রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মুহাম্মদ আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা (পরিপত্র) অমান্য করে জয়পুরহাট সরকারী কলেজের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তি, ফরম পূরণ, সেশন ফিসহ বিভিন্ন ফি আদায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে প্রায় ৮ কোটি টাকার অডিট আপত্তি দেখানো হয়েছে। জানা যায়, জয়পুরহাটসহ এ অঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জয়পুরহাট সরকারি (ডিগ্রী) কলেজে অতীতে গরিব মেধাবীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার সুযোগ পেলেও বর্তমানে এ কলেজে শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দারিদ্র্য-পীড়িত, নি¤œবিত্ত-অসহায় শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিধি বহির্ভূত বিভিন্ন খাতওয়ারী অতিরিক্ত ফি নির্ধারণের ফলে এ অঞ্চলের দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা লাভের একমাত্র অবলম্বন জয়পুরহাট সরকারি কলেজে পড়ালেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, এ কলেজে প্রতি বছর বিভিন্ন শ্রেণীর ও বর্ষের ১৬/১৭ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের নির্দেশনা মতে আন্তঃক্রীড়া ও বহিঃক্রীড়া খাতে ১শ টাকা নেয়ার কথা বলা থাকলেও খেলাধুলা নামে অন্য একটি খাতসহ মোট ৩টি খাতে নেয়া হচ্ছে ১৯০ টাকা করে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোন কম্পিউটার ল্যাব না থাকলেও কম্পিউটার ল্যাব খাতে নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা করে প্রায় ৫ লাখ টাকা। আইসিটি ফি বাবদ ২০ টাকা করে প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রায় ২ যুগ ধরে ম্যাগাজিন প্রকাশ না হলেও ম্যাগাজিন ফি বাবদ প্রতি বছরই নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা করে প্রায় ৫ লাখ টাকা। উন্নয়ন খাতে ২শ টাকা করে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা নেয়া হলেও কোন উন্নয়নের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং ওই খাতে কোন টাকা জমা নেই। মসজিদ-মন্দিরের জন্য ৫০ টাকা করে প্রায় ৮ লাখ টাকা নেয়া হলেও শুধুমাত্র ইমামের ভাতা প্রদান ও এককালীন এসি ক্রয় ছাড়া মসজিদেও কোন উন্নয়ন লক্ষ করা যায়নি। চিকিৎসা খাতে অডিট আপত্তি থাকলেও প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায় করা হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ বিশাল অংকের টাকা থেকে কোন সাধারণ শিক্ষার্থী চিকিৎসা সুবিধা পেয়েছে বলে জানা যায়নি। ব্যবস্থাপনা নামে ৫০ টাকার স্থলে একই নামে ২ খাতে নেওয়া হচ্ছে ১শ টাকা হারে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কলেজে বিজ্ঞান ক্লাবের কোন অস্তিত্ব না থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ২০ টাক হারে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। কলেজের ৪টি পরিবহনের মাধ্যমে মাত্র ৪/৫শ শিক্ষার্থী সুবিধা পেলেও প্রতি বছর ১৬/১৭ হাজার শিক্ষার্থীর নিকট হতে ৫শ টাকা হারে নেওয়া হচ্ছে ৮ কোটির ও অধিক টাকা। অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিকট হতে বেতন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ফি আদায়ের নিয়ম না থাকলেও তাদের নিকট হতে সকল ফি আদায় করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে খাতওয়ারী হিসাব করলে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের নিকট হতে প্রতি বছর প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অপরদিকে চলতি নিরীক্ষা বর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি নিরীক্ষা কমিটি বিভিন্ন খাতে অনিয়ম ও তহবিল তছরুপের কারণে ওই প্রতিষ্ঠানের ৭ কোটিরও বেশি টাকার অডিট আপত্তি দেখিয়েছে। এখন পর্যন্ত যার কোন সুরাহা হয়নি। এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোফাখখারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতই এখানেও একই ভাবে ফি নেওয়া হয়। এতে কোন অনিয়ম নেই। এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ডেপুটি ইন্সপেক্টর অব কলেজ নুরুজ্জামন জানান, বোর্ডের দেওয়া নির্দেশনার বাইরে কোন খাতেই অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবে না বা নতুন কোন খাত সৃষ্টি করা যাবে না। যদি শিক্ষার্থীদের কাছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোন টাকা আদায় করা হয় তবে অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাউশির সহকারী পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র বহির্ভূত কোন খাতে বা পরিপত্রের নির্দেশনার বাহিরে কোন ফি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন অবস্থাতেই আদায় করা যাবে না। যদি কেউ নেয় তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।