Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোতে সোভিয়েত আমলের স্মৃতি ফিরে আসছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২২, ৬:১৯ পিএম

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের সমুদ্রতীরবর্তী শহর হেনিচেস্ক শহরের প্রধান কাউন্সিল ভবনের বাইরে বলশেভিক নেতা ভ্লাদিমির লেনিনের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। ছাদ থেকে উড়ছিল রাশিয়ান এবং সোভিয়েত পতাকা।

গত শুক্রবার ছিল লেনিনের ১৫২তম জন্মদিন। তিনি রুশ বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছিলেন। সেই উপলক্ষে হেনিচেস্কের বাসিন্দারা রাশিয়ার প্রতি তাদের সমর্থন এভাবেই ব্যক্ত করেন। তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী হেনিচেস্ক শীঘ্রই ‘খেরসন গণপ্রজাতন্ত্রী’ এর অংশ হয়ে উঠতে পারে। মস্কো সম্ভবত বুধবারের প্রথম দিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় ওব্লাস্ট বা প্রদেশে একটি স্বাধীনতা গণভোট করার পরিকল্পনা করছে। সেখানে কৃতজ্ঞ স্থানীয় ভোটাররা ইউক্রেন থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৪ সালে পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক শহরে গণভোট আয়োজন করেছিল, উভয়ই ‘জনগণের প্রজাতন্ত্র’ হয়ে ওঠে। রাশিয়ান সেনাবাহিনী এখন ইউক্রেনের আরও অঞ্চল মুক্ত করতে এবং ‘প্রজাতন্ত্র’ সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। এখন রাশিয়ান জেনারেলরা খোলাখুলিভাবে বিজয়ের কথা বলেন। অভিযানটি ইউরোপের মানচিত্রকে নতুন আকার দিতে যাচ্ছে।

রাশিয়ার নতুন লক্ষ্য হল আজভ সাগর বরাবর বিচ্ছিন্নতাবাদী পূর্ব থেকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত প্রসারিত একটি স্থল করিডোর তৈরি করা। এর মধ্যে ওডেসা এবং মাইকোলাইভের কৃষ্ণ সাগর বন্দরগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। করিডোরটি ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার সাথে যুক্ত হবে, যেটি মোল্দোভার একটি বিচ্ছিন্ন সোভিয়েত-শৈলী অঞ্চল যা ইতিমধ্যেই রাশিয়ান ‘শান্তিরক্ষীদের’ আবাসস্থল।

এরই মধ্যে, ক্রেমলিন হেনিচেস্ক এবং অন্যান্য দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ একীভূত করছে। গত মাসে, হেনিচেস্কের মেয়র তুলুপভ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। নতুন মেয়র হয়েছেন গেনাডি সিভাক যিনি আট বছর ধরে সংযুক্ত ক্রিমিয়াতে বসবাস করেছিলেন। দখলকৃত শহর খেরসন-এ, মস্কো পুতিনের ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির একজন রাশিয়ান ডেপুটি ইগোর কাস্ত্যুকেভিচকে মেয়র হিসেবে নিযুক্ত করেছে।

ইউক্রেনের মুক্ত হওয়া শহরগুলো এখন তাদের পুরোনো পরিচয় মুছে সোভিযেত আমলের রাশিয়ার মতো সেজে উঠার চেষ্টা করছেন। নাগরিক ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। মেলিটোপোলে শিক্ষকদের রাশিয়ান ব্যবহার করতে এবং ক্রেমলিনের স্কুল পাঠ্যক্রম শেখাতে বলা হচ্ছে।

বেশিরভাগ দক্ষিণের বাসিন্দারা রাশিয়ার দখলের সমর্থন করেছে। স্থানীয় অনেকেই রুশ বাহিনীকে সহায়তা করছেন। মারিউপোলের নতুন ‘মেয়র’ রাশিয়ানপন্থী বিরোধী দল ব্লকের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তবে কিয়েভের সেনারা সেখানে গুপ্ত হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। বুধবার, ভ্যালেরি কুলেশভ, একজন রাশিয়ানপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগারকে খেরসনে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি সকালে তার অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক ছেড়ে তার ধূসর মাজদায় উঠেছিলেন। কে তার গাড়ির সামনে স্বয়ংক্রিয় গুলি চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। মাইকোলাইভের মেয়র ভ্যালেরি কিম বলেছিলেন যে, দেশপ্রেমিক নাগরিকদের এভাবে গুলি করে আটকানো অসম্ভব।

মনে হচ্ছে ক্রেমলিন শীঘ্রই দক্ষিণ ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে না। বার্দিয়ানস্কের ‘সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন’ দ্বারা ব্যবহৃত একটি নতুন স্ট্যাম্প বলছে যে বন্দরটি ‘রাশিয়ার’ অংশ। ইউক্রেনীয় মুদ্রা, রিভনিয়াকে রুবেল দিয়ে প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে – এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য স্থানীয়দের যোগদান করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ