গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত পিএইচডি ও এমফিল গবেষণা নিয়ে প্রথম পূর্ণাঙ্গ বিবরণী গ্রন্থ "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ শতবর্ষের গবেষণা পিএইচ. ডি. ও এম. ফিল" সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
অনবদ্য এই গ্রন্থটি রচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর. ড. মো. আবুল কালাম সরকার।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার লেকচার থিয়েটারে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল বাছির। ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. আহমেদ আব্দুল্লাহ জামালের সভাপতিত্বে এতে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আহমদ শরীফ চেয়ার অধ্যাপক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর আবুল কাসেম ফজলুল হক ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ শতবর্ষের গবেষণা পিএইচ. ডি. ও এম. ফিল শিরোনামে রচিত গ্রন্থটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত গত এক শতাব্দীর পিএইচ. ডি. ও এম. ফিল. ডিগ্রিপ্রাপ্ত গবেষক, গবেষণা শিরোনাম, তত্ত্বাবধায়ক ও ডিগ্রিপ্রাপ্তির তারিখসহ বিভাগভিত্তিক একটি পূর্ণাঙ্গ বিবরণ সন্নিবেশিত হয়েছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ এবং এর অনুষদ, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটসমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উপস্থাপন করা হয়েছে এই গ্রন্থটিতে। আলোচ্য গ্রন্থটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণার বিষয় নির্বাচনে নানাভাবে সহায়তা করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্রন্থটিতে লেখক ড. সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টিলগ্ন থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন অবধি মোট পিএইচ. ডি ও এম. ফিল ছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রাপ্ত মোট গবেষকের সংখ্যা উল্লেখ করেছেন। জানতে চাইলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট হতে মোট ১ হাজার ৮১২ জন পিএইচ. ডি. ডিগ্রি, ২৭ জন ডি. এসসি. ডিগ্রি, ৮ জন ডি. এড. ডিগ্রি, ১২ জন ডি. বি. এ. ডিগ্রি ও ১ হাজার ৬৭০ জন এম. ফিল. ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী প্রজন্ম গবেষণা করার ক্ষেত্রে বিষয়ে নির্ধারণে ঝামেলায় পরতে হবে না। কারণ এই গ্রন্থে রয়েছে শত শত গবেষণার বিষয়বস্তু। এছাড়াও এই গ্রন্থে রয়েছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে বিষয়ভিত্তিক গবেষণার বর্ণনা। যেটা থেকে যে কেউ সহজেই ডাটা সংগ্রহ করতে পারবে যে কোন বিষয়ের উপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কতটি গবেষণাকর্ম পরিচালিত হয়েছে এবং সেটির গবেষক কে ছিলেন।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গ্রন্থটিকে শতবর্ষী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনবদ্য সৃষ্টি বলে উল্লেখ করেন আলোচকবৃন্দ। তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বলতে গেলে আমরা শুধু রাজনৈতিক ইতিহাসটুকুই বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। যেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা শুধু রাজনীতিই করেন। কিন্তু এর বাইরে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা শত শত গবেষণাও করেছে সেই ইতিহাস আমরা বলি না। এই গ্রন্থটি আমাদের মনে করিয়ে দিবে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস শুধু রাজনীতির ইতিহাস নয়, গবেষণার ইতিহাসও।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা জুওলজির ছাত্ররা সবকিছুকে ম্যাপিং করি। পৃথিবীর অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ এসব বিবেচনা করে একটা ম্যাপ (মানচিত্র) রচনা করি। এই বইটির মধ্যে মুলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার একটা ম্যাপিং তিনি ( লেখক ) করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে বিভাগ এবং অনুষদগুলোকে তিনি যেভাবে ম্যাপিং করেছেন তার মাধ্যমে কোন বিভাগের কি অবদান, কোন অনুষদের কি অবদান সেসব আমরা দেখতে পাই । তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই জ্ঞান উৎপন্ন করে এসেছে। তবে জ্ঞানের প্রয়োগের কাজটি কতটুকু করতে পেরেছে সেটি একটি আলোচনার বিষয়। আমাদের এই অঞ্চলের রাজনৈতিক পরিমন্ডলকে যদি আমরা বিবেচনা করি, এ অঞ্চলের রাজনৈতিক উত্থান পতন যেভাবে হয়েছে, সেখানে দেখা যায় যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করেন তারা যেভাবে চেয়েছে সেভাবে বিবিদ্যালয়গুলো গড়ে উঠেছে। যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বায়ত্বশাসিত ঘোষণা করেছেন, কিন্তু আমরা শিক্ষকরাই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্বাতন্ত্র্য বিভিন্ন সময়ে রক্ষা করতে পারি নি।
ড.সরকার ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সী ও উর্দু বিভাগ হতে ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে বিএ ( সম্মান ) পরীক্ষায় সম্মিলিতভাবে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পুরস্কৃত হন। ২০০০ সালে একই বিষয়ে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে একই বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১২ সালে ইরান সরকারের বৃত্তি নিয়ে ইমাম খোমেনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ফারসি ভাষায় উচ্চতর কোর্স সম্পন্ন করেন । ড . সরকার ইতোমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত ৪৯ টি আন্তর্জাতিক সেমিনারে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে পণ্ডিত মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন । দেশী - বিদেশী জার্নালে এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধের সংখ্যা ৫০ টি ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।