Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

টাকা-স্বর্ণালংকার লুটের জন্য ফুপাকে খুন, খুন করা হলো বিশ্বাসকেও

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২২, ৪:৪৬ পিএম

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় ব্যবসায়ী মো. শামসুদ্দিন আহমেদ (৭৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিবি জানায়, নেশার টাকা জোগাড় করতে ও পাওনাদারদের দেনা পরিশোধের জন্য আপন ফুপা শামসুদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করেন তানভীর আহম্মেদ ও তার দুই সহযোগী। হত্যার পর স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

ডিবি বলছে, রাজধানীতে প্রতিনিয়ত অপরাধের ধরণ পরিবর্তন হচ্ছে। নিকট আত্মীয়রা বাসায় প্রায়ই আসে। ঢাকায় অনেক বাসায় একজনের পরিচয়ে আরও কয়েকজন বাসায় আসে। আত্মীয়ের সঙ্গে অপরিচিত কেউ বাসায় এলে সবাই সাবধানে থাকবেন। প্রতিটি পরিবারের সচেতন থাকা উচিত। নিজের সন্তান কি করছে সবাইকে খোঁজ নেওয়া উচিত। গত ১৫ মার্চ দুপুরে রাজধানী উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে তারই নিহতের ভাতিজা তানভীরসহ তিনজন। রক্তাক্ত অবস্থায় শামসুদ্দিনকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ।

তারা হলেন- মো. মুসলিম (২০), ও মো. আবু সাফি (২৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি শাটার গান, ৪ রাউন্ড গুলি, লুন্ঠিত অলংকার ও নগদ ৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ শামসুদ্দিনের ছিল পাঁচজনের সংসার। তানভীর ছিলেন শামসুদ্দিনের স্ত্রী মিসেস রাশিদা বেগমের ভাতিজা। গত ১৫ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাশিদার ভাতিজা তানভীরসহ অপরিচিত আরও দুজন আসেন তাদের বাসায়। ঘরের কাজ শেষে নাতনিকে স্কুল থেকে বাসায় আনার জন্য বাইরে যান রাশিদা বেগম। এ সময় বাসায় একা ছিলেন শামসুদ্দিন। এরপর স্কুল থেকে নাতনিকে নিয়ে বাসায় এসে দেখেন রাশিদার স্বামী নিহত শামসুদ্দিন খাটের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং হত্যার পর তারা পালিয়ে যায়। ডিবি প্রধান বলেন, কেন নিজের ফুপাকে গলা কেটে হত্যা করল তানভীর, মামলার পর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রথমে মুসলিম নামের একজনকে গ্রেপ্তারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সাফি নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে অস্ত্র, গুলি, কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, তানভীর ছিলেন নেশা ও ঋণগ্রস্ত। গ্রেপ্তার দুজন ও ভারতে পলাতক তানভীর মিলে একটি টিম গঠন করে। তারা এমন আরও কত ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা এখনো ডিটেক্ট করতে পারিনি। পলাতক তানভীরের ধারণা ছিল তার ফুপুর বাসায় গেলে কয়েক লাখ নগদ টাকা পাওয়া যাবে। এই টাকা দিয়ে সে ঋণ থেকে মুক্ত হবে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই নেশাগ্রস্ত হওয়ায় নেশার টাকাও জোগাড়ের একটা ব্যবস্থা হবে বলে মনে করে।

নিহতের ছেলে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, তানভীরের পরিবারকে আমার মা প্রচুর হেল্প করেছে। এখনো অনেক সাপোর্ট করে। আমি যে কারখানায় চাকরি করতাম, সেখানে সেও এক থেকে দেড় বছর চাকরি করত। যারা ঘটনার দিন তানভীরের সঙ্গে বাসায় গিয়েছিল তারা কি এর আগেও গিয়েছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামাতো ভাই তার দুই বন্ধুকে বাসায় নিয়ে এসেছে, বাসার সবাই বিষয়টা খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েছিল। এখানে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না।

ওরা মনে করেছিল, আমাদের বাসায় অনেক স্বর্ণালংকার পাওয়া যাবে। কিন্তু আমার বাসায় কোনো সোনার গহনা ছিল না। আত্মীয়তার সম্পর্কে এটা শুধু একটা খুন নয়, বিশ্বাসকে খুন করা হয়েছে। পলাতক তানভীরকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, আমার মামাতো ভাই যে গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করত সেখানেও সে বিভিন্ন পণ্য চুরি করত। এই চুরির দায়ে তার চাকরি চলে যায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ