Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রেণীকক্ষ ও সিট সংকটে রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

রাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০২২, ৬:৪৯ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ১২টি বিভাগের একটি ইসলামিক স্টাডিজ। এতে প্রথম বর্ষ থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত কোটাসহ প্রায় ৬০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এতো সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলেও ক্লাস করার মতো নেই পর্যাপ্ত আসন ব্যবস্থা ও শ্রেণিকক্ষ। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভাগটিতে প্রতি বর্ষে ১১০ থেকে ১২০ জন করে শিক্ষার্থী আছে। এর বিপরীতে শ্রেণীকক্ষ আছে মাত্র তিনটি। যার একটি মাঝারি ও দুটি ছোট কক্ষ। মাঝারি কক্ষে ২৬ টি সিট বেঞ্চ থাকলেও ছোট কক্ষ গুলোতে আছে ছোট-বড় মিলে ২০ ও ২৪ টি করে সিট বেঞ্চ। হিসাব মতে বড় কক্ষে ৭৮ ও ছোট কক্ষ গুলাতে আছে ৬০ ও ৭২ জন করে আসন ক্যাপাসিটি। এর বিপরীতে ক্লাস করছে ১১০ থেকে ১২০ জন করে শিক্ষার্থী। যেখানে প্রতি বেঞ্চে ৩ জন করে বসার কথা সেখানে ৫ জন গাদাগাদি করে বসলেও ১৫-২০ জনকে দাড়িয়েই করতে হয় ক্লাস। অধিকাংশ বিভাগের তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম ও ছোট থাকায় গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। শ্রেণিকক্ষ সংকট থাকায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে ক্লাস করতে হয় তাদের। অনেক সময় ক্লাস না করেও ফিরতে হয় অনেক শিক্ষার্থীকে।
এদিকে শহীদুল্লাহ কলাভবনের ৩০৩ নম্বর রুমে শেয়ার করে সপ্তাহের দুইদিনে ১৩টি ক্লাস নিতো বিভাগটি। বর্তমানে আরবি বিভাগ রুমটি তাদের দখলে নিয়ে সেমিনার লাইব্রেরি বানিয়েছে। অথচ ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতে বই আছে ৬৭১৪ টি। অপরদিকে আরবি বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতে বই আছে ১৮০০ টি। এত কম সংক্ষক বই নিয়েও ক্লাস রুম দখলে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এবিষয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, পাঁচটি ব্যাচের জন্য আমাদের মোট রুম বরাদ্দ আছে ৩টি। ক্লাস করতে গিয়ে সিট না পেয়ে প্রায় দিনই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। প্রতি বর্ষে প্রায় ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তীব্র গরমের মধ্যে ছোট একটা রুমে একজন আরেকজনের সাথে ঘেঁষে ক্লাস করতে হয়। এমন পরিবেশে আমরা ক্লাসে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছি না। প্রশাসন আমাদের শ্রেণীকক্ষের ব্যবস্থা করে না দিলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন হোসেন বুলেট বলেন, আরবি বিভাগের সেমিনার কক্ষ থাকার পরেও একটি বড় রুম দখল করে সেমিনার কক্ষ বানিয়েছে। তাদের চেয়ে আমাদের সেমিনারের বই সংখ্যা অনেক বেশি। যেখানে আমরা ক্লাস করার জন্য শ্রেণীকক্ষ সংকটে ভুগতেছি তারপরেও এমন সিদ্ধান্ত কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিভাগে শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। সকল শিক্ষার্থী ধরবে এমন বড় রুম আমাদের একটিও নাই। আমরা শ্রেণিকক্ষ শেয়ার করে ক্লাস করাচ্ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩০৩ নম্বর রুম আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ ও ভাষা বিভাগকে শেয়ারে ক্লাস নেওয়ার জন্য বরাদ্দ দিয়েছিল। সেই কক্ষটিও আরবি বিভাগ দখল করে নিয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে রুম দখলের কোন নির্দেশনা তাদের নেই। এদিকে সংস্কৃত বিভাগও নতুন একটি রুম বরাদ্দ পেয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে সংকটের কথা জানিয়েছি অচিরেই তাঁরা এ সংকট সমাধান করবে বলে আমি আশাবাদী।

শ্রেণিকক্ষ সংকটের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে আমি কাজ করছি। তারাও আমাদের শিক্ষার্থী। আমি চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে নিজ ক্লাসরুমে ক্লাস করুক। তাদের ভোগান্তির এবিষয়টি নিয়ে আমরা কিছুদিনের মধ্যেই একটি মিটিং করব। সেখানে কোন কোন বিভাগের শ্রেণীকক্ষ সংকট আছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। অনেক বিভাগের শ্রেণীকক্ষ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। এসব বিষয়ে আলোচনা করে আমরা শ্রেণীকক্ষ সংকটের বিষয়টি সমাধান করব।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ