Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দু’দশক পর কেম্ব্রিজে ফিরল চুরি যাওয়া ডারউইনের নোটবই

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:৪৫ পিএম

প্রায় দু’শো বছর আগে বিবর্তনবাদের প্রবক্তা কিংবদন্তি বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বলে যাওয়া সেই তথ্যের হারিয়ে যাওয়া নথি দুই দশক পরে ফিরে এল স্বস্থানে।‘হারিয়ে যাওয়া ডারউইন’-কে ২১ বছর পর অবিকৃত ভাবে তার নিজস্ব ঠাঁই কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরাতে গিয়ে গ্রন্থাগারিককে ইস্টারের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন কেউ, যার পরিচয় এখনও রহস্যাবৃত।

টানা ২১ বছর ধরে নিখোঁজ থাকার পর কলম দিয়ে লেখা ও আঁকায় পূর্ণ ডারউইনের দু’টি নোটবুক, কিছু লেখা ফিরে এল কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে। রহস্যজনক ভাবে। কে ফিরিয়ে দিলেন, কোন পথ ধরে এসে ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন সভ্যতার প্রায় দু’শো বছরের প্রাচীন সেই সম্পদ, জানা যায়নি এখনও পর্যন্ত। তবে যিনিই ফেরত দিয়ে যান, ২১ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ডারউইনের সেই নোটবুক আর লেখাগুলি ফিরিয়ে দিয়ে যেন তিনি ফের প্রমাণ করে দিলেন, যোগ্যতমই টিঁকে থাকার এই নথি যোগ্যতমের মতোই হারিয়ে যায় না। যেতে পারে না।

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ‘যেমন ছিল তেমন’ অবস্থায় ডারউইনের সেই সব লেখালেখি গ্রন্থাগার ভবনের বাগানে একটি গোলাপি রঙের প্যাকেটে ভরে কেউ রেখে গিয়েছেন। যিনি সভ্যতার সেই সম্পদকে আড়াল থেকে ফিরিয়ে দিয়ে গিয়েছেন, তিনি কিন্তু প্রমাণ দিয়েছেন তার রসিকতাবোধেরও। ফেরত দিতে গিয়ে তিনি সঙ্গে রেখে গিয়েছেন বাদামি রঙা একটি খাম। যার উপরে লেখা ছিল, ‘লাইব্রেরিয়ান/হ্যাপি ইস্টার/এক্স’। কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, যেখানে সেগুলি রাখা ছিল তার আশপাশে কোনও সিসিটিভি লাগানো নেই। তাই জানা সম্ভব হয়নি, কে সেগুলি রেখে গিয়েছেন।

পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণ এক থেকে কী ভাবে বহু হয়েছে, কী ভাবে ধাপে ধাপে শাখা, প্রশাখায় পল্লবিত হয়েছে তা বোঝাতে ১৮৩৭ সালে ডারউইন একটি স্কেচ এঁকেছিলেন। যা ‘ট্রি অব লাইফ’ (প্রাণের বৃক্ষ) নামে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে। ২১ বছর আগে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ভবন থেকে সেটিও নিখোঁজ হয়েছিল। সেটিও ফিরে এসেছে। হারিয়ে যাওয়া ডারউইনের নোটবুক আর লেখাগুলি কেউ রেখে গিয়েছেন ১৮ তলা উঁচু গ্রন্থাগার ভবনের পাঁচ তলায় গ্রন্থাগারিকের কার্যালয়ের অদূরে। প্রয়োজন হয় না বলে যেখানে কোনও সিসিটিভি বসাননি গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, ২১ বছর আগে এখানেই ছিল ‘ডারউইন-নথি’।

২০০১ সালেই গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ প্রথম জানতে পারেন, ডারউইনের ওই নোটবুকগুলি খোওয়া গিয়েছে। তখন ভাবা হয়েছিল, গ্রন্থাগারের ১০ লক্ষেরও বেশি বইয়ের তাকের কোথাও না কোথাও হয়তো সেগুলি রয়েছে। ভাল ভাবে খুঁজে দেখলে পাওয়া যাবে। কিন্তু পাওয়া যায়নি। তার পর ২০১৭ সালে গ্রন্থাগার ভবনের দায়িত্ব পান জেসিকা গার্ডনার। তিনিই প্রথম পুলিশকে লি‌খিত ভাবে জানান, ওই সব মূল্যবান সম্পদ গ্রন্থাগার থেকে চুরি হয়ে গিয়েছে। তা যাতে বহু হাত ঘুরে বিদেশের বাজারে কোনও ভাবে বিক্রি না হয়ে যায়, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয় ইন্টারপোল-কেও। শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালে কেম্ব্রিজের কনস্ট্যাবুলারিতে ঘোষণা করা হয়, ওই সম্পদগুলি আর গ্রন্থাগারে নেই। সেগুলি চুরি হয়ে গিয়েছে।

এর দেড় বছরের মাথায় সেগুলির প্রত্যাবর্তন ঘটল রহস্যজনক ভাবে। গ্রন্থাগারিক গার্ডনার জানিয়েছেন, গ্রন্থাগারে দুই প্রবাদপ্রতিম বিজ্ঞানী স্যর আইজাক নিউটন ও স্টিফেন হকিংয়ের যাবতীয় লেখালেখি ও বইগুলি যেখানে রাখা আছে, তারই পাশে রয়েছে ডারউইন আর্কাইভ। সেখানেই আবার রেখে দেওয়া হবে হারিয়ে গিয়ে ফিরে আসা ডারউইনের দু’টি নোটবই আর কিছু লেখা ও স্কেচকে। যা জুলাইয়ে ফের হাজির করা হবে গ্রন্থাগারে আসা মানুষের সামনে। সূত্র: ডেইলি মেইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ