Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীলঙ্কায় সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব সাবেক শিল্পমন্ত্রী উইমাল উইরাওয়ানসার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০২২, ৯:৩৩ পিএম

সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে সর্বদলীয় অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায়। দেশটির সাবেক শিল্পমন্ত্রী উইমাল উইরাওয়ানসা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে এ প্রস্তাব দিয়েছেন। রবিবার রাজধানী কলম্বোয় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন উইরাওয়ানসা নিজেই। -সিলন টুডে

তিনি বলেন, পার্লামেন্টের ১১টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার সদ্য বিলুপ্ত মন্ত্রিসভার জ্বালানিমন্ত্রী উদয় গাম্মানপিলা, পানিসম্পদ ও সরবরাহমন্ত্রী বাসুদেব নানাইয়াক্কারা এবং এমপি তিরান অ্যালেসও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন উইরাওয়ানসা। নিজের এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে সদ্য মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করা উইরাওয়ানসা বলেন, ‘জনগণ বর্তমান মন্ত্রিসভার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে; কিন্তু বর্তমানে দেশ এত বেশি সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো সমাধানের জন্য আরএকটি নির্বাচন আসার আগ পর্যন্ত হাত গুটিয়ে বসে থাকা সম্ভব নয় আমাদের জন্য। এ ধরনের পরিস্থিতিকে কী করতে হবে— তার নির্দেশনা আমাদের সংবিধানে দেওয়া আছে; আর সেই নির্দেশনা হলো— সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠন করা, যেটির মূল দায়িত্ব হবে নির্বাচনের আয়োজন করা।

‘প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বলেছি, প্রস্তাবিত নতুন মন্ত্রীসভার মূল দায়িত্ব হবে— দেশের বিদ্যমান সমস্যা-সংকটসমূহের সমাধান করা এবং তারপর যথাসময়ে নির্বাচনের আয়োজন করা। অবশ্য তার এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট কী বলেছেন, সে সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে কিছু বলেননি উইমাল উইরাওয়ানসা। ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় বাইরের দেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কার সরকার। ফলে, ভয়াবহভাবে ব্যহত হচ্ছে দেশটির বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং গত বেশ কিছুদিন ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ এলাকা ১৩ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে দেশটির বেশ কিছু হাসপাতাল সার্জারি বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি সড়বাতিগুলোও জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংকটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্রব্যমূল্যোরর উর্ধ্বগতি। শ্রীলঙ্কার পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে দেশটিতে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক শ মানুষ। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চলমান পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে শনিবার থেকে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার। এর মধ্যেই রবিবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ব্যতীত শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্যের সবাই একযোগে পদত্যাগ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ