Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণকমিশন নেতাদের সম্পদের উৎস খুঁজতে দুদকে স্মারকলিপি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ মে, ২০২২, ২:২৬ পিএম

১৯৯২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব ও তহবিলের উৎসের খোঁজ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামি কালচারাল ফোরাম। একই সঙ্গে কমিটির নেতাদের নামে থাকা সম্পদের উৎস, আয় ব্যয়ের হিসাবের অনুসন্ধানের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গঠিত গণকমিশন’র শ্বেতপত্রগুলোর আর্থিক জোগান, আয় ব্যয় সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার (২৩ মে) দুপুরে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন ফোরামের নেতারা। এ সময় চেয়রাম্যানের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন দুদকের সচিব মাহবুব হোসেন।

স্মারকলিপি প্রদানে নেতৃত্ব দিয়েছেন ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা গাজীপুর দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী।


স্মারকলিপিতে বলা হয়, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক) এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের নিজস্ব উদ্যোগে গঠিত বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গঠিত কথিত ‘গণকমিশন’ একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। বিগত ১২ মে শ্বেতপত্রের একটি কপি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার কাছেও জমা দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রকাশিত শ্বেতপত্র নিয়ে দেশে তুমুল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় শনিবার (২১ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমে বলেছেন, এই গণকমিশনের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

কিন্তু আইনি ভিত্তি না থাকার পরেও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ১৯৯২ সাল থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। অতীতে একাধিকবার মনগড়া গণকমিশন গঠন করে গবেষণার নামে উসকানিমূলক তথ্য দিয়ে দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার হীন চেষ্টা করেছে। অতীতে তাদের এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কাজকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তবুও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে ‘গণকমিশন’ শীর্ষক আরেকটি কমিশন গঠন করে। এই কমিশন ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। এ কাজে তাদের বিশাল অর্থ খরচ হয়েছে। আইনি ভিত্তিহীন এমন কাজে তাদের পানির মতো অর্থ খরচের বিষয়টি স্বাভাবিক বলে মনে হয় না।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গণকমিশনের আয়ের উৎস, অর্থের জোগানদাতা, আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আয়ের দৃশ্যমান উৎস না থাকার পরও গণকমিশনের নেতারা বিলাসী জীবন যাপন করেন। এর প্রেক্ষিতে বলা যায়, তারা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষের হয়ে কাজটি করেছে। তাই দুদকের প্রতি আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, গণকমিশন কাদের অর্থে পরিচালিত হয়, কারা কেমন সুবিধা ভোগ করেন, সেখানে সন্দেহজনক কোনো লেনদেন হয় কিনা তা খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণে উদ্যোগ নেবেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, একই সঙ্গে গণকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংসদের সদস্য রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু, মমতাজ লতিফ, শাহরিয়ার কবির, মুনতাসীর মামুন, জিয়াউল হাসান, কমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, কমিশনের সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কাজী মুকুল, সদস্য অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সাংবাদিক আবু সালেহ রনি, হাসান রফিক, সাংবাদিক সৈয়দ নূর-ই-আলম, শেখ আলী শাহনেওয়াজ, সমাজকর্মী মো. সাইফউদ্দিন রুবেল, তপন দাস, শিমন বাস্কে ও সাংবাদিক সাইফ রায়হানসহ গণকমিশন সচিবালয়ের সঙ্গে যুক্ত অন্যদের সম্পদের উৎস, ব্যাংক হিসাব, স্থাবর অস্থাবর সম্পদ সম্পর্কে অনুসন্ধানের নিমিত্তে ব্যবস্থাগ্রহণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

স্মারকলিপি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা কওমি মাদরাসা থেকে শিক্ষা নেন। সরকারি অনুদান না নিয়ে আমরা শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষিত জাতি গঠনে আমরা নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছি, অথচ আমাদের উৎসাহ না দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তারা এসব হীন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল ও সরকারের সঙ্গে সংঘাত ঘটাতে তারা এসব কর্মকাণ্ড করছে। আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করছে। তাদের অভিযোগ প্রতাহারের জন্য আমরা দুদককে আহ্বান জানিয়েছি। পাশাপাশি তাদের আয়-ব্যয় ও অর্থের উৎস খুঁজে বের করতে আমরা দুদককে অনুরোধ করেছি।

দুদক সচিবের বরাত দিয়ে ইসলামিক কালচারাল ফোরামের এই নেতা বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দুদক দেখবে।

 



 

Show all comments
  • jack ali ২৩ মে, ২০২২, ২:৩৪ পিএম says : 0
    ও আলেমগণ স্মারকলিপি দিয়ে কোন কাজ হবে না আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন করা যেভাবে নবী ইসলাম ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন আপনারা এখন মুসলিম জনগণের নিয়ে ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম করেন কমিশন হচ্ছে সরকারপ্রধানের একটা ভরসা আর এই শাখা এই জন্যই করা হয়েছে ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য আপনারা এটাই করছেন শিয়ালের কাছে মুরগী বিচার চাচ্ছেন
    Total Reply(0) Reply
  • Rahin ২৩ মে, ২০২২, ২:৩৯ পিএম says : 0
    যুগান্তকারী উদ্যোগ। অবশ্যই এসব বিসৃংখলাকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ