মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতজুড়ে বাতিল নোট বদলাতে গিয়ে মানুষকে যে পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয় তা লাঘব করতে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। গত শুক্রবার সুপ্রিমকোর্ট সতর্ক করে বলেছে, দ্রুত ব্যবস্থা নিতে না পারলে দেশে দাঙ্গা শুরু হয়ে যাবে। রাজনৈতিক মহলে নিজ দলের নেতার এমন বক্তব্যে বিব্রত বিজেপি সরকার ভারতের শীর্ষ আদালতেও কঠোর সমালোচনার শিকার হয়েছে। দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, এই মুহূর্তে নোট বাতিলের ফলে দেশের পরিস্থিতি সংকটজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। শীর্ষ আদালত আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই প্রকাশ্যে দাঙ্গা লেগে যাবে। ভারতের সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর শুক্রবার এক জনস্বার্থ মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন, হঠাৎ করে ৫শ’ ও এক হাজার রুপির নোট বাতিল করে দেশের আমজনতাকে মারাত্মক সমস্যায় ফেলে দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আদালত জানতে চেয়েছে, ৫শ’ ও হাজার রুপির নোট বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ১০০ টাকার নোট বাজার থেকে কোথায় গেল?
এদিকে, ভারতের বিজেপি বিধানসভা সদস্য ভবানী সিং রাজাওয়াত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে ৫শ’ ও এক হাজার রুপির নোট বাতিলের মতো নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তা আগে থেকেই জানতেন দুই বিশিষ্ট শিল্পপতি অনিল আম্বানি এবং গৌতম আদানি। ভবানী সিং রাজাওয়াত’র অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এই বেফাঁস মন্তব্য করতে শোনা গেছে তাকে। ভিডিওটি ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতের রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীরা তীব্র সমালোচনার তীর ছুড়ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে। তবে নিজ দলের এই বিধানসভা সদস্যের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করছে না বিজেপি। বিজেপি বিধানসভা সদস্য ভবানী সিং রাজাওয়াতের বেফাঁস মন্তব্য করা ভিডিওটি গত শুক্রবার ভারতের একাধিক সংবাদ চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রাজাওয়াত হাত তুলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছেন, নোট বাতিলের আগে সরকারের পক্ষ থেকে আদানি ও আম্বানিকে ইঙ্গিত দিয়ে দেয়া হয়েছিল এরকমই একটা কড়া পদক্ষেপ সরকার নিতে চলেছে। ফলে এই দু’জন আগে থেকেই সব জানতেন। তাই তারা তড়িঘড়ি নিজেদের কালো টাকা ঠিক জায়গায় জমা দিয়ে ও বিনিয়োগ করে সাদা করে নিয়েছেন। উল্লেখ্য, অনিল আম্বানি এবং গৌতম আদানি ভারতের দুজন বিশিষ্ট শিল্পপতি। তাদের সঙ্গে মোদির ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে ভারতের রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে। এখন এই গুঞ্জনের বাতাসে বের হাওয়া দিল প্রধানমন্ত্রী মোদির নিজ দল বিজেপির বিধানসভা সদস্যের এই বেফাঁস মন্তব্য। এমন বেফাঁস ও দলবিরোধী মন্তব্য করার জন্য বিধায়ক রাজাওয়াতের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে বিজেপি। দলীয় কিছু সূত্র এমনটাই জানিয়েছে। অবশ্য তার বক্তব্য দেশজুড়ে ঝড় তুলে দেয়ার পর নিজ অবস্থান থেকে পিছু হটে রাজাওয়াত দাবি করেন, তিনি এমন ভুলভাল কথা বলেনইনি। তার মন্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে। যদিও ভিডিওটিতে তাকেই কথা বলতে দেখা গেছে এবং তার পরিচিত মহল নিশ্চিত করেছে ভিডিওতে যে কণ্ঠ শোনা গেছে সেটি রাজাওয়াতেরই। এর পাশাপাশি দেশটির পার্লামেন্টেও নোট বাতিল ইস্যুকে কেন্দ্র করে তুমুল সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এদিন দফায় দফায় রাজ্যসভা ও লোকসভার অধিবেশন মুলতবি করা হয়। গত শুক্রবার সকালে পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরুর আগেই সংসদে গান্ধী মূর্তির সামনে থালা-হাঁড়ি নিয়ে অভিনব উপায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা। নোট বদলের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র প্রত্যাহার করুক, এই দাবিতে পার্লামেন্ট অচল করে দেয় কংগ্রেস, তৃণমূল, বিএসপিসহ বিরোধী দলগুলো। এদিন লোকসভায় বিরোধীরা ৫৬ ধারায় মুলতবির প্রস্তাব এনে আলোচনা হোক বলে দাবি করে। কিন্তু শাসক দল বিজেপির এমপিরা ১৯৩ ধারায় আলোচনা করতে চাইছিলেন। এই ধারায় শুধু আলোচনা করা যায়। অন্যদিকে ৫৬ ধারায় ভোটাভুটির সুযোগ থাকে। এর অর্থ ভোটাভুটির মাধ্যমে বিরোধীরা বেশি ভোট পেলে সরকারকে নোট বদলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হতে পারে। কিন্তু সেপথে যেতে রাজি নয় বিজেপি। আর তাই আলোচনার দাবিতে লোকসভার ওয়েলে নেমে তৃণমূল, কংগ্রেস, এআইএডিএমকে, সিপিএম বিক্ষোভ দেখায়। লোকসভায় কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যসভায় আলোচনা হলে লোকসভায় কেন আলোচনা হবে না? তৃণমূলও একই দাবিতে অনড় ছিল। এদিকে শুক্রবারও নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মোদি সরকারের সমালোচনা অব্যাহত রাখেন তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি এদিন বলেন, দেশের এতবড় সর্বনাশ আগে কখনো হয়নি। জরুরি অবস্থার চেয়েও ভয়ঙ্কর অবস্থা চলছে। মমতা এদিন দাবি জানান, পর্যাপ্ত নোট যতক্ষণ না আসছে পুরনো ও নতুন ৫০০ টাকার নোট চালু রাখা হোক। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত দেশকে ১০০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এনডিটিভি, টাইমস অব ইনডিয়া, এবিপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।