Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাগরিক ঐক্যের ইফতারে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:৩৫ পিএম

জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিয়ে বিএনপি সরকার বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এদিকে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা অংশ নেবেন না।

বুধবার রাজধানীর শান্তিনগরে হোয়াইট হাউজ রেস্টুরেন্টে “এই সরকারের অধীনে নির্বাচনকে না বলুন” শীর্ষক আলোচনা সভা ও রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের নেতাদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তারা এ ঘোষণা দেন। তবে ইফতারে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

সভায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই সরকার তো অবৈধ। তাই তাদের অধীনে নির্বাচন শুধু না, এখন বলতে হবে-এই সরকার আর নয়। আসুন সরকারকে বিদায়, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক কাতারে হই। ভবিষ্যতে আলোচনার মাধ্যমে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনোভাবেই নির্বাচন করা যাবে না। আপনারা অবৈধ। ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হবে! ভোট চুরি করেছিলেন কেন? রাতের আগে ব্যালট বাক্স ভরাট করেছেন কেন? সেটার জবাব আগে দেন। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। আন্দোলনের মুখে এই সরকার পাঁচ মিনিটও টিকবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ফ্যাসিজমের হাত থেকে রেহাই পেতে জাতীয় ঐক্য দরকার। আমরা বিশ্বাস করি সবাইকে এক সঙ্গে পাব। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রটাকে তছনছ করছে। এটাকে বাঁচাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে। এই সরকার নির্লজ্জ বিবস্ত্র। তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপিকা ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘দেশ সত্যিই ভীষণ বিপদের মুখে। সবাই ঐক্যবদ্ধ না হলে আরো ভয়াবহ হবে। তবু সংঘবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। জনগণের সামনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য তুলে ধরে সরকারকে বদলিয়ে পরিবর্তিত সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাতে হবে। জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঠিক করতে হবে। সেটা কি নির্বাচনের আগে নাকি পরে হবে?’

বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক নূরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, ‘দেশে যখন নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগ ঠিকমতো কাজ করে না তখন দেশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তারা এমন বিপদে পড়বে যে আমরা সবাই বিপদে পড়ে যাব। আমাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। বেশিদিন লাগবে না। অল্প কিছু দিন আন্দোলন করলে সরকারের পতন হবে। জিরো প্লাস জিরো সমান বিগ জিরো। সুতরাং বিএনপিকে বাদ দিয়ে আন্দোলন করলে হবে না।’

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন দেশের কেউ চায় না। আমরা বিএনপির আমলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করেছিলাম। কিন্তু এ সরকার তা বাতিল করেছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাই। আজকে জাতীয় সরকারের ফর্মূলা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বা তার দোসরদের নিয়ে জাতীয় সরকার হতে পারে না। কাঁদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ হবে জাতীয় সরকারের ফর্মুলা কী হবে?’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বলেন, ‘২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো আগামীতে আরেকটি ব্যর্থ নির্বাচনের দায় দেশের মানুষ বহন করতে পারবে না। আরেকটি ব্যর্থ নির্বাচন হলে দেশের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বলা কঠিন! মানুষ আজ ফ্যাসিবাদের পরিবর্তন চায়। এটার দায়িত্ব রাজনীতিকদের। না করলে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’

এলডিপির আরেক অংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগ সরকার না জাতীয় সরকারের অধীনেও নির্বাচন করা যাবে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে এ সরকারকে হটিয়ে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এর বাইরে কেউ অন্য কিছু চিন্তা করলে বুঝতে হবে সেই চিন্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার চিন্তার মিল আছে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে ও সাকিব আনোয়ারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) খন্দকার লুৎফর রহমান, লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির আবু তাহের, গণ অধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া, ভিপি নূরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে ইফতারে অংশগ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু, শওকত মাহমুদ, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও তার স্ত্রী নাসিমা খান, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির জহির উদ্দিন স্বপন, শামা ওবায়েদ, রিয়াজ উদ্দিন নসু, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান মনিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।



 

Show all comments
  • Dr. Miah Muhammad Adel ২৮ এপ্রিল, ২০২২, ৫:২৯ পিএম says : 0
    This is too bad, Mr. Manna. I had some respect for you, but your discrimination policy wiped it out. I feel sorry for your bigotry in an Iftar party.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ