Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঋণ ও জনগণের কত টাকা সরকার নিয়েছে

পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০২২, ১২:০৫ এএম

পদ্মা সেতু নির্মাণে জনগণের কাছ থেকে কত টাকা সরকার নিয়েছে, সেখান থেকে কত টাকা ব্যয় করা হয়েছে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে কত টাকা ঋণ পরিশোধ করতে হবে তার হিসেব চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এখানে যে দুর্নীতি করেছে, তা সমস্ত দুর্নীতির মাত্রা ছেড়ে গেছে। জনগণ জানতে চায় যে, পদ্মা সেতুর অর্থের জন্য জনগণের কাছ থেকে কত টাকা কেটেছেন? তাতে কত টাকা আপনারা এই পদ্মা সেতুতে ব্যয় করেছেন, আর কত টাকা দুর্নীতি করে পকেটে ভরেছেন? জনগণ জানতে চায় যে- পদ্মা সেতু নির্মাণে কত টাকা নিয়েছেন, এদেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে কত টাকা ঋণ শোধ করার জন্য গুনতে হবে?

গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কটূক্তির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের টাকায় নয়, জনগণের টাকায় নির্মিত হচ্ছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মির্জা ফকরুল বলেন, এই সেতু আওয়ামী লীগের অর্থে নয়, বরং জনগণের অর্থেই নির্মিত হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনা- তিনি পদ্মা সেতু করার বড়াই করছেন। আমরা বলতে চাই, পদ্মা সেতু আপনার একার না, আওয়ামী লীগের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। জনগণের পকেটের টাকা থেকে যে ট্যাক্স কেটে নিয়েছেন, সেই জনগণের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার এই উক্তির “তাকে (বেগম খালেদা জিয়া) টুস করে পদ্মা সেতুর উপর থেকে ফেলে দেওয়ার” ধিক্কার জানাই, নিন্দা জানাই, প্রতিবাদ জানাই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আপনারা হত্যার হুমকি দেন। আমরা ভাবতেও পারি না যে, একটি দেশের, যেমন করে হোক, জোর করে হোক ক্ষমতা দখল করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন- তার মুখ থেকে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন, এই ধরনের সন্ত্রাসী বক্তব্য কিভাবে আসে? কোনো সভ্য সমাজে, গণতান্ত্রিক সমাজে এই ভাষা ব্যবহার করার চিন্তাই করা যায় না।

সরকারের পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, এই বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চান জনগণের কাছে। অন্যথায় জনগণ আপনাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেবে না। জনগণ টেনে হিঁচড়ে নামাবে আপনাকে ক্ষমতার তখতে-তাউস থেকে।

ক্ষমতার দিন শেষ হয়ে আসছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) এখন নার্ভাস হয়ে গেছেন। তিনি দেখতে পারছেন যে, তার ক্ষমতার দিন শেষ, তিনি দেখতে পাচ্ছেন যে- এখন আর তিনি সামনে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। তার ক্ষমতার তখতে-তাউস টলমল হয়েছে গেছে।

সরকারের উন্নয়ন তত্ত্বের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ উন্নয়ন উন্নয়ন করে চিৎকার করে। কীসের উন্নয়ন, কার উন্নয়ন করেছেন? উন্নয়ন করেছেন পি কে হালদারের, শিক্ষামন্ত্রীর ভাইয়ের, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের (সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী) ভাইয়ের এবং আপনাদের নিজেদের প্রত্যেকের, তারা লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছেন।

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের কৃষক-শ্রমিক, যারা দিন আনে দিন খায় তারা আজকে হিমশিম খাচ্ছেন না শুধু, তাদের আজকে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তারা জীবন-যাপন করতে পারছে না। আপনাদের (সরকার) কোনো অসুবিধা হয় না। কারণ আপনি (শেখ হাসিনা) তো আজকে একটা দুর্গের মধ্যে নিজেকে বন্দি করে রেখেছেন, নিজেই করেছেন। নিজেই বলেছেন সেদিন, আমি তো আমার ঘরেই বন্দি। আপনি স্বেচ্ছায় বন্দি হয়েছেন। কারণ আপনি জনগণকে ভয় পান। তাই জনগণের সামনে আপনি আসেন না।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
বক্তৃব্য রাখেন- মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলী, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শিরিন সুলতানা, হেলেন জেরিন খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, ইশরাক হোসেন, সুলতান, সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর,হাসান জাফির তুহিন, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ইয়াসীন আলী, ওয়াহিদ বিন ইতিয়াজ বকুল, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, নজরুল ইসলাম তালুকদার, নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, রাকিবুল ইসলাম রাকিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা সেতু

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ