মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সারা বিশ্বেই বিরোধী মত দমনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে দেখা যায় পশ্চিমা মিডিয়াগুলোকে। গত বছর রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনির গ্রেফতারি নিয়েও অসংখ্য সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও বিবৃতি দিয়ে সে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিলেন। অথচ, একই ঘটনা যখন ইউক্রেনে ঘটছে তখন বিপরীত চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে।
মঙ্গলবার ইউক্রেনে রুশপন্থি রাজনীতিক ভিক্টর মেদভেদচুককে গ্রেফতার করেছে দেশটির নিরাপত্তা সেবা সংস্থা। রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন এবং ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। ইউক্রেনের নিরাপত্তা সেবা সংস্থা এসবিইউ একটি ছবি প্রকাশ করেছে যেখানে মেদভেদচুককে হাতকড়া পরা এবং ইউক্রেনীয় সামরিক পোশাকে অবসন্ন অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদ্রোহীতার সন্দেহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গৃহবন্দি ছিলেন ভিক্টর মেদভেদচুক। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পরপরই তিনি পালিয়ে যান। তবে কোনো ধরনের অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন ৬৭ বছর বয়সী মেদভেদচুক। মঙ্গলবার রাতে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ভিক্টর মেদভেদচুককে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বক্তৃতায় মেদভেদচুককে মুক্তি দেয়ার বিনিময়ে রাশিয়ার হাতে আটক ইউক্রেনীয় নারী ও পুরুষ বন্দিদের মুক্তির প্রস্তাব দেন তিনি।
বক্তৃতার আগে ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘বিশেষ অভিযানের’ মাধ্যমে ভিক্টর মেদভেদচুককে গ্রেফতার করেছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সেবা সংস্থা এসবিইউ। পরে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের এই সংস্থাটি জানায়, ‘আপনি একজন রাশিয়াপন্থি রাজনীতিবিদ হতে পারেন এবং বছরের পর বছর ধরে আগ্রাসী রাষ্ট্রের পক্ষে কাজও করতে পারেন। আপনি সাম্প্রতিককালে ন্যায়বিচার থেকে পালানোর চেষ্টা করতে পারেন এবং এমনকি ছদ্মবেশের জন্য ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর ইউনিফর্মও পরতে পারেন।’ বিবৃতিতে সংস্থাটি আরও জানায়, ‘কিন্তু (এসবের মাধ্যমে) আপনি কখনও শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পাবেন? কখনোই না! শেকল আপনার জন্য অপেক্ষা করছে এবং ইউক্রেনের বিশ্বাসঘাতকদের ব্যবস্থাও আপনার মতোই হবে।’
অর্থাৎ, শুধুমাত্র রাশিয়াকে সমর্থন করার ‘অপরাধেই’ মেদভেদচুককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আবার রীতিমতো গর্ব করে প্রকাশ্যে সেই কথা জানিয়েছেন। কিন্তু পশ্চিমা মিডিয়াগুলো এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার কোন সমালোচনা করা তো দূরে থাক, উল্টো জেলেনস্কিকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। এ ধরণের দ্বি-মুখী ভূমিকা পালন করতে তাদেরকে প্রায়শই দেখা যায়।
বছরের পর বছর ধরে ভিক্টর মেদভেদচুক ছিলেন ইউক্রেনের রাজনীতির কেন্দ্রে। কারণ ক্রেমলিনের সাথে যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল হিসেবে তাকে দেখা হতো। কিন্তু ২০২১ সালের মে মাসে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়। অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে তিনি বরাবরই ‘রাজনৈতিক দমনপীড়ন’ বলে আখ্যায়িত করে আসছেন। মঙ্গলবার রাশিয়া বলেছে যে, তারা ভিক্টর মেদভেদচুকের গ্রেপ্তারের তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘এখন ইউক্রেন থেকে এতো মিথ্যা তথ্য আসছে যে সবকিছুই যাচাই-বাছাই করা দরকার।’ সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।