Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাবা-মার চেয়ে সন্তানের বড় শুভাকাঙ্ক্ষী কেউ হতে পারে না: হাইকোর্ট

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১:৩৬ পিএম

বাংলাদেশে অবস্থানকারী ১৯ বছরের কানাডিয়ান তরুণী বাবা-মা ছেড়ে কানাডা যেতে চান, তাকে আটকে রাখা যাবে না। তবে তরুণীর নিরাপত্তা কানাডা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) এ বিষয়ে আইন ও শালিস কেন্দ্র ও ব্লাষ্টের পক্ষের করা এক আবেদনের শুনানি করে এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

কানাডিয়ান তরুণীর পাসপোর্টসহ কানাডিয়ান হাইকমিশনে ও তরুণীকে উপস্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন আইন ও শাসন কেন্দ্র এবং ব্লাষ্ট । ওই আবেদনের শুনানি করে আদালত এমন মন্তব্য করেন। এ আবেদনের শুনানি আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত মূলতবি করা হয়েছে।
আজ আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ১৯ বছরের তরুণীকে কানাডা হাইকমিশনে হস্তান্তরের লিখিত আবেদন জানান।
এ আবেদনের আইনজীবী ও কানাডিয়ান সরকারের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, ওই তরুণী কানাডা গিয়ে কোথায় থাকবেন, তার পড়ালেখার খরচ কে বহন করবেন সেটি কানাডা সরকারের সাথে কথা বলে আমাদের জানান।

এ সময় তরুণীর বাবা আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, মেয়ে কানাডা গেলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে আমার মেয়ের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মাননীয় বিচারপতিদের সঙ্গে ৫ মিনিট কথা বলতে চাই। তখন আদালত বলেন, আমরা আপনাদের কথা শুনব। মেয়ের কথা আগামীকাল আবারও শুনব। কানাডায় আপনার মেয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই আমরা আদেশ দেব। আমরা আগেই বলেছি, বাবা মায়ের থেকে সন্তানের বড় শুভাকাঙ্ক্ষী কেউ হতে পারে না।

পরে আদালত ১৯ বছরের তরুণীকে আবারও আগামীকাল হাজির করতে বলেন এবং পরবর্তি শুনানির জন্য মূলতবি করেন।

এর আগে গত ১১ এপ্রিল (রোববার) ওই তরুণীকে খাস কামরায় নিয়ে তরুণীর কথা শোনেন বেঞ্চের দুই বিচারপতি। ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার সারা হোসেন। অপরদিকে তরুণীর বাবা-মায়ের পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ওজিউল্লাহ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৫ এপ্রিল বাবা-মাসহ ওই তরুণীকে আদালতে হাজির করতে বলা হয়। পাশাপাশি ওই তরুণীর অসম্মতিতে তাকে ১০ মাস ধরে আটক রাখা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

১৯ বছরের ওই তরুণীর জন্ম কানাডায়। তিনি জন্মসূত্রে কানাডার নাগরিক। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। তার বাবা-মাও কানাডায় থাকতেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।

এ ঘটনায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে কানাডিয়ান হাইকমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র নামের দুটি মানবাধিকার সংগঠন হাইকোর্টে রিট করে। এতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, মুগদা থানার ওসি, ওই তরুণীর বাবা-মাকে বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে তার নানি ও মা সবসময় তাকে বাসায় বন্দী করে রাখেন। একপর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ডফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশনকে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দি করে রাখার কথা জানান। সেই সঙ্গে ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ