Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

উদীয়মান অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে টাওয়ার কোম্পানি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২২, ৪:৪২ পিএম

এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় সমন্বিত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা প্রদানকারী কোম্পানি ইডটকো গ্রপ, ‘রোল্যান্ড বার্জার’ এর সঙ্গে যৌথভাবে, ‘টাওয়ারিং অ্যাবভ: বিল্ডিং টুমোরো’স ডিজিটাল ইনফ্রাস্টাকচার ইন এশিয়া’ শিরোনামে যৌথ গবেষণা প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, অবকাঠামো শেয়ারিং এর মাধ্যমে টাওয়ার কোম্পানিগুলো মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর সমূহের (এমএনও) সর্বোচ্চ ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবে এবং আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী ৫জি সংযোগ সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ভোক্তাদের ধারাবাহিক সঞ্চয় হবে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া, এই গবেষণায় আরো দেখা হয়, টাওয়ারকো-গুলো ২০২৫ সালের মধ্যে ১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনার মাধ্যমে টেকসই ডিজিটাল সংযোগ অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারে।

ইডটকো, রোল্যান্ড বার্জার ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) যৌথ প্যানেল আলোচনায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়- এতে উঠে আসে এশিয়ার ৯টি গুরুত্বপূর্ণ দেশ- মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ফিলিপাইন্স, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া এবং শ্রীলঙ্কায় টাওয়ারকোর বিশেষ ভূমিকা ও সম্ভাব্য প্রভাবের বিষয়গুলো। প্রতিবেদনে আরো প্রাধান্য পায়, ইন্ডাস্ট্রির জন্য বর্ধিত সামাজিক-অর্থনৈতিক সুবিধার বিষয়, সমাজ ও সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি নীতি ও আইন সংস্কারের সুপারিশ সমূহ-যেগুলো আরো সম্ভাবনা তৈরি করবে; এছাড়া, টাওয়ার কোম্পানিগুলো যেভাবে টেকসই ডিজিটাল সংযোগের প্রসারে ভূমিকা রাখছে-তাও গবেষণায় উঠে আসে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ৫জি ইন্ডাস্ট্রি রূপান্তরের ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে এবং ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তোলায় বিশেষ ভূমিকা পালন করছে ডিজিটাল অবকাঠামো। টাওয়ারকো-গুলো ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাতা হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের ভূমিকার রূপান্তর ঘটাচ্ছে ও ইন্ডাস্ট্রির স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে সক্রিয় অবকাঠামো শেয়ারের আরো সুযোগ তৈরি হয়। কোভিড-১৯ মহামারির পর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায়ের ক্ষেত্রে এই সেবা সমূহ শুধু বিশেষ তাৎপর্য-ই বহন করে না বরং ৫জি যুগের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণও- এ সময়ে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে এবং এমএনও’দের বিনিয়োগ ও অবকাঠামো স্থাপনের চ্যালেঞ্জ পেছনে ফেলে নতুন সম্ভাবনার সুযোগও তৈরি করছে।

ইডটকো গ্রুপের ডিরেক্টর অব গ্রুপ স্ট্র্যাটেজি গায়ান কোরালেজ বলেন, “যখন এমএনওগুলো দ্রুততার সঙ্গে এশিয়ার মতো ‘লো এভারেজ রেভিনিউ পার ইউজার (এআরপিইউ)’ মার্কেটে নিজেদের নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ঘটিয়ে যাচ্ছে, তারা ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা মেটাতে ও প্রতি জিবি ইন্টারনেটের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে এবং সম্মুখীন হচ্ছে নিয়ন্ত্রকদের নীতি-নির্ধারণীর মতো বেশ কিছু বিষয়। আরো বড় পরিসরে অবকাঠামো শেয়ারিং এর মাধ্যমেই কেবল এ ধরনের সমস্যা টেকসইভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”

এই রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়া ইন্টারনেট ব্যবহারে জনপ্রতি ‘গড় ডেটা’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্রুত বর্ধিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে, তবে এমএনওগুলো এই চাহিদার সক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না। ফলে এআরপিইউ’র ধারাবাহিক অবনমন ঘটছে এবং এমএনওগুলোর জন্য মুনাফা অর্জন কঠিন হচ্ছে।

গায়ান কোরালেজ আরো বলেন, “এমএনও’র বিনিয়োগ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে, সমাধান নির্ভর সফটওয়্যার কেন্দ্রিক নেটওয়ার্কিং এবং আগামী-প্রজন্মের টাওয়ারকোগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব সেবা দ্রুততর করবে, পরিধি বাড়াবে ও খরচ কমাবে। উন্নত দেশগুলোতে ও তাদের বাজারে এ ধরনের অংশীদারিত্ব দ্রুত বাড়ছে এবং ব্যবসা, সমাজ ও পরিবেশে টাওয়ারকোর বর্ধিত ভূমিকা আরো স্পষ্ট করছে।”

প্রবৃদ্ধির বৃদ্ধি ও একাধিক সামাজিক-অর্থনৈতিক সুবিধা পেতে প্রয়োজন আইন-কানুনের সংস্কার

এই গবেষণায় আরো জানা গেছে শীর্ষস্থানীয় টাওয়ার কোম্পানিগুলো ভ্যালু চেইনের অবদান রাখার মাধ্যমে এমএনও-গুলোকে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেমন উদহারণ স্বরূপ বলা যেতে পারে অপেনআরএএন, নেটওয়ার্ক-এজ-এ সার্ভিস সল্যুশন এবং এমএনওদের ব্যয়-ও-নেটওয়ার্ক সক্ষমতার জন্য ‘এজ কম্পিউটিং’ সহ অভিনব ৫জি-সক্ষমতাযুক্ত সল্যুশন প্রদানের মতো বিষয়গুলো।

এসইএ, রোল্যান্ড বার্জার এর ম্যানেজিং পার্টনার ডেমিয়েন ডুজাকিয়ার বলেন, “বর্তমান সময়ে টেলিযোগাযোগ ইন্ডাস্ট্রির গতিবিধির কথা বলতে গেলে, টাওয়ারকোকে অবশ্যই সক্রিয় ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে, যাতে ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী পরিধি, কার্যক্ষমতা ও সহজগম্যতা বাড়ানো যায়। সঠিক রেগুলেটরি পরিবেশের জন্য ও প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে ৫টি নীতিগত সংস্কার প্রয়োজন:- শক্তিশালী ডিজিটাল অবকাঠামোর প্রতিশ্রুতি, অনুকূল লাইসেন্সিং এবং মালিকানা ব্যবস্থা, ইনফ্রা শেয়ারিং এর ওপর গুরুত্বারোপ, সুবিন্যস্ত প্রক্রিয়া, সংশ্লিষ্ট সেবায় সক্ষমতা।

গবেষণায় আরো উঠে এসেছে, পরবর্তী স্বাভাবিকতায় টাওয়ারকো ইন্ডাস্ট্রির গুরুত্ব কাজে লাগাতে প্রয়োজন নিয়মের সংস্কার ও বিভিন্ন নীতির পরিবর্তন। এটির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, প্রণোদনা প্রদান, সহায়ক নিয়ন্ত্রণ কাঠামো প্রতিষ্ঠা, যাতে টাওয়ারকো কোম্পানিগুলো আরো অভিনব উদ্ভাবনী অংশীদারিত্ব ও সেবা দিতে পারে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ