Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪ ঘণ্টা বিপদঘণ্টি শোনার ‘পুরস্কার’ আড়াই কোটি টাকা!

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২২, ৫:১৫ পিএম

নাচ শেখার সঙ্গে সঙ্গে আয়ের জন্য গায়ের চামড়া ট্যান করার একটি শ্যালোঁতে আংশিক সময়ের কাজ নিয়েছিলেন হেসেল ম্যাকডোনাল্ড। তখন তাঁর বয়স ১৯। সকাল থেকে তার কাজ শুরু হত। অন্য দিনের মতো সে দিনও সকালে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। কাজ শুরু করার পরই হল বিপত্তি।

হঠাৎ করে বাজতে শুরু করল আগুনের বিপদঘণ্টি। বাজতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে সকাল ন’টা নাগাদ তিনি শ্যালোঁর ম্যানেজার স্টিফন ক্যাম্পবেলকে খবর দেন। ম্যানেজার হেলেসকে সেখানে থাকতে বলেন। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে বিপদঘণ্টি বাজতে থাকে। নাগাড়ে বেজে যাওয়া ঘণ্টির শব্দে কান ঝালাপালা হচ্ছে হেসেলের। তবু বেরনোর উপায় নেই। ম্যানেজারের নির্দেশ। নির্দেশ অমান্য করলে চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা।

তাই ওই অস্বস্তিকর শব্দের মধ্যেই তিনি কাজ করে যেতে লাগলেন। স্বস্তি পাওয়ার জন্য মাঝে মাঝে বার হচ্ছিলেন শ্যালোঁর পাশে ফুটপাথে। তাও সব মিলিয়ে ১৫ মিনিট। প্রায় ১১টা নাগাদ ম্যানেজার স্টিফেন শ্যালোঁতে এলেন। তিনি বিপদঘণ্টিতে টেপ লাগিয়ে দিয়ে বললেন কাজ চালিয়ে যেতে। এই ঘটনার পর হেসেল বাড়ি ফিরে আসেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। চিকিৎসকরা তাকে শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করতে বলেন।

চিকিৎসকরা তাকে বলেন, তীব্র শব্দের সংস্পর্শে আসার কারণে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর পর তিনি শ্যালোঁ সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। হেসেল সমসাময়িক নৃত্যে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক হন। কিন্তু কানের সমস্যার কারণে তাকে নাচের পেশা ছেড়ে দিতে হয়।

আদালতে তিনি বলেন, সংস্থার অবহেলার কারণে তিনি শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন। তার কেরিয়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আদালত হেসেলের পক্ষেই রায় দেয়। রায়ে আদালত বলে, প্রতি বছর তাকে শ্রবণযন্ত্র পাল্টাতে হবে। এর জন্য বছরে খরচ পড়বে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। শুনানিতে আদালত বলে, তদন্তে উঠে এসেছে বিপদঘণ্টির শব্দের ফলে কান নষ্ট হয়ে গিয়েছে হেসেলের। শব্দের তীব্রতা এতটা বেশি ছিল যে শ্যালোঁর বাইরের লোকেরাও শুনতে পেয়েছেন।

আদালত আরও বলে, তিনি আশা করেছিলেন যে বিপদঘণ্টিটি বন্ধ করা হবে অথবা তাকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যেতে বলা হবে। কিন্তু তিনি অনুমতি ছাড়াই যদি এই কাজ করতেন তবে তার ভয় ছিল যে, তাকে চাকরি হারাতে হতে পারে। আদালত আরও বলে, তীব্র শব্দের ফলে কানের যে ক্ষতি হতে পারে তা সংস্থার ম্যানেজারের বোঝা উচিত ছিল।

তিনি প্রবল কষ্টের মধ্যে শিফ্ট শেষ করেছিলেন। বাড়িতে পৌঁছে তার তীব্র মাথাব্যথা হচ্ছিল, কানের মধ্যে সব সময় ঝনঝন শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তিনি গড়ে ৮৭.৭ থেকে ৮২.৩ ডেসিবেল মাত্রার শব্দের মধ্যে ছিলেন। হেসেল ঘটনার পর নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞকে তার কান দেখিয়েছিলেন। তারা বলেন, তার শ্রবণশক্তির বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গিয়েছে তীব্র শব্দের কারণে।

আদালত, স্কটল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহতম শহর ডান্ডির স্ট্র্যাথমার্টিন রোড অবস্থিত সংস্থাটিকে হেসেলকে দুই লাখ ৪০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা। সূত্র: ডেইলি মেইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ