Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

থামছে না ইটভাটার দৌরাত্ম্য, ঝুঁকিতে পরিবেশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০২২, ৪:৫৫ পিএম

দেশজুড়ে থামছে না ইটভাটার দৌরাত্ম। দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বাড়ছে ইটভাটার আগ্রাসন। এসব ইটভাটার কারণে বিপুল পরিমাণে আবাদী জমি নষ্ট হচ্ছে, পরিবেশে পড়ছে বিরূপ প্রভাব।

পরিবেশ অধিদফতরের সূত্রমতে, সারাদেশে ইটভাটা আছে ৭ হাজার ৯০২টি। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ১৭০টি ইটভাটা আছে। এরমধ্যে ১৩০টিই চলছে অবৈধভাবে। আবাদী ও কৃষিজমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে এসব ইটভাটা। বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। আশেপাশে আবাদী জমি বা বসতি আছে কিনা সে বিষয়েও কোনো তোয়াক্কা করছে না ইটভাটার মালিকেরা।

রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় প্রায় ৫০০টি ইটভাটা আছে। উত্তরাঞ্চলের বিশাল আবাদী জমি এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। তিন ফসলি জমির ওপর গড়ে উঠছে অসংখ্য ইটভাটা। জমির উর্বর ও সারযুক্ত টপ সয়েল বা উপরের মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট।

দেশের পশ্চিমাঞ্চলে কুষ্টিয়া কৃষিপ্রধান এলাকা। রবিশস্যসহ বিভিন্ন শস্যে বেশ সমৃদ্ধ এই এলাকা। অথচ ওই এলাকায় ১২৬টি ইটভাটা আছে। এরমধ্যে মাত্র ১৮টির বৈধ লাইসেন্স আছে।

ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে গাছপালা। জমিহ্রাসের পাশাপাশি বৃক্ষনিধনেও ধুঁকছে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে নির্মাণকাজে পোড়া ইট ব্যবহার করা হয় না। অথচ বাংলাদেশে আইন থাকলেও তার প্রয়োগ হচ্ছে না। কারণ, যত দিন থেকে অভিযান চলছে, তাতে অবৈধ ভাটা থাকার কথা নয়। পরিবেশবান্ধব আধুনিক প্রযুক্তিতে রূপান্তরিত ইটভাটাগুলো আসলে কতটুকু কার্যকরভাবে এসব প্রযুক্তি স্থাপন করেছে, তারও কোনো সামগ্রিক পর্যালোচনা এখনও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের একটি অঙ্গীকার ছিল ২০২০ সালের মধ্যে পোড়া ইট শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, কিন্তু সেটি সরকার পারেনি। ইটভাটায় কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর জমি ব্যবহার করা হয়। ফলে এসব ইটভাটার কারণে কৃষিজমি উর্বরতা হারাচ্ছে। আবার ইটভাটার ছাই-ভস্ম ও ধোঁয়া আশেপাশের ফসল উৎপাদনের ক্ষতি করছে। তাছাড়া মানুষ হাঁপানি, চুলকানি কিংবা চোখ জ্বালাপোড়াসহ নানা সমস্যায় পড়ছে ইট পোড়ানোর কারণে। এসব কারণে প্রচলিত ইটভাটায় ইট তৈরির পরিবর্তে নির্মাণকাজে ব্লক ব্যবহারের উৎসাহিত করতে হবে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইটভাটা সৃষ্ট দূষণে বয়ষ্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া কালো ধোঁয়াতে ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগ দেখা দেয়। এছাড়া এর দূষণ পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি উৎপাদন ও গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ