Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জবাবটা তামীমকে দিয়েছেন অমি

ভাগ্যের উপর নিজেকে ছেড়ে দিয়েছেন শহীদ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম থেকে : জয়ের খুব কাছে থেকে দ্বিতীয় এবং চতুর্থ ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ায় টীমমেট ব্যাটসম্যানদের এক হাত নিয়েছিলেন চিটাগাং ভাইকিংস অধিনায়ক তামীম ইকবাল। চট্টগ্রাম পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে হেরে কথার মারপ্যাঁচে অধিনায়ককে জবাবটা দিয়েছেন চিটাগাং ভাইকিংস ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমিÑ ‘আমাদের সমস্যা ব্যাটিংয়ে। এই উইকেটে ১৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করা সম্ভব ছিল। প্রথম ৬ ওভারের আমরা পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারিনি। পাওয়ার প্লে’র ভেতরে একটা উইকেট হারিয়েছি। পাওয়ার প্লে’র পরের ওভারে আরেকটি উইকেট হারিয়েছি। আজ আমরা একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে খেলেছি, তাই এটা বেশি হয়ে গেছে। বিদেশি দুইজন পেসার নিয়ে খেলেছিলাম। এই জন্য উচিত ছিল আরেকটু দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করা। শুরুতে আরেকটু হিসেবী ক্রিকেট খেলা উচিত ছিল। আমার হিসেবে ম্যাচ হাতছাড়া হয় তামিম উইকেটে। সে তখন উইকেটে খুব ভালোভাবে থিতু ছিল। আমি ভেবেছিলাম অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যান ঝুঁকি নেবে, তামিম থেকে যাবে। তামিম যেহেতু ক্যারি করছে, ও শেষ পর্যন্ত শেষ করে আসবে। তাই ওর আউটটাই টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আরেকটা টার্নিং পয়েন্ট ছিল মোহাম্মদ নবি আর গ্রান্ট এলিয়টের একই ওভারে ফেরা। এলিয়টের ওটা যদি ছয় হতো, হতে পারে এলিয়ট আর মিলন মিলে খেলাটা আরও ক্লোজের দিকে নিয়ে যেত।’
চট্টগ্রামে রাতে শিশিরের প্রকোপ পড়ে, ম্যাচের সময়সূচি এক ঘণ্টা এগিয়ে আনায় দিনে-দিনে প্রথম ম্যাচটি হয়েছে শেষ। তাই শিশির ফ্যাক্টরকে সামনে আনতে চাইছেন না অমিÑ ‘প্রথম ম্যাচে কোনো ‘ডিউ ফ্যাক্টর’ ছিল না। উইকেট একই রকম ছিল। ১৭০ রানের লক্ষ্য হলে হয়তো অন্যরকম হতো। এই ধরনের উইকেটে ১৫০ রান চেজ করা কঠিন ছিল না।’
ঢাকায় টানা তিন হারে ভেঙে পড়েছে দলটি, পরিস্থিতির মুখে তা মানছেন অমিÑ ‘এই ম্যাচের আগে আমরা টানা তিনটি ম্যাচ হেরেছি। সবার মনে মধ্যে হয়তো এই ভয়টা ছিল যে, আজকে (গতকাল)ও হয়তো হেরে যেতে পারি। আত্মবিশ্বাসের একটু অভাব তো তৈরি হয়েছে। কেননা একটানা তিনটা ম্যাচ হেরেছি।’ ঢাকা পর্বে হাতের নাগালে থাকা ওই তিনটি ম্যাচের মধ্যে অন্তত একটিতে জিততে পারলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো বলে মনে করছেন অমিÑ ‘যে ম্যাচে ৬ বলে ৬ রান লাগতো, উইকেটে ছিল দুই জন সেট ব্যাটসম্যান। এত বড় সুযোগ তো আর পাওয়া যাবে না। তার উপর ঢাকায় শেষ ম্যাচে একটা ওভারে অনেক বেশি রান দেয়ার কারণে আমরা পিছিয়ে গেছি। ওই চারটি ম্যাচের মধ্যে যদি আমরা দুইটাও জিততে পারতাম, তাহলে এত খারাপ হয়তো লাগতো না।’
চিটাগাং ভাইকিংস দলটি তামীম নির্ভর হয়ে পড়েছে, তার সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন জহুরুল ইসলাম অমিÑ ‘তামিম অবশ্যই দলের প্রধান খেলোয়াড়। তবে ওর ওপর দলটি পুরোপুরি নির্ভরশীল, তা বলা যাবে না। ও রান করলে দেখা যায় আমাদের ভালো সংগ্রহ হয়। তখন আবার দেখা যায় বোলাররা ভালো করে না। অবশ্যই একজন মানুষের একার পক্ষে ম্যাচ জেতানো সম্ভব নয়। টি-টোয়েন্টি যতই ছোট হোক ম্যাচ জিততে আপনার চার-পাঁচটা ম্যাচ উইনার লাগবে। বুদ্ধি করে বোলিংও করতে হবে।’
৫ ম্যাচে ১১ উইকেটÑ কি দুর্দান্ত বোলিংই না করছেন ঢাকা ডায়নামাইটসের মোহাম্মদ শহীদ। এমন পারফরমেন্সের নেপথ্যে বিপিএল উপভোগকেই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন শহীদÑ ‘আমাদের দেশে বিপিএলই শুধু টি-২০। তাই বিপিএল খুব ভালো উপভোগ করছি। আর উপভোগের পাশাপাশি বোলিংটাও ভালো হচ্ছে।’ শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটের সঙ্গে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পীচের চরিত্রগত পার্থক্য দেখতে পাচ্ছেন শহীদ। পেস বোলারদের জন্য চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতির চেয়ে দরকার ভেরিয়েশন, তা উপলব্ধি করেছেন গতকালÑ ‘মিরপুরের উইকেট যেখানে ফাস্ট বোলাররা জোরে বল করলে ভালো করতে পারবে, এখানের উইকেটে সেখানে বোলারদের ভালো করতে হলে দিতে হবে ভেরিয়েশন। এখানে ভেরিয়েশন বেশি করতে হয়, ব্যাটসম্যানকে রিড করে বল করতে হয়। এখানে জোরে বল করে ভালো বল করা যাবে না।’
শহীদের গায়ে টেস্ট বোলারের স্টিকারটা লাগিয়ে দিয়েছেন নির্বাচকরা। তবে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটেও যে শহীদ নিজেকে মেলে ধরতে পারেন, বিপিএল’র চলমান আসরে তা জানিয়ে দিচ্ছেন এই পেসার। ৫ ইনিংসে ১১ উইকেটে বোলারদের শীর্ষে থেকেও সংক্ষিপ্ত ভার্সনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার ভাগ্যটা ছেড়ে দিয়েছেন নির্বাচকদের বিবেচনার উপরÑ ‘ এখন পর্যন্ত সর্বাধিক উইকেট শিকারি আমি। তবে এখনও বিপিএল শেষ হয়নি। সীমিত ওভারের খেলায় আমাকে চিন্তা করা হবে কি না, তা আমি জানি না। আমার পারফরম্যান্স যদি ভালো হয়, যদি মনে করে আমাকে দলে নেয়া যেতে পারে, তাহলে---।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা ডায়নামাইটস : ২০ ওভারে ১৪৮/৯ (মারুফ ৩৩, সাঙ্গাকারা ১৭, নাসির ২০, মোসাদ্দেক ৩৫, সাকিব ১৩, ব্রাভো ৩, প্রসন্ন ৮, কোলস ৪, আলাউদ্দিন ৫, সানজামুল ৭*; মিলস ৩/২৫, শুভাশীষ ০/৪২, নবি ৩/১৮, মাহমুদুল ০/১২, সাকলাইন ০/২৬, ইমরান ১/২৩)
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১২৯/৮ (তামিম ২৬, জহুরুল ৬, এনামুল ১৭, মাহমুদুল ২০, নবি ১৫, এলিয়ট ৮, নাজমুল ১৩, সাকলাইন ৯*, মিলস ৪, ইমরান ৫*; নাসির ১/২৬, সাকিব ০/৯, কোলস ১/২৩, ব্রাভো ১/২৫, প্রসন্ন ০/১৭, শহীদ ৩/২৩)
ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ১৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ শহীদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ