Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সস্তা খাবারের স্বর্ণালী দিনের অবসান, কম খাবার কিনছেন ৪০ শতাংশ ব্রিটিশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২২, ১২:০৩ এএম

মহামারীর শুরু থেকেই চলছে সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা। ইউক্রেন সংকট এ প্রতিবন্ধকতাকে ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। ফলে যুক্তরাজ্যে সস্তা খাবারের স্বর্ণলী দিন শেষ হয়ে গিয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানেও উচ্চ জীবনযাত্রা ব্যয়ের সংকটের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। এ অবস্থায় নতুন একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে দুজন ব্রিটিশ নাগরিক প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার কিনছেন। যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারমার্কেট চেইন সেন্সবারি’স পিএলসির সাবেক প্রধান জাস্টিন কিং বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট আর্থিক ধাক্কা পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে তুলেছে। এজন্য ক্রেতারা এখন কীভাবে তাদের অর্থ ব্যয় করবেন তা নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়েছেন। আমরা সম্ভবত সস্তা খাবারের স্বর্ণযুগের মধ্য দিয়ে চলেছি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। লোকেরা তাদের পারিবারিক বাজেটে অগ্রাধিকারগুলো পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এজন্য আশঙ্কা করছি, দীর্ঘ সময় ধরে পারিবারিক বাজেটের বড় একটি অংশ খাবারের পেছনে ব্যয় করতে দেখব। অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস, এপ্রিলের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ হার দেশটির ইতিহাসে ১৯৮২ সালের পর সর্বোচ্চ। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছরের শেষ দিকে এ হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের (বিআরসি) প্রধান নির্বাহী হেলেন ডিকিনসনও জানিয়েছেন যে ভোক্তারা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে। এক্ষেত্রে জ্বালানি, পরিবহন ব্যয় এবং অত্যন্ত কঠিন শ্রমবাজার খাদ্যের দাম বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করেছে। ক্রমবর্ধমান ব্যয় এরই মধ্যে মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে বাধ্য করছে। সম্প্রতি প্রকাশিত অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের (ওএনএস) জনমত ও সামাজিক প্রবণতা সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে দুজন প্রাপ্তবয়স্ক কম খাবার কিনছেন। চলতি বছরের শুরুতেও এ হার প্রতি পাঁচজনে একজন ছিল। জরিপে অংশগ্রহণ করা প্রাপ্তবয়স্কদের ১০ জনের মধ্যে নয়জনই ওএনএসকে বলেছেন, চলতি মাসে তাদের ব্যয়ের পরিমাণ গত মাসের তুলনায় বেশি ছিল। এর আগে গত নভেম্বরে যখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন ব্যয় বাড়ার কথা বলা ব্রিটিশদের হার ছিল মাত্র ৬২ শতাংশ। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উদ্বেগ ছিল খাদ্য ও জ্বালানির দাম নিয়ে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্রিটিশরা অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন, কম জ্বালানি ব্যয় করে ঘর গরম রাখার চেষ্টা করছেন এবং খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে ভ্রমণ এড়িয়ে চলছেন। ৪০ শতাংশ মানুষ আশঙ্কা করছে, আগামী ১২ মাসে তারা কোনো অর্থ সঞ্চয় করতে পারবে না। ব্রিটিশ আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান হারগ্রেভস ল্যান্সডাউনের একজন জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিগত আর্থিক বিশ্লেষক সরাহ কোলস বলেন, উচ্চ দাম মানুষকে সত্যিই ভয়ঙ্কর আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে। খাবার কেনা কমিয়ে দেয়া লোকের সংখ্যা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন আর আশ্চর্যের নয় যে, এটা নিয়ে আমাদের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ উদ্বিগ্ন। ওএনএসের জরিপ দেখায় খাদ্য নিয়ে বিপদের ঘণ্টা বাজছে। প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার কেনার অনুপাত ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যে কিছু মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে। মূল্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়ার তথ্যে গত মাসে দৈনন্দিন খাবারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার চিত্র উঠে এসেছে। এপ্রিলে পাস্তার দাম ৪৫ শতাংশ, টিনজাত টমেটো ও ডিমের দাম ১৩ শতাংশ এবং কুকুরের খাবারের দাম ৪০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ