মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পারমানবিক অস্ত্র প্রস্তুত কর্মসূচির গতি আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন। সোমবার তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাতে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের এক স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রীয় সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন কিম জং উন। -বিবিসি
প্রধান অতিথির ভাষণে কিম জং উন বলেন, ‘বিশ্বের নিষ্ঠুর দেশগুলোর থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের পারমাণবিক সক্ষমতা প্রয়োজন। এ কারণে আমরা যত দ্রুত সম্ভব পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছি।’ কেসিএনএ ও স্যাটেলাইট সূত্রে পাওয়া কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ছবি বিশ্লেষণ করে বিবিসি জানিয়েছে, বিগত বিভিন্ন বছরে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজে মিলিটারি ট্যাংক, কামান-গোলাবারুদ ও সেনা সদস্যদের দীর্ঘ সারি দেখা যেত। কিন্তু সোমবারের কুচকাওয়াজে মূলত প্রদর্শিত হয়েছে উত্তর কোরিয়ার তৈরি নিকট ও দূরপাল্লার বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র। প্রদর্শনে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক তৈরি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে (আইসিবিএম)। হোয়াসং-১৭ নামের এই আইসিবিএম উত্তর কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডের যে কোনো লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।
এছাড়া চলতি বছর দেশটি বিভিন্ন পাল্লার যত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে, সেসব দেখানো হয়েছে কুচকাওয়াজে। শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন হাইপারসনিক ও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রও প্রদর্শিত হয়েছে। বহির্বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই দেশটি গত তিন দশক ধরে একের পর এক বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত ও পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া-জাপানসহ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা প্রায় সময়ই এসব কর্মকাণ্ডকে ‘উস্কানিমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করলেও উত্তর কোরিয়ার সরকারের ভাষ্য, অন্যকে আক্রমণ নয়; বরং ‘নিষ্ঠুর বিভিন্ন দেশের’ সম্ভাব্য হামলা থেকে বাঁচতে আত্মরক্ষামূলক কর্মসূচি হিসেবে এসব সমরাস্ত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সোমবারের ভাষণেও সে কথারই পুনরাবৃত্তি করেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা; তিনি বলেন, বৈরী প্রতিপক্ষদের হুঁশিয়ার করে বলছি, পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত হলে প্রয়োজনের সময়ে যে কোনো মুহূর্তে তা উৎক্ষেপণের ব্যাপারে আমরা দ্বিধা করব না। ২০১৬ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে উত্তর কোরিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করবে না দেশটি; কিন্তু তার দু’ বছরের মধ্যে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে উত্তর কোরিয়া এবং ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হোয়াসংয়ের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালায়। প্রতিশ্রুতি না রাখায় দেশটির ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে নিরাপত্তা পরিষদ এবং পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র।
নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন কিম জং উন এবং প্রতিশ্রুতি দেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে উত্তর কোরিয়া ব্যালেস্টিক ও পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত প্রকল্প বন্ধ রাখবে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা তোলার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২০ সালে ফের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসে দেশটি। কিম জং উন প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন— উত্তর কোরিয়া কোনো ‘অন্যায্য’ প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্তরসূরী জো বাইবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হওয়ার পর অবশ্য কয়েকবার বলেছেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে আগ্রহী; তবে সেই বৈঠকে কোনো পূর্বশর্ত থাকতে পারবে না। তবে মুখে একাধিখবার বললেও বাস্তবে এ বিষয়ে তেমন কোনো তৎপরতা দেখায়নি বাইডেন প্রশাসন; বরং বিভিন্ন ভাবে জো বাইডেন বুঝিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় উত্তর ও দক্ষিণ— দুই কোরিয়ার মধ্যে সুসম্পর্ক থাকুক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।