Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঈদে বৃষ্টিস্নাত দেশ

বর্ষণ-জোয়ারে প্লাবিত চট্টগ্রাম বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী সাগরে লঘুচাপের ঘনঘটা

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০২২, ১২:০৫ এএম

চৈত্র-বৈশাখের দীর্ঘ খরা ও অসহ্য তাপপ্রবাহ অবশেষে কেটেছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন এবং গতকাল বৃহস্পতিবারসহ ঈদের পরের দুই দিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের প্রায় সর্বত্র কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঈদে বৃষ্টি স্নাত হলো সারা দেশ। খরতপ্ত আবহাওয়ায় অপার স্বস্তি ও প্রশান্তি এনে দিয়েছে হিমেল হাওয়ার সাথে বহু প্রত্যাশিত এই বৃষ্টি। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে এসেছে স্থানভেদে ২৭ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা গত ১৫ এপ্রিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রিতে উঠে যায়। গত ২৯ এপ্রিল দৈনিক ইনকিলাবে ‘ঈদে স্বস্তির বৃষ্টির সম্ভাবনা’ শীর্ষক খবর প্রকাশিত হয়।

ঈদের দিনে সকাল পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীসহ বৃহত্তর ঢাকার আকাশ হঠাৎ ঘনকালো মেঘে ছেয়ে গিয়ে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথেই শুরু হয় স্বস্তির বর্ষণ। প্রায় আধাঘন্টা ঝুম বৃষ্টি নামে। অনেক জায়গায় সড়ক, রাস্তাঘাটে পানি জমে যায়। ক্ষণিকের বৃষ্টি হলেও গা-জ্বলা ভ্যাপসা গরমের আপাতত অবসান হয়। জনজীবনে আসে প্রশান্তির আমেজ।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বেলা একটার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো করে ঘন ঘন বজ্রপাতের সাথে দমকা হাওয়া ও কালবৈশাখী ঝড় এবং সেই সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট প্রবল বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টিপাতের মাত্রা ক্রমেই কমে আসে। রাজশাহীতে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ ৪১ মি.মি., নওগাঁয় ৩৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়। হঠাৎ বৃষ্টিতে রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন সড়ক, রাস্তাঘাটে পানিবদ্ধতা দেখা দেয়।

চৈত্র-বৈশাখে টানা তাপপ্রবাহে কাহিল মানুষ অনেকেই সর্দি-কাশি, জ¦র, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী রোগব্যাধিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মসজিদে মসজিদে আল্লাহর দরবারে আকুল ফরিয়াদ করেন শান্তি-স্বস্তির বৃষ্টির প্রত্যাশায়। ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাত করা হয় বৃষ্টির জন্য। অবশেষে নামে স্বস্তির বর্ষণ।
বর্ষণের সঙ্গে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড়ের ঘনঘটা তৈরি হয় দেশের অনেক জায়গায়। এতে বিভিন্ন স্থানে ফল-ফসল, কাঁচা বসতঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গতকাল সকালে বর্ষণ ও প্রবল সামুদ্রিক জোয়ারে প্লাবিত চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, চকবাজার, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পতেঙ্গা, কাট্টলীসহ বিভিন্ন এলাকা। দোকান-পাট, গুদাম ও বসতঘর কাদাপানিতে সয়লাব হয়ে যায়। নি¤œাঞ্চলের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

বৈশাখী তাপপ্রবাহ কেটে গিয়ে স্বস্তির বৃষ্টিকে স্বাগত জানান খরার দহনে দগ্ধ, অতিষ্ঠ শহর-নগরবাসী, গ্রাম-জনপদের মানুষ। অনেকেই সড়ক, রাস্তাঘাটে বের হয়ে গা ভেজাতে দেখা গেছে বৃষ্টির সুশীতল পানিতে। গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে মাদারীপুরে ৬৫ মিলিমিটার।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, কমবেশী বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকবে। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বাড়তি অংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। পূর্বাভাসে আবহাওয়া বিভাগ আরও জানায়, আগামী ৭২ ঘণ্টায় আন্দামান সাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ আজ শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানায়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ