো বাড়ছে। যানজটে গাড়ির ইঞ্জিন চালু থাকে। এতে কার্বন নি:সরণ চলমান থাকায় ফলে মানুষ সবচেয়ে বেশি দূষণে শিকার হয়। নাগরিক জীবন, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কল্যাণ বিবেচনায় অতি দ্রুত যানজট হ্রাসে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
আজ বিকাল ৪.০০ টায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত ‘যানজট ও দূষন হ্রাসে হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক ভার্চূয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। সংস্থার প্রকল্প কর্মকর্তা প্রমা সাহার সঞ্চালনায় আয়োজনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, ভূমিজ লিমিটেড এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ফারহানা রশীদ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী।
মাকসুদ হাসেম বলেন, ফুটপাতে যেসকল পণ্য বিক্রি হয়, সেগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। চাহিদা আছে বলেই ফুটপাতে হকাররা পণ্য বিক্রি করেন। হকারদের একটি সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা প্রয়োজন। এজন্য বিশ^বিদ্যালয়গুলো গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। হেঁটে যাতায়াতের একটি নিরবিচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক নিশ্চিত অনেক জরুরি। সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিসর। আমাদের একটি সিটি ওয়াইড পাবলিক স্পেস স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। এর মাধ্যমে যানজট হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।
আদিল মোহাম্মদ খান তার বক্তব্যে বলেন, শুধু ঢাকা নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি শহরই দূষণের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে। হাঁটাকেন্দ্রিক যে নগর যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার, তা সমগ্র বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই প্রাসঙ্গিক। ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে হেঁটে যাতায়াত ও গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন। হেঁটে যাতায়াতের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হলে অধিকাংশ ট্রিপ পায়ে হেঁটে সংঘটিত হবে, এর মাধ্যমে গাড়ির ব্যবহার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে এবং শব্দ ও বায়ু দূষণও কমে আসবে।
ফারহানা রশীদ বলেন, আমাদের শহরটা আসলে সক্ষম পুরুষদের জন্য। নারী, শিশুদের জন্য আমাদের শহর এখনো উপযোগী নয়। শিশুসহ একজন নারী বের হলে তাকে হাঁটার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। ফুটওভার ব্রিজের মতো একটি অবকাঠামো শিশু কোলে একজন নারীর পক্ষে পার হওয়া অনেক কঠিন। নিরবিচ্ছিন্ন ফুটপাতের অভাব, বসার ব্যবস্থা না থাকা, ছায়ার অভাব ইত্যাদি থাকার কারণে নগরবাসী হেঁটে যাতায়াতে নিরুৎসাহিত হয়। হাঁটাকে আমাদের সমাজে দরিদ্রদের যাতায়াত মাধ্যম বলে মনে করা হয়। এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য হেঁটে যাতায়াতের স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত উপকারিতা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
গাউস পিয়ারী বলেন, রাজধানীর ফুটপাতসমূহ শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ফুটপাতে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী, অবৈধ পার্কিং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাচলের একটি বড় অন্তরায়। যে সকল এলাকায় ফুটপাত আছে তাও নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল পথচারীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী নয়। সকল এলাকায় ফুটপাত থেকে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে প্রশস্ত ফুটপাত পথচারীদের জন্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।