Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শূন্যতা বাড়িয়ে নেতৃত্ব ছাড়লেন রুট

স্পোর্টস ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

একের পর এক ম্যাচ ও সিরিজ হার। জয় যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ইংল্যান্ড টেস্ট দলের টানা ব্যর্থতার দায়ভার স্বাভাবিকভাবেই এসেছে জো রুটের কাঁধে। তার অধিনায়কত্ব নিয়ে হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। দাবি উঠেছে, দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ারও। তবে রুট প্রত্যয়ী ছিলেন দলকে আরও কিছুদিন নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত সেটি সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, নিজেই সরে দাঁড়িয়েছেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন রুট, যা কার্যকর হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে। শেষ হয়েছে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তার পাঁচ বছরের পথচলা।
২০১৭ সালে অ্যালেস্টার কুকের জায়গায় ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব পান রুট। লাল বলের ক্রিকেটে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৬৪ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। ইংলিশ অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ২৭ জয়ের রেকর্ডও তার। এই তালিকায় পেছনে ফেলেছেন মাইকেল ভন (২৬ ম্যাচ) এবং কুক ও অ্যান্ড্র স্ট্রাউসকে (দুজনেই ২৪ ম্যাচ করে)। অধিনায়ক হিসেবে সাফল্য কম ধরা দেয়নি রুটের হাতে। তার নেতৃত্বে ২০১৮ সালে ঘরের মাঠে ভারতকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দেয় ইংল্যান্ড। ওই বছরই ২০০১ সালের পর ইংল্যান্ডের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সিরিজ জেতেন তিনি। দুই বছর পর আবারও লঙ্কানদের তাদেরই মাটিতে হারায় ইংলিশরা। ২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতে তার দল।
সাফল্য যেমন এসেছে, ব্যর্থতাও কম নেই রুটের। তার নেতৃত্বে সর্বোচ্চ ২৬ টেস্টে হেরেছে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি টেস্ট হারার দিকে তার ওপরে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ (২৯) ও নিউ জিল্যান্ডের স্টিভেন ফ্লেমিং (২৭)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান লারা হেরেছেন রুটের সমান ম্যাচ। রুটের অধিনায়কত্বে সবশেষ পাঁচ টেস্ট সিরিজই হেরেছে ইংল্যান্ড। সবশেষ ১৭ টেস্টের মধ্যে জিততে পেরেছে কেবল একটিতে। অ্যাশেজে ৪-০ তে হারার পর গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়েও তিন ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হেরে এসেছে তারা। দলের ব্যর্থতার দায়ে বারবারই কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে রুটকে। ইংল্যান্ডের সাবেক তিন অধিনায়ক মাইকেল আথারটন, নাসের হুসেইন ও মাইকেল ভন সরাসরিই বলেছিলেন, রুটকে সরিয়ে দেওয়ার কথা।
রুট অবশ্য প্রত্যাশী ছিলেন দলকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে। কিন্তু চারদিকের সমালোচনার জোয়ারে আর পারলেন না তিনি কাজ চালিয়ে যেতে। ইসিবির বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দায়িত্ব ছাড়ার এখনই সঠিক সময় মনে হয়েছে তার, ‘ক্যারিবিয়ান সফর থেকে ফিরে নেতৃত্বের পথচলা নিয়ে ভাবনার সময় পাওয়ার পর, আমি ইংল্যান্ডের পুরুষদের টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি আমার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু পরিবার এবং কাছের মানুষদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করার পর আমি বুঝতে পেরেছি এটাই সঠিক সময়। দেশের অধিনায়কত্ব করতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত এবং বিগত পাঁচ বছরের দিকে আমি গর্বের সঙ্গে ফিরে তাকাব। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের চূড়ার দায়িত্বটি পালন করা এবং এর রক্ষক হতে পারা অনেক সম্মানের।’ বয়স মাত্র ৩১, এখনই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেও খেলা ছেড়ে দেওয়ার তো কোনো কারণ ছিল না। রুট নিশ্চিত করলেন, তিনি খেলাটা চালিয়েই যাবেন, ‘চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে, দলের কাজে আসে এমনভাবে খেলে যাওয়ার ব্যাপারে রোমাঞ্চিত। পরের অধিনায়ক, আমার সতীর্থ ও কোচদের যেভাবে সম্ভব সাহায্য করতেও উন্মুখ হয়ে আছি’।
তবে রুটের পদত্যাগ এমন সময়ে এল, যখন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে পালাবদল চলছে। রুটের বিদায়ে ইংল্যান্ডের বোর্ড থেকে শুরু করে দলের নেতা পর্যন্ত কোনো পর্যায়েই নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ থাকলেন না। এই দলে এই মুহূর্তে কোনো মহাব্যবস্থাপক নেই, কোনো প্রধান কোচ নেই, কোনো নির্বাচক নেই, এখন টেস্ট অধিনায়কও নেই! শুধু ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক হিসেবে এউইন মরগানের জায়গাটা ঠিকঠাক আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ