পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নির্বাচনের আগে বিরোধীদলের নেতাদের অতিদ্রুত সাজা দিতে সরকার সেল গঠন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে মুগদা থানার একটি মিথ্যা গায়েবী মামলায় এখন হয়রানি করা হচ্ছে। ওই বিস্ফোরক মামলায় ৩৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিলো। এখানে ৩২ জন খালাস পেয়েছেন আর ৭ জনকে দুই বছর তিন মাস/দুই বছর এক মাস এভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। এটা এখন সারা দেশেই চলছে। তালিকা তৈরি করেছে সরকার। সেই তালিকা ধরে বিভিন্ন জেলায় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে এই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার জন্য একটা সেল তৈরি করে দেয়া হয়েছে, এই সেল তৈরি করে দিয়ে অতিদ্রুত মামলাগুলো শেষ করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলোতে কি আছে? একটা হচ্ছে আমি সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি পোঁড়াচ্ছি। আরেকটা সেক্রেটারিয়েটের ভেতরে মোটর সাইকেলের পেছনে গিয়ে বোমা মেরেছি। এই ছল-চাতুরি প্রতারণা করে গোটা জাতিকে একটা ভয়াবহ অন্ধকারের গহবরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা রাজনৈতিক কর্মীরা তো কেউ চোর না, ডাকাত না, এরা কেউ ক্রাইম করে না। এরা সবাই রাজনৈতিক কর্মী, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে। তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এভাবে একেবারে নির্মূল করার দেয়ার ভয়াবহ যে প্রচেষ্টা এটা ফ্যাসিবাদ ছাড়া কোথাও হতে পারে না।
তিনি বলেন, যখনই বিরোধী দল কর্মসূচি নিয়ে মাঠে এসেছে তাদেরকে একইভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, মামলা দেয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে দেখেছেন বাম জোটের কর্মসূচিতে একইভাবে মামলা দিয়েছে, গ্রেফতার করেছে, মারপিট করেছে। ইশরাক দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে মতিঝিলে লিফলেট বিতরণ করছিলেন। সেই সময়ে তাকে বিনা উস্কানিতে গ্রেফতার করা হয়, সেখানে অনেককে মারধর, লাঠিচার্জ করা হয়। পরবর্তিতে তাকে যখন আদালতে নিয়ে আসা হয় সেখানেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ, টিয়ারগ্যাস সেল নিক্ষেপ, নির্যাতন করা হয়। সেখানে ২০/৩০ জন হতে পারে। এখন তারা (পুলিশ) মামলা দিয়েছে ৮৮ জনের বিরুদ্ধে। একজন হজ্বে আছেন চকবাজার থানার সেক্রেটারি (আনোয়ার পারভেজ বাদল), একজন আইনজীবী আছেন।
নতুন ইসি নাটক করেই যাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সিভিল সোসাইটিকে ডাকছে, সাংবাদিকদের ডাকছে। তাদেরকে ডেকে খুব সুন্দর কথা বলছেন। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার যিনি উনি সুন্দর বাংলা বলেন। কথা বলার ভঙ্গিও সুন্দর। আগের ভদ্রলোক তো ছিলেন যে কথাই ভিন্নভাবে বলতেন। এখনকার জন চমৎকার কথা বলেন এবং বলে মানুষকে বিমোহিত করার চেষ্টাও তিনি করেন। এই নাটকগুলো করে তারা আবার আরেক নির্বাচন করার পায়তারা করছে। যে নির্বাচন তারা আগের মতোই জোর করে এবং বিভিন্ন কৌশলে। এবার হয়ত আগের মতো নির্বাচন হবে না। কোন ধরনের নির্বাচন হবে? আগে তো আগের রাত্রে নির্বাচন হয়ে গেছে। এখন কী ৭ দিন আগে নির্বাচন হয়ে যাবে কিনা কেনো জানিনা। ইট ইজ গোয়িং টু হেপেন।
পুলিশের কর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে যেরকম আচরণ করে তা দুঃখজনক উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারি তারা যে ভাষায় কথা বলেন, এই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা। তাদেরকে দেখে মনে হয় না আমরা কোনো সভ্য সমাজে বাস করছি। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার, এসকে সেকান্দার, হারুনুর রশীদ, মুনির হোসেন চেয়ারম্যানম, আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান ফয়েজ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গতকাল রাজধানীর পূর্বানী হোটেলে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ।দেশ বাঁচাতে সরকার হটানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পবিত্র রমজানে সংযমের মাধ্যমে আমরা পরিশুদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু দেশে কষ্টকর অবস্থা চলছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মানুষের দুর্বিষহ জীবন। গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির দাম বেড়েছে। তিনমাসে একাধিকবার দাম বাড়ানো হয়েছে। এককথায় দেশে পরিচালনায় সরকার ব্যর্থ। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রসেনানী ও গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের সাথে ইফতারে থাকতেন। আজকে তাকে ছাড়াই আমরা ইফতার করছি!
সভাপতির বক্তব্যে এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, সরকার দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দেশে সঙ্কট তৈরি করেছে। এই আওয়ামী লীগ সরকার আরো ক্ষমতায় থাকলে দেশে সংকট আরো বাড়বে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই সরকারকে হটাতে হবে।
এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শামা ওবায়েদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, নিলোফার চৌধুরী মনি, আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ছাত্রদলের আমিনুর রহমান আমিন। ২০ দলীয় জোট ও অন্যান্য দলের মধ্যে জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের অধ্যাপক আবদুল করিম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, রামকৃষ্ণ সাহা, এনডিপির ক্বারী আবু তাহের, জাতীয় দলের এহসানুল হুদা, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির মাহমুদ খান, বিএমএল’র শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।