মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে আমেরিকার মূল লক্ষ্য আসলে রাশিয়াকে দূর্বল করা, তারা চাইছে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হোক। সোমবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের বক্তব্যেই সে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। কিয়েভে রোববার রাতে তার সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে পোল্যান্ডে লয়েড অস্টিন সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা দেখতে চায় এই যুদ্ধের পরিণতিতে রাশিয়া সামরিক শক্তির দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়ুক।
পেন্টাগনের প্রধান বলেন, এই যুদ্ধে "তারা (রাশিয়া) এরই মধ্যে তাদের সামরিক ক্ষমতার অনেকটাই হারিয়েছে...আমরা দেখতে চাই দ্রুত সেই দুর্বলতা যেন তারা কাটিয়ে উঠতে না পারে।" "আমেরিকা দেখতে চায় রাশিয়া এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ুক যাতে ইউক্রেনে হামলার মত কাজ করার সক্ষমতা ভবিষ্যতে তাদের আর না থাকে।" বিবিসির কূটনৈতিক জেমস ল্যান্ডেল বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন একজন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য বিস্ময়কর।
জেমস ল্যান্ডেল বলেন, "তিনি হয়ত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করেছেন যা রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামোর ভিত্তিতে আঘাত করছে।" তিনি বলেন, "অথবা তিনি কি এই যুদ্ধে পশ্চিমা শক্তির লক্ষ্যকে প্রসারিত করছেন? তিনি কি বলতে চাইছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে তাতে সুবিধাই হবে?" বিবিসির এই সংবাদদাতা মনে করেন, সেই ইঙ্গিত যদি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী দিয়ে থাকেন তাহলে এর সাথে অনেক পশ্চিমা মিত্র একমত হবে না।
কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমর-বিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড সৈয়দ মাহমুদ আলী মনে করেন, এই যুদ্ধে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের পাশাপাশি আমেরিকাও একটি পক্ষ এবং এই যুদ্ধ থেকে তারা যে উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় তা অন্য দুই পক্ষের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আলী বলেন. রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মূল লক্ষ্য নিজ নিজ কিছু আঞ্চলিক এবং অভ্যন্তরীণ স্বার্থ উদ্ধার বা রক্ষা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য "বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক।"
"ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার চেয়েও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই যুদ্ধের লক্ষ্য আপনি বলতে পারেন 'গ্র্যান্ড ষ্ট্রাটেজিক' অর্থাৎ বিশ্ব ভূ-রাজনীতিতে রাশিয়া যেন এরপর মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে, রাশিয়া যেন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার বিরোধী কোনো পদক্ষেপ না নিতে পারে।" "সে জন্য আমেরিকা চাইছে রাশিয়াকে এই যুদ্ধে এমনভাবে পরাভূত করা, তাদের এমন ক্ষতি সাধন করা যাতে রুশ নেতারা ভবিষ্যতে আর কোনোদিন ইউক্রেনে হামলা চালানোর পদক্ষেপ না নেন।"
কিয়েভে রোববার রাতের সফরে অস্টিনের সঙ্গী ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও। এই যুদ্ধে রাশিয়ার কী পরিণতি আমেরিকা দেখতে চায় তা নিয়ে তার সহকর্মী লয়েড অস্টিনের মত এমন কোনো বক্তব্য ব্লিনকেন দেননি যা নিয়ে কাটা-ছেড়া হতে পারে। তবে এই যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় দেখাই যে আমেরিকার মূল লক্ষ্য তা স্পষ্ট করেই বলেছেন।
কিয়েভ থেকে ওয়াশিংটনে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া তাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে এবং ইউক্রেন সফল হচ্ছে। তিনি বলেন, "মোদ্দা-কথা হচ্ছে আমরা জানিনা এই যুদ্ধ সামনের দিনগুলোতে ঠিক কিভাবে এগুবে, কিন্তু আমরা এটা জানি যে ভ্লাদিমির পুতিন যতদিন টিকবেন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে ইউক্রেন তার চেয়ে অনেকদিন টিকবে।" মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "ইউক্রেনের প্রতি ভবিষ্যতে আমাদের সাহায্য অব্যাহত থাকবে। চূড়ান্ত সাফল্য না আসা পর্যন্ত এই সহায়তা চলবে।"
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাথে তাদের বৈঠকের সময় মার্কিন এই দুই মন্ত্রীই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকা ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ৭০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য দেবে, এবং কিয়েভে পর্যায়ক্রমে মার্কিন কূটনীতিকরা ফিরে আসবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আবারো নিশ্চিত করা হয়েছে যে ইউক্রেনের মাটিতে মার্কিন কোনো সৈন্য লড়াই করতে যাবেনা বা ইউক্রেনের আকাশে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করে আমেরিকা তা কার্যকরী করবে না। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।