Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বছরে দুই-তিনটি গাছ লাগিয়ে দায় সারেন পরিবেশমন্ত্রী !

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২২, ৯:২৫ পিএম

পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, পরিবেশমন্ত্রী বছরে দুই-তিনটি গাছ লাগিয়ে তার দায় সারেন। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২ উপলক্ষে গ্রিন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট আয়োজিত প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, পরিবেশ রক্ষা না করে পরিবেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে মানুষ যদি মনে করে আমরাই পৃথিবীতে বাস করব, তবে মানুষ একসময় ডায়নোসরের মতো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। নদী, মাটি, বায়ু, শব্দসহ সব ক্ষেত্রেই পরিবেশ দুষিত হচ্ছে, আমাদের দেশে এ পরিবেশ রক্ষায় একটি মন্ত্রণালয়ও আছে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কোনো কর্মকাণ্ড আমাদের চোখে পড়েনি।

তিনি বলেন, শিল্প কারখানার বর্জ্য, ইটভাটার মাধ্যমে দূষণ হচ্ছে অহরহ। আমাদের দেশে ভেজালবিরোধী অভিযান করছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। অথচ নিষিদ্ধ পলিথিন গ্রাম-গঞ্জ-শহরে মানুষের হাতে হাতে, কিন্তু কোনো অভিযান নেই। শিল্প কারখানা ও ইটভাটা প্রতিনিয়ত পরিবেশের ক্ষতি করছে, কিন্তু আমাদের পরিবেশমন্ত্রী, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশের ওপর চ্যাম্পিয়নস অব আর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। আমাদের পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তর কী করছে? বছরে দুই-তিনটি গাছ লাগিয়ে দায় সারেন পরিবেশমন্ত্রী। পরিবেশ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি অঞ্চলের গ্রিন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্টের সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিবেশ রক্ষায় যুদ্ধে নামতে হবে। আলোচনা সভায় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন বলেন, নিজের বাড়ি, নিজের আঙিনা ও আশপাশের গাছগুলোর যেন যত্ন করি। এ গাছগুলো যেন কেটে না ফেলি। একটি গাছ কাটার আগে ভাবতে হবে, কয়টা গাছ লাগানো যায়। তাহলেই আমাদের পরিবেশ রক্ষা হবে। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বলেন, গাছের প্রতি মানুষের প্রেম যত বৃদ্ধি পাবে আমরা তত ভালো থাকবো। আমরাই পারি প্রকৃতির সঙ্গে ঐকতান করতে, আমরাই পারি প্রকৃতির ঐক্যতানে টেকসই জীবন গড়তে, এর কোনো বিকল্প নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক মল্লিক আকরাম বলেন, আমাদের এ বাংলাদেশে পরিবেশের ধ্বংসাত্মক অবস্থা চলতে থাকলে মানুষও একদিন বিলীন হয়ে যাবে। মানুষ নিজে অন্য জীবের ওপর নির্যাতন করে। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ নিজেই একদিন হারিয়ে যাবে। আমাদের নিজেদের স্বার্থে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক একিউএম মাহবুব। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক আহম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সামশাদ নওরীণ, পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী ফারজানা মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক। পরিবেশ নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কাজ করা ও গাছ লাগানোর স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে সংগঠনের পাঁচ জেলা কমিটি। বিজয়ী প্রত্যেক ইউনিটকে একটি গাছ, ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক ও গ্রিন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্টের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ বিশ্যবিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাহী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ