Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নারীরা চরম ভোগান্তিতে

ট্রেনের টিকিট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনে টিকিট পেতে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। তবে নারীদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি।
শত শত নারীর জন্য মাত্র দুটি কাউন্টার হওয়ায় দীর্ঘ লাইনে তীব্র গরম আর ভিড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকিট হাতে পেয়ে কেউ আবার প্রকাশ করছেন ঈদের আনন্দ। এদিকে শত চেষ্টা করেও অনলাইনে মেলেনি ২৯ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট। তাই কমলাপুর রেল স্টেশনের কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখের পড়ার মতো। স্বজনের সঙ্গে ঈদ করতে সোনার হরিণ টিকিটের জন্য কেউ কেউ অপেক্ষা করছেন ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। ফলে দীর্ঘ লাইন আর গরমে চরম ভোগান্তিতে টিকিটপ্রত্যাশীরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারে ডিসপ্লে বন্ধ, টিকিট দিতে ধীরগতি, জাতীয় পরিচয়পত্র সবার যাচাই করা হচ্ছে না। এসব অভিযোগের জবাবে কমলাপুর স্টেশন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ারের দাবি, সব টিকিটপ্রত্যাশীর টিকিট চেক করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ কারণে টিকিট কাটতে ধীরগতি হচ্ছে। যাত্রীরা যাতে কাউন্টার থেকেই টিকিট পান, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ডিসপ্লে যাতে খোলা রাখা হয়, সে বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাসুদ সারওয়ার বলেন, যারা টিকিট পাচ্ছেন না অনলাইনে, সে সংখ্যা বেশি। যাত্রীর চাহিদার তুলনায় টিকিট তো সীমিত।

এদিকে অন্য বছরের মতো এবারও নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তবে তা একেবারেই নগণ্য বলে জানিয়েছেন স্টেশনে আগত টিকিটপ্রত্যাশী নারীরা। ভোগান্তি এড়াতে অন্তত পাঁচটি কাউন্টার নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার দাবি তাদের।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, এবার কমলাপুর থেকে মোট ১৬টি কাউন্টার থেকে ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য দুটি (১৮ ও ১৯ নম্বর) কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। তবে নারী ও প্রতিবন্ধীদের উপস্থিতির তুলনায় কাউন্টারের সংখ্যা কম বলে দাবি টিকিটপ্রত্যাশীদের।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করে বেলা ১১টা পর্যন্তও টিকিট পাননি শেফালি শিউলি। লাইনে তার সামনে তখনো ২১ জন নারী। আদৌ টিকিট পাবেন কি না জানেন না তিনি। আক্ষেপোর সুরে তিনি বলেন, এখানে ১৬টি কাউন্টারের মধ্যে মাত্র দুটি কাউন্টারে নারীদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই কম হয়েছে। এখান থেকে আবার প্রতিবন্ধীদেরও টিকিট দেওয়া হচ্ছে।

আয়েশা আক্তার নামে অপর এক টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, নারীরা দীর্ঘসময় কোনো স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। এখানে তাদের নানা সমস্যা, শারীরিক অসুস্থতা থাকতে পারে। নারীদের কাউন্টারের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত কর্তৃপক্ষের।

এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, অন্যান্য বছর নারী ও প্রতিবন্ধীদের একটি কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হতো। এবছর তাদের জন্য দুটি কাউন্টার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আশা করছি, সবাই সুষ্ঠুভাবেই টিকিট পাবেন। কাউন্টারে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী, রেলপুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করছে।

তিনি বলেন, এবার কালোবাজারে টিকিট পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে সবাই এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) দেখিয়ে টিকিট নিচ্ছেন। এ কারণে একটু দেরি হয়তো হচ্ছে। আশা করি পরিবারের সঙ্গে সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শনিবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। গত রোববার দেওয়া হয় ২৮ এপ্রিলের টিকিট। গতকাল দেওয়া হয়েছে ২৯ এপ্রিলের টিকিট। আজ দেওয়া হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট। আর আগামীকাল দেওয়া হবে ১ মে’র টিকিট। এছাড়া ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মে’র ট্রেনের টিকিট।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্রিম ঈদযাত্রায় প্রতিদিন ২৭ হাজার ৮৫৩টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এর মধ্যে অনলাইনে বিক্রি হবে ১২ হাজার ১৫৭টি এবং কাউন্টারে বিক্রি হবে ১৫ হাজার ৬৯৬টি। ঈদযাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১ মে থেকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেনের টিকিট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ