Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিআইডির গাড়িতেই ডাকাতি করতেন সাবেক এসআই

গড়ে তোলা ডাকাতদলে ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২২, ১২:০১ এএম

পুলিশের সাবেক এসআই আকসাদুদ জামানের নেতৃত্বে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় সংগঠিত হয়েছে একাধিক ডাকাতি। সিআইডির সাবেক এই এসআই গড়ে তুলেছিলেন একটি ডাকাতদল। কর্তৃপক্ষের অগোচরে খোদ সিআইডির গাড়িই ডাকাতিতে ব্যবহার করতেন আকসাদুদ। ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর বিমানবন্দর সড়কের কাওলায় সংগঠিত একটি ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার আদালতে অভিযোগ পত্রটি দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যেখানে আকসাদুদের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই ডাকাত দলের সঙ্গে নয় জনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ডিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডিবির একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, এসআই আকসাদুদ বাদে অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অন্যান্য আসামিরা হলেন-মোশাররফ হোসেন, হাসান রাজা, সেলিম মোল্লা, রিপন মোড়ল, আমির হোসেন তালুকদার, রিজু মিয়া শিকদার, মনির হোসেন ও মিলন মিয়া। এদের মধ্যে মনির ও মিলন পলাতক রয়েছেন। আকসাদুদসহ সাতজন গ্রেফতার হলেও সম্প্রতি কারাগার থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন।
এদের মধ্যে হাসান রাজা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। হাসান রাজার বিরুদ্ধে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে তিনটি এবং সেলিম মোল্লার বিরুদ্ধে চারটি ডাকাতির মামলা রয়েছে। আরেক সহযোগী রিপন মোড়ল মাদারীপুরে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর কাওলায় দুবাই প্রবাসী রোমান মিয়া ও তার ফুফাতো ভাই মনির হোসেনকে ডিবি পরিচয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়। পরে তাদের মারধর করে সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার, দুই হাজার দিরহাম, মুঠোফোন, লাগেজসহ মালামাল ডাকাতি করে তাদের পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয়া হয়। ওই ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করে ডিবি। এদের মধ্যে হাসান রাজার আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আকসাদুদের নাম আসে।
গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আকসাদুদের স্ত্রীর সঙ্গে এক ব্যক্তির ১ কোটি ২৮ লাখ ও ১৪ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অডিও ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন রাতেই রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে আকসাদুদকে গ্রেফতার করে ডিবি। ডাকাতির ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ১৮ আগস্ট আকসাদুদকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিআইডি। পরে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, সাবেক এসআই আকসাদুদ ডাকাতির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে ডিএমপিতে কর্মরত থাকাকালে মতিঝিল অঞ্চলের একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে মাথায় অস্ত্র ঠেকান। এছাড়া কর্তব্যরত অবস্থায় আরেকবার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন তিনি। এসব অভিযোগে দুইবার বিভাগীয় শাস্তিও ভোগ করেন আকসাদুদ।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, এসআই আকসাদুদ জামান ডাকাতিতে ব্যবহার করতেন সিআইডির গাড়ি। চাকরিচ্যুত অন্য একটি বাহিনীর সদস্যসহ নয়জনকে নিয়ে তিনি ডাকাতের দল গড়ে তুলেছিলেন। এসআই আকসাদুদের বিরুদ্ধে হওয়া ডাকাতির মামলার অভিযোগপত্রে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিআইডি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ