Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ককপিটে সিগারেট ধরিয়েছিলেন পাইলট, বিমান ভেঙে প্রাণ গিয়েছিল ৬৬ জনের!

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২২, ১:৩৯ পিএম

শুধুমাত্র বিমানচালকের গাফিলতিতেই সেদিন শেষ হয়ে গিয়েছিল ৬৬টি জীবন! মৃতদের তালিকায় নাম ছিল সেই পাইলটেরও। এমন ঘটনায় হতবাক তদন্তকারীরা। তার থেকেও বেশি ক্ষুব্ধ। তাদের প্রশ্ন, প্রশিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ কেন করলেন বিমানচালক!

২০১৬ সালে ভেঙে পড়েছিল ইজিপ্টএয়ারের একটি যাত্রীবাহী বিমান। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় বিমানে সওয়ার মোট ৬৬ জনেরই মৃত্যু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল, মাঝ-আকাশেই বিমানের ককপিটে আগুন লাগে। তারপর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিমানে। আর তার জেরেই ভেঙে পড়ে বিমান। ইতিমধ্যেই সেই দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে। ফরাসী বিমান বিশেষজ্ঞরা সেই রিপোর্টে দাবি করেছেন, কেবলমাত্র চালকের উদাসীনতাতেই দুর্ঘটনায় কবলে পড়তে হয়েছিল এমএস৮০৪ বিমানটিকে।

ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? ১৩৪ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্টে তদন্তকারীরা সাফ জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। একটি মার্কিন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুসারে, উড়ানের মাঝেই ককপিটের ভিতর সিগারেট জ্বালিয়েছিলেন পাইলট। তাতেই একটি আপদকালীন অক্সিজেন মাস্ক ফুট হয়ে যায়। এবং সেই অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসেই সিগারেটের আগুন প্রথমে ককপিটের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর তা আস্ত বিমানটাকেই গ্রাস করে নেয়। গত মাসেই ফরাসি কর্মকর্তারা প্যারিসের অ্যাপিল আদালতে তাদের তদন্ত রিপোর্ট জমা করেছেন।

প্রসঙ্গত, ককপিটের ভিতর ধূমপান করা নতুন কিছু নয়। অনেক পাইলটেরই এই অভ্যাস আছে। তবে, বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ বিমান সংস্থা এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সকলে সেই পথে হাঁটেনি। সূত্রের দাবি, যখন এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তখনও পর্যন্ত মিশরের বিমান সংস্থায় এ নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। এবং চলন্ত বিমানে ধূমপান করা পাইলটদের রোজের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল!

দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ককপিট ভয়েস রেকর্ডার চালিয়ে তদন্তকারীরা একটি রহস্যজনক সূত্র পান। তারা শুনতে ককপিটের ভিতরেই হাওয়া বেরোনোর মতো একটি খুব মৃদু শব্দ হচ্ছে। বলা বাহুল্য দুর্ঘটনার সময় চালক ও তার সহকারী সেই আওয়াজ শুনতে পাননি। পরে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, সেই সময় পাইলট ধূমপান করছিলেন। তাতেই অক্সিজেন মাস্ক ফুটো হয়ে গ্যাস বেরোতে শুরু করে। তারই শব্দ মাইক্রোফোনে রেকর্ড হয়ে যায়।

২০১৬ সালের মে মাসে এয়ারবাস এ৩২০ বিমানটি তার যাত্রা শুরু করেছিল প্যারিস থেকে। গন্তব্য ছিল কায়রো। কিন্তু, গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই ভূমধ্য সাগরে সেটি ভেঙে পড়ে। প্রাণ যায় ৪০ জন মিশরীয়, ১৫ জন ফরাসি, দুজন ইরাকি এবং দুজন কানাডীয় নাগরিকের। এছাড়াও মৃতদের তালিকায় আলজেরিয়া, বেলজিয়াম, ব্রিটেন, চাদ, পর্তুগাল, সউদী আরব এবং সুদানের একজন করে যাত্রী ছিলেন। সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ