গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে মনের মতো সাজিয়েও ভরসা পাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই ছাত্রলীগকে তিনি সাজিয়েছেন বিরোধী দল বিনাশে অস্ত্র হিসেবে। নানা কারণে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে মানুষ। তাই জনরোষ থেকে বাঁচতে সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগকে সশস্ত্র অবস্থায় মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। তাদের হামলায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টও রক্তাক্ত হয়েছে। এই হামলা থেকে রক্ষা পায়নি সাধারণ আইনজীবীরাও। তবে ছাত্রলীগকে দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে শেখ হাসিনার মসনদ টেকানো যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলাসহ সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগের সশস্ত্র সহিংস আক্রমণে ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুরুতর জখম হয়। তাদের রক্ত শুকাতে না শুকাতেই বৃহস্পতিবার আবারো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদলের মিছিলে আক্রমণ চালায়। ছাত্রদল নেতারা হাইকোর্ট চত্তরে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানেও ছাত্রদল ও আইনজীবীদের ওপর রক্তাক্ত হামলা চালায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাদের আক্রমণে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উঁচিয়ে ছাত্রদলের মিছিলে গুলিবর্ষণ করছে। বেশ কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠা স্টাইলে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে তৈরি করেছেন গণতন্ত্র ও বিএনপি’র বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধে লিপ্ত থাকার জন্য। অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য জনগণকে শেখ হাসিনার প্রয়োজন নেই। তাঁর খুবই প্রয়োজন সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। আর এই প্রয়োজন মেটাতেই ছাত্রলীগ-যুবলীগকে এখন অস্ত্র দিয়ে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর এই খুনী বাহিনী বাংলাদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে শ্রমিক বিশ্বজিৎ, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমর ফারুক, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যুবায়েরসহ বিরোধী ও নিজ দলের অসংখ্য ছাত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত ১৩ বছরে অর্ধ শতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। ময়মনসিংহের কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গোলাগুলিতে নিহত হয় শিশু রাব্বী। এরা শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রী-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের জীবনই কেড়ে নেয়নি, সমাজের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষকে নানাভাবে হয়রানী, হুমকি ও ভয়ভীতির শিকারে পরিণত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ছাত্রলীগের হামলায় আহত ৪৭ জন নেতাকর্মীর তালিকা তুলে ধরেন এবং হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানান। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করেন। এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবে অপর এক আলোচনা সভায় রিজভী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বলেন, বিরোধী দলের রক্ত শোষণ করে, রক্তপাত ঘটিয়ে সাধের সিংহাসনে আর টিকে থাকতে পারবেন না। আপনাদের দিন শেষের ঘণ্টা বেজে গেছে। সেই ঘণ্টার ধ্বনি আপনি শুনতে না পেলেও এদেশের জনগণ ঠিকই বাজিয়ে আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।