পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য সিয়াম বিধিবদ্ধ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর বিধিবদ্ধ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার’। অর্থাৎ তাকওয়াশীল জাতি গঠনের লক্ষ্যেই আল্লাহ তা‘আলা সিয়াম তথা রোজা ফরজ করেছেন।
আমাদের সমাজে প্রচলিত ধারণা আছে যে, বাহ্যিক বেশভুষা হলো তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতির পরিচায়ক। আসলে ইসলামের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে ঘুনেধরা এ সমাজের মধ্যে এ ধারণা জন্ম নিয়েছে। মুর্খতার কারণে লম্বা দাড়ি, মাথার পাগড়ী, হাতে তসবীহ, গায়ে লম্বা জামা পরা ব্যক্তিকেই মানুষ মুত্তাকী বা তাকওয়াবান বলে মনে করে। এরকম ব্যক্তিত্ব তাকওয়াশীল হতেই পারেন, তবে তা তার বাহ্যিক বেশভুষার কারণে নয়, বরং আল্লাহর প্রতি অধিক আনুগত্যশীল হওয়ার কারণে।
প্রকৃত তাকওয়া হলো মনের মধ্যে আল্লাহর ভয়। কারণ তাকওয়া থাকলে সে হয় প্রকৃত মুসলমান। আল্লাহর হাবীব আমাদের প্রিয়নবী তাকওয়া সম্পর্কে বলেছেন,
‘বর্ণনাকারী আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর যুলুম করবে না, সে তাকে অসহায় অবস্থায় পরিত্যাগও করবে না এবং তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে না। তিনি নিজের বুকের দিকে ইশারা করে বলেন, তাকওয়া এখানে, তাকওয়া এখানে, তাকওয়া এখানে। কোনো লোকের নিকৃষ্ট হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, যে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ জ্ঞান করে। প্রতিটি মুসলমানের জীবন ধন-সম্পদ ও মান-সম্মান সকল মুসলমানের সম্মানের বস্তু, এর ওপর হস্তক্ষেপ করা তাদের জন্য হারাম। (সহীস মুসলিম হা : ২৫৬৪)
বর্ণনাকারী আতিয়া আস সা’দী বলেন, রসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, একজন বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত মুত্তাকী হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছায় না যতক্ষণ না সে তার ভুলের কারণে সতর্কতার সাথে যা ভুল নয় তা পরিত্যাগ করে। (তিরমিযী ও ইবনে মাযাহ হা : ২৪৫১)
আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (স.) বলেলেন, হে আয়েশা! ছোট-খাটো গুনাহের ব্যাপারেও সতর্ক হও। কেননা এ ব্যাপারেও (এ জন্যেও) আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। (ইবনে মাযাহ হা: ৪২৪৩)
বর্ণনাকারী ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আল্লাহর নির্ধারিত রিযিক পূর্ণমাত্রায় লাভ না করা পর্যন্ত কোন লোকেই মারা যাবে না। সাবধান! আল্লাহকে ভয় কর এবং বৈধ পন্থায় আয়-উপার্জনের চেষ্টা কর। রিযিক প্রাপ্তিতে বিলম্ব যেন তোমাদেরকে অবৈধ পন্থা অবলম্বনে প্ররোচিত না করে। কেননা আল্লাহর কাছে যা কিছু রয়েছে তা কেবল আনুগত্যের মাধ্যমে লাভ করা যায়। (ইবনে মাজাহ)
বর্ণনাকারী হাসান বিন আলী (রা.) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সা)-এর জবান মুবারক হতে একথা মুখস্থ করে নিয়েছি, যে জিনিস সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেয় তা পরিত্যাগ করে যা সন্দেহের ঊর্দ্ধে তা গ্রহণ কর। কেননা সততাই শান্তির বাহন এবং মিথ্যাচার সন্দেহ সংশয়ের উৎস। (তিরমিযী)
উপরোক্ত হাদীসসমূহে নবী করীম (স.) প্রকৃত মুসলমানের পরিচয় তুলে ধরার সাথে সাথে প্রকৃত তাকওয়াও জানিয়ে দিলেন। অন্তরে তাকওয়া থাকলে বাহ্যিকভাবেও তাকওয়ার প্রভাব ফুটে উঠে। নবী করীম বলেন,
বর্ণনাকারী আসমা বিনতে ইয়াযিদ (রা.) বলেন, তিনি রসূল (স.)-কে বলতে শুনেছেন, আমি কি তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম লোকদের সম্পর্কে বলবো? লোকেরা বললো, জি হ্যাঁ বলুন হে আল্লাহর নবী! তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে তারাই ভালো মানুষ যাদের দেখলে আল্লাহর কথঅ স্মরণ হয়। অর্থাৎ, অন্তরে তাকওয়ার কারণে বাহ্যিক দিকে তাকওয়ার প্রভাব ফুটে উঠে। (ইবনে মাজাহ) (চলবে....)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।