Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিল্পে দুর্ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে

সংশোধন হচ্ছে শ্রম আইন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশের শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত শ্রম আইনে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সব শিল্প খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিধান থাকছে। এ বিষয়ে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে কমিটি কাজ শুরু করেছে। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশের শিল্প খাতে নিরাপত্তা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান শ্রমসচিব মো. এহসান ইলাইী। তিনি বলেন, এটি একটি ভালো আইন হবে। আইনটি কার্যকর হলে শ্রমিক-মালিকসহ সকলের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

সচিব জানান, কর্মক্ষেত্রে পরিবেশ নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল ওয়ার্কিং প্ল্যান করা হচ্ছে। এতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য কল্যাণকর বিষয়গুলো নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা তথা আইএলও যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, শিল্পে দুর্ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। শুধু পোশাক শিল্পে নয়, সব খাতেই প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। শিল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেক কারখানায় আলাদা নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা যেতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী ন‚রুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, পরিকল্পনা ছাড়া নতুন কোনো শিল্পের অনুমোদন দেয়া হয় না। শিল্প স্থাপন করতে হলে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। চাকরিদাতা, কর্মজীবীসহ সবাই একসঙ্গে কাজ করলে যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তমো পোতাইনেন। তিনি বলেন, শিল্প খাতে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেক শিল্প ইউনিটে আলাদা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি জোন গঠন করা আবশ্যক।
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাসির কবির বলেন, একসময় বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখন তার পরিবর্তে শিল্পের অবদান বাড়ছে। শিল্পায়ন ছাড়া দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য শিল্পে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।
আরদাসির আরও বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে ধারণা ছিল, সে ধারণা পাল্টে গেছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বের মনোভাব এখন ইতিবাচক, তবে আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা এলসিডবিøউর কর্ণধার শামীম আরা বলেন, দেশের সাত কোটি শ্রমশক্তির মধ্যে শতকরা ৮৭ ভাগ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। এই খাতে বেশিরভাগ শ্রমিকরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে কাজ করে। তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। গত বছর এক হাজারের বেশি শ্রমিক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিকের জীবনের ক্ষতিপূরণের দাবি নয়, আমরা চাই নিরাপদ ও কর্ম উপযোগী পরিবেশ।

জয়ের দৃষ্টিতে এক স্মৃতি জাগানিয়া অনুষ্ঠান মেডিসনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’
স্টাফ রিপোর্টার
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আইসিটি মন্ত্রনালয় আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ মেলোডি ফর হিউম্যানিটি’ এক স্মৃতি জাগানিয়া অনুষ্ঠান। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সঙ্গিত শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের ’কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ পরিবেশনা বাংলাদেশে পাকিস্তানি সৈন্যদের বর্বরতার ঘটনায় বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছিল।

অতিস¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সেই একই স্থানে আইসিটি মন্ত্রণালয় অনুরূপ একটি কনসার্টের আয়োজন করে। ’কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামে এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের সেরা রক তারকারা সঙ্গিত পরিবেশন করেন।
জয় গত বুধবার তার ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেজে লেখেন, ১৯৭১ সালে হাজার হাজার মাইল দূরত্বের একটি দেশ তার লাল-সবুজ পতাকা রক্ষায় রক্ত ঝরাচ্ছিল। আর বন্ধুর মুখে সেই দেশটির গল্প গভীরভাবে নাড়া দিল বিশ্ব সঙ্গীতের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় একজন শিল্পীকে।

তিনি লিখেছেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা, অসংখ্য নারীদের ধর্ষণ আর অনাহারে শিশুদের মৃত্যু তাকে মর্মাহত করলো। ঠিক তখনই কিছু কাব্যিক শব্দ একটি অবিস্মরণীয় গানের লিরিক আকারে ফুটে উঠল: ‘চোখ ভরা বিষাদ নিয়ে/ আমার বন্ধু আমার কাছে এসেছিল/
তার দেশ শেষ হয়ে যাবার আগে/পাশে দাঁড়ানো দরকার বলে আমাকে জানিয়েছিল।’
জল বলেন, মনে যা এসেছিল, শুধু তাই দিয়ে গানটি রচনা করলেন না বিটলস-এর তারকা জর্জ হ্যারিসন। বরং ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস একটি গণহত্যার শিকার হওয়া বাংলাদেশের জনগণকে সাহায্য করার চিন্তায় মগ্ন তখন। ছুটে গেলেন বব ডিলান এবং এরিক ক্ল্যাপটনের মতো কিংবদন্তীদের কাছে। তারাও বাংলাদেশকে সমর্থন জোগাতে সম্মত হন। আর বাকিটাতো ইতিহাস। ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ এর মাধ্যমে তারা যুদ্ধের শিকার দেশকে সাহায্য করার নজির স্থাপন করেছে বলেন জয়।

তিনি বলেন, যখনই আমি এটি ইউটিউবে দেখি, এটি আমাকে একটি সোনালী মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়ে যায়-জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশ গানটি গাইছেন, কানে ভাসছে বব ডিলানের ‘হাউ মেনি রোডস অ্যা ম্যান মাস্ট ওয়াক ডাউন (কতটা পথ পেরলে বলো পথিক হওয়া যায়)’, ঝড়ের মতো তার সেতারে সুর তুলছেন পন্ডিত রবিশঙ্কর। একই মঞ্চে সকল তারাদের মেলা!
জয় জানান, গত সপ্তাহে তিনি সেই মুহূর্তটিকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন, বাংলাদেশের সুবর্ণ জযয়ন্তীতে আরেকটি কনসার্টের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তাদের সেই মানবতার জন্য সঙ্গীতের আয়োজনের প্রতি। বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রকস্টার ও গানের সম্রাটরা যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি হল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ বিধ্বস্ত সেই দেশটি এখন টেকসই অগ্রগতি এবং উন্নয়নের একটি প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কর্মযজ্ঞ পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট - এক অণুপ্রেরণার ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, তবুও সব সাফল্যের গল্পের বিপক্ষে কতিপয় মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে বিরোধিতা করবেই। যুদ্ধাপরাধীদের প্রেতাত্মারা যাতে অন্ধকার অধ্যায় ফিরিয়ে আনতে না পারে সেজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে সোনার বাংলার জন্য আমাদের প্রতিশ্রæতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আসুন হ্যারিসনের বাংলাদেশ গানটি আরও একবার গাই এবং বিশ্ব আবার শুনুক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই হল এবারের সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমাদের প্রতিশ্রæতি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ