Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগের মত চোখে পড়ে না লাঙলের সাথে কৃষকের মিতালী

প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা

বিজ্ঞানের ক্রমশ অগ্রযাত্রার কারণে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে হারিয়ে যেতে বসেছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঙল ও হালের বলদ দ্বারা জমি চাষ। কৃষিপ্রধান আমাদের দেশে এক সময় ক্ষেতে-খামারে কৃষকের লাঙল আর মই দিয়ে চাষাবাদের দৃশ্য সবার নজর কাড়তো। হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদে বহুল ব্যবহৃত বাঁশ, কাঠের হাতল ও লোহার ফাল বিশিষ্ট কাঠের লাঙল আজ বিলুপ্তির পথে। লাঙলের সাথে কৃষকের এই গভীর মিতালী কৃষিপ্রধান বাংলায় এখন বিরল দৃশ্য।  একসময় যে লাঙল ও হালের বলদ ছাড়া চাষ চিন্তাই করা যেত না, কালের বিবর্তনে তা এখন স্থান পাচ্ছে জাদুঘরে। তার পরিবর্তে এখন হাল চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার। পাখি ডাকা কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে হালের বলদ ও কাঁধে মাটি কর্ষণকারী লাঙল নিয়ে মাঠ পানে ধারমান কৃষাণের দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। শুধুমাত্র লাঙল-বদল আর মই-জোয়ালের ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে কৃষককূল এখন দ্রুত সময় ও কম কষ্টে চাষ করার জন্য নির্ভর করছে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ওপর। কাজিপুর উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নেই গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা এখন জমি চাষে দ্রুত চাষযোগ্য ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ট্রাক্টর-পাওয়ার টিলার ব্যবহারের কারণে তাদের পরিশ্রম ও খরচ কমে গেলেও ফসলের গুণগত মান বাড়েনি বরং আগের তুলনায় জমিতে উৎপাদিত ফসলের স্বাদ অনেক কমে গেছে। তবে এ নিয়ে কৃষকদের কোন আক্ষেপ নেই। কাজিপুর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও স্থলবাড়ী গ্রামের আব্দুস ছাত্তার, মসলিমপাড়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক আসগর আলী জানান, লাঙলের ব্যবহারে চাষাবাদে জমির সর্বোচ্চ উর্বরতা শক্তি ব্যবহৃত হত। ট্রাক্টর কিংবা পাওয়ার টিলার দ্বারা জমি চাষ দিলে জমি তুলনামূলক কম উর্বরতা শক্তি পায়। ফলে জমিতে অধিক রাসায়নিক সারের প্রয়োজন পড়ে। এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কল্যাণ প্রসাদ পাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, কম সময়ে জমিতে আবাদ ও অধিকতর ফসল উৎপাদনের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। তবে কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান উন্নতির ধারাবাহিকতার আশা করি বেশি পরিমাণ ও অধিকতর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন শস্য উৎপাদন সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আগের মত চোখে পড়ে না লাঙলের সাথে কৃষকের মিতালী
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ